এক সপ্তাহে সাত ভূমিকম্প, চারটির উৎপত্তি নরসিংদীতে
Published: 27th, November 2025 GMT
দেশে গত এক সপ্তাহে সাতবার ভূমিকম্প হয়েছে। এর মধ্যে চারটির উৎপত্তি নরসিংদীতে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে সর্বশেষ ভূকম্পন অনুভূত হয়। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি।
আরো পড়ুন:
ইন্দোনেশিয়ায় ৬.৬ মাত্রার ভূমিকম্প
ভূমিকম্পে সচিবালয়ের নতুন ভবনে ফাটল
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে আজকের ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৬। এর উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর ঘোড়াশালে। উৎপত্তিস্থলের গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে ও ঢাকা থেকে ২৩ কিলোমিটার দূরে।
রফিকুল ইসলাম নামের নরসিংদীর স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “বিকেলে দোকানে বসে ছিলাম। হঠাৎ সবকিছু কেঁপে উঠে। দ্রুত দোকান থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাঁড়াই।”
গৃহিণী সুমী আক্তার বলেন, “ঘরটা কেঁপে উঠতেই বাচ্চাদের নিয়ে বাইরে ছুটে যাই। মনে হচ্ছিল, আরেকটু হলে সব ভেঙে পড়বে।”
কলেজশিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ বলেন, “এক সপ্তাহে দেশে সাতবার ভূমিকম্প হয়েছে। এর মধ্যে, চারটির উৎপত্তি নরসিংদীতে। আমরা শঙ্কায় আছি।”
গত ২২ ও ২৩ নভেম্বর দুইদিনের ব্যবধানে ঢাকা ও এর আশপাশ এলাকায় চারবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে তিনটির উৎপত্তিস্থলই ছিল নরসিংদী এবং একটির ঢাকা।
বৃহস্পতিবার ভোরে সিলেটে এবং কক্সবাজারের টেকনাফে দুই দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়। সর্বশেষ বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ৩ দশমিক ৬ মাত্রার ভূকম্পন অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর ঘোড়াশালে।
ঢাকা/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ ম কম প র ভ ম কম প র উৎপত ত উৎপত ত স
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদের উৎপত্তি নিয়ে নতুন তত্ত্ব কতটা বিশ্বাসযোগ্য
জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর সোলার সিস্টেম রিসার্চের বিজ্ঞানীরা চাঁদের উৎপত্তি নিয়ে চাঞ্চল্যকর নতুন তত্ত্ব প্রস্তাব করেছেন। তাঁদের মতে, প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে থেইয়া নামের মঙ্গল গ্রহ আকৃতির একটি গ্রহাণুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষের পর চাঁদের জন্ম হয়েছে। সেই সংঘর্ষে থেইয়া সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। বর্তমানে কেবল পৃথিবীর ভূত্বক ও চাঁদের মধ্যে খনিজের চিহ্ন হিসেবেই থেইয়ার প্রমাণ দেখা যায়।
পৃথিবী ও চাঁদের খনিজের অনুপাত সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা করে থেইয়ার রহস্যময় উৎস উন্মোচনের দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী টিমো হপ জানান, গ্রহ গঠনের জন্য সংঘর্ষ হওয়া শত শত গ্রহাণুর ভ্রূণগুলোর মধ্যে থেইয়া সম্ভবত অন্যতম ছিল। থেইয়া একসময় অভ্যন্তরীণ সৌরজগতের মধ্যে একটি স্থিতিশীল কক্ষপথে ছিল। সৌরজগতের বিকাশের প্রথম ১০ কোটি বছর ধরে পৃথিবীর একটি লুকানো প্রতিবেশী ছিল, যা এখন সম্পূর্ণভাবে বিলীন হয়ে গেছে। যখন থেইয়ার সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ হয়, তখন সেই আঘাতে টিকে থাকা সব উপাদান হয় পৃথিবীর মধ্যে মিশে গেছে বা চাঁদের মধ্যে ঢুকে পড়েছে।
বিজ্ঞানীদের মতে, সৌরজগৎ যখন গঠিত হয়, তখন বিভিন্ন উপাদানের আইসোটোপ সমানভাবে ছড়িয়ে পড়েনি। তখন থেইয়া গ্রহাণু পৃথিবীকে আঘাত করেছিল। সংঘর্ষের সময় থেইয়া ও আদি-পৃথিবী একসঙ্গে মিশে গিয়ে আমাদের গ্রহ ও চাঁদের জন্ম হয়। এই তথ্য সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা পৃথিবী থেকে পাওয়া শিলা ও অ্যাপোলো মিশনের মাধ্যমে চাঁদ থেকে আনা শিলাসহ বেশ কয়েকটি গ্রহাণু থেকে লোহার আইসোটোপ পরিমাপ করেছেন। দেখা গেছে, চাঁদ ও পৃথিবীর লোহার আইসোটোপের অনুপাত একই রকম আছে। থেইয়া ও আদি-পৃথিবী এত ভালোভাবে একসঙ্গে মিশে গিয়েছিল, তাদের আর আলাদা করা সম্ভব না। তবে থেইয়ার ঠিক কতটা অংশ চাঁদে ও কতটা অংশ পৃথিবীতে মিশেছিল, তা বের করা অসম্ভব। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী হপ বলেন, আইসোটোপিক গঠনের এই সাদৃশ্য থেইয়ার প্রাথমিক গঠন সরাসরি পরিমাপ করাও অসম্ভব করে তুলছে।
যদি থেইয়া সৌরজগতের শীতল বাইরের প্রান্তে গঠিত উল্কাপিণ্ডের মতো হতো, তবে আদি-পৃথিবী সম্পূর্ণ ভিন্ন আইসোটোপের মিশ্রণ ধারণ করত। থেইয়া ও আদি-পৃথিবী উভয়ই সম্ভবত সৌরজগতের অভ্যন্তরীণ অঞ্চল থেকে আসা শিলাময় অ-কার্বনেশিয়াস উল্কাপিণ্ড দিয়ে তৈরি হতে পারে। ধারণা করা হয়, থেইয়া প্রায় ১০ কোটি বছর ধরে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করেছিল। এরপরে বৃহস্পতির মহাকর্ষীয় আকর্ষণ কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত করে পৃথিবীর দিকে ঠেলে দেয়। এটি সূর্যের চারপাশে একটি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল কক্ষপথে ছিল।
সূত্র: ডেইলি মেইল