শ্রীপুরে কথা–কাটাকাটির জেরে ৫ সহপাঠীকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ, কিশোর পলাতক
Published: 27th, November 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কথা-কাটাকাটির জেরে একটি মাদ্রাসার পাঁচ শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে আহত করার অভিযোগ উঠেছে আরেক কিশোর শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে উপজেলার গাড়ারণ গ্রামের গাড়ারণ খলিলিয়া বহুমুখী ফাজিল মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন মো. রিফাত, নাদিম মাহমুদ, মুহিন মিয়া, রিফাত আহমেদ ও মো.
মাদ্রাসাটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম বলেন, ছুরিকাঘাতে আহত পাঁচজনের মধ্যে তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য দুজনকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীদের একজন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ওই মাদ্রাসায় পরীক্ষা চলার সময় অভিযুক্ত কিশোর বেঞ্চে বসে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছিল। এ সময় সহপাঠীদের দু-একজন তাঁকে সেখান থেকে সরে যেতে বলেন। এ নিয়ে তাঁদের সঙ্গে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষকে মিলিয়ে দেওয়া হয়। এরপর আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা হল থেকে বের হচ্ছিল। ওই সময় অভিযুক্ত কিশোর ছুরি নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালায়। এতে ওই পাঁচ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়।
আরেক শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাদ্রাসার রান্নাঘরের পাশে শিক্ষার্থীদের ওপর ছুরি নিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে ওই কিশোর। এ সময় রাস্তার ওপর একটি অটোরিকশা দাঁড়িয়ে ছিল। হামলার পর খুব দ্রুত সেটিতে ওঠে সে পালিয়ে গেছে।
খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা-পুলিশ সেখানে এসেছিলেন বলে জানান মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, ঘটনা ঘটিয়ে ওই শিক্ষার্থী পালিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আবদুল বারিক।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় বিএনপির প্রার্থী সানজিদা ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা
চার বিয়ে নিয়ে একটি মন্তব্যের জন্য ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে ঢাকা-১৪ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সানজিদা ইসলামের (তুলি) বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। হোসাইন মোহাম্মদ আনোয়ার নামের এক ব্যবসায়ী আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমানের আদালতে এই মামলা করেন।
বাদীর আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ধর্ম অবমাননার ঘটনায় আমরা আদালতে মামলা করেছি। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।’
অভিযোগে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪১ অনুযায়ী ধর্মচর্চার অধিকার হলো মানুষের মৌলিক অধিকার। ‘বিবাহ’ হলো ইসলাম ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতিনীতি ও বিধান। পবিত্র কোরআনে সুরা নিসার ৩ নম্বর আয়াত অনুযায়ী একজন মুসলিম পুরুষ ৪টি পর্যন্ত বিবাহ করতে পারবেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ‘মুসলিম পার্সোনাল ল’ (শরিয়ত) অ্যাপ্লিকেশন অ্যাক্ট, ১৯৩৭’ ধারা (২) অনুযায়ী বিবাহ, ভরণপোষণ, তালাক ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিদ্যমান পক্ষগণ যদি মুসলিম হন, সে ক্ষেত্রে ইসলামি শরিয়াহ আইন প্রযোজ্য হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো নাগরিক ধর্ম প্রতিপালন না–ও করতে পারে, কিন্তু ধর্মকে অপমান করা এবং ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করার অধিকার কারও নেই।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বিবাদী সানজিদা ইসলাম তুলি ইসলামে বিবাহ ইস্যুতে অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি ইসলাম ধর্মকে অপমান করেছেন এবং মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করেছেন, যা দণ্ডবিধির ২৯৫(ক) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এ বিষয়ে সানজিদা ইসলামের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি ১৫ নভেম্বর ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টের কথা উল্লেখ করেন। ওই পোস্টে তিনি বলেছিলেন, ‘আজ নারীর অধিকার নিয়ে বলতে গিয়ে আমি চার বিয়ের ব্যাপারে ইসলামের বিধানের বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। কোরআন ও সুন্নাহতে একাধিক বিয়ের অনুমতি আছে, তবে শর্ত হলো ন্যায়বিচার (সুরা নিসা ৪:৩)। ইসলামে একজন পুরুষ সর্বোচ্চ চারটি বিয়ে করতে পারে, তবে কঠোর শর্ত হলো—প্রতিটি স্ত্রীকে সময়, অর্থ, অধিকার ও মর্যাদায় পূর্ণ সমান ন্যায়বিচার করতে হবে। কোরআন স্পষ্ট নির্দেশ দেয়: যদি ন্যায়বিচার করা সম্ভব না হয়, তবে ‘একটিতেই সীমাবদ্ধ থাকো’ (সুরা আন-নিসা ৪:৩)।’
সানজিদা ইসলাম আরও বলেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে—ইসলাম নারীর সম্মান, অধিকার ও নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। তাই শুধু আইনের একটি অংশ ধরে নয়, পুরো নির্দেশনা অনুসারে চলা জরুরি। সমাজের দায়িত্ব হলো নারীর সকল অধিকার নিশ্চিত করা এবং তাদের প্রতি সম্মান বজায় রাখা। তাই আমার বক্তব্য ছিল শুধু এই—আমাদের বোনদের ধোঁকা দিয়ে লুকিয়ে বিয়ে করা, তাদের হক থেকে বঞ্চিত করা এবং প্রতারণা করা ইসলামের শিক্ষা নয়। ইসলাম ন্যায়, স্বচ্ছতা ও আমানতের ওপর জোর দেয়, প্রতারণার ওপর নয়।’