ছবিসহ জকসুর ভোটার তালিকা প্রকাশ, বিপাকে পর্দানশীন ছাত্রীরা
Published: 13th, November 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
বুধবার (১২ নভেম্বর) রাতে জকসুর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে শিক্ষার্থীদের ছবিসহ তালিকাটি প্রকাশ করা হয়।
আরো পড়ুন:
আওয়ামী লীগের নাশকতার প্রতিবাদে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ঢাবিতে ডিনস অ্যাওয়ার্ড পেলেন শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী
তালিকা প্রকাশের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। অনেক শিক্ষার্থী মনে করছেন, ছবিসহ এই তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও তথ্য নিরাপত্তা ব্যাহত হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভোটার তালিকা প্রকাশ করা প্রয়োজনীয় হলেও, ছবিসহ তালিকাটি সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা ঠিক হয়নি। তাদের মতে, এটি প্রত্যেকের নিজস্ব স্টুডেন্ট আইডি লগইনের মাধ্যমে সীমিতভাবে প্রকাশ করা যেত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক পর্দানশীন নারী শিক্ষার্থী বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে পর্দা মেনে চলি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে আমার ছবি প্রকাশ্যে দেখা আমার পরিবারের জন্যও অস্বস্তিকর। ভোটার তালিকায় ছবি থাকা নিয়ে আপত্তি নেই, কিন্তু সেটি সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা আমাদের গোপনীয়তার লঙ্ঘন।”
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী জিহাদ ইসলাম শাওন বলেন, “আমার অনেক বান্ধবী ইসলামি বিধান মেনে পর্দা করে। কিন্তু ভোটার তালিকায় তাদের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। নারী শিক্ষার্থীদের ছবিগুলো হাইড করার সুযোগ রাখলে ভালো হত।”
আরেক শিক্ষার্থী রাফিউল আহসান ফেসবুকে লিখেছেন, “প্রশাসন ছবিসহ ভোটার লিস্ট উন্মুক্ত করেছে, যেখানে অনেকে পর্দা মেইনটেইন করেন। মিনিমাম সিকিউরিটি রাখা উচিত ছিল।”
জবি শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, “নারী শিক্ষার্থীদের ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রকাশ অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ে হাইকোর্টে রিটের নজির থাকা সত্ত্বেও জবি প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। আমরা দ্রুত এই তালিকা সংশোধনের দাবি জানাই।”
এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড.
এর আগে, গত ৩ নভেম্বর জবি শাখা ছাত্রদল জকসু নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি স্মারকলিপি দেয়। সেখানে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রকাশ, অমোচনীয় কালি ব্যবহার, স্বচ্ছ গ্লাসের ব্যালট বাক্স, প্রতিটি বাক্সে নাম্বার সংযোজনসহ ১২ দফা দাবি জানানো হয়।
জবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “নির্বাচনের স্বচ্ছতার স্বার্থে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রকাশের দাবি আমরা জানিয়েছিলাম। নারী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও যে ছবিগুলো ব্যবহৃত হয়েছে, সেগুলো শিক্ষাগত বা সরকারি কাজে ব্যবহৃত প্রযোজ্য ছবিই।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিতে জিএস-রেজিস্ট্রার বাকবিতণ্ডা: বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের নিন্দা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ ও রাকসুর জিএস সালাহউদ্দীন আম্মারের বাকবিতণ্ডার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে শাখা জিয়া পরিষদ ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) জিয়া পরিষদ ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত পৃথক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
রাজকীয় সাজে টুকু স্যারকে বিদায় দিলেন হাকিমপুরবাসী
বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত, চাকরি গেল প্রাথমিক শিক্ষিকার
বিবৃতিতে জিয়া পরিষদ নেতৃবৃন্দ বলেছেন, রাবির রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদের আফিস কক্ষে গত ৯ নভেম্বর রাকসুর নির্বাচিত জিএস সালাউদ্দিন আম্মার কর্তৃক সংগঠিত ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে শাখা জিয়া পরিষদ।
প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জোরপূর্বক অফিসে প্রবেশ করে সালাউদ্দিন আম্মারকে বারবার বলতে শোনা যায় অফিস কক্ষে মহানগর বিএনপির প্রোগ্রাম চলছে। অথচ প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে মহানগর বিএনপির কোনো নেতাকর্মীকে সেখানে দেখা যায়নি। উল্লেখ্য সেখানে রাজশাহীর এনসিপি নেতাদের সঙ্গে রেজিস্ট্রারের মতবিনিময় সভা চলছিল।
এটা বিএনপির বিরুদ্ধে নেতিবাচক কোনো কিছু প্রচার করে ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা মাত্র। রেজিস্ট্রার ও বিএনপিকে নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করায় রাবি শাখা জিয়া পরিষদ তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
অন্যদিকে, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের বিবৃতিতে তারা বলেছেন, গত ৯ নভেম্বর বেলা ২টায় রেজিস্ট্রারের কক্ষে তিনি বাইরের কিছু অতিথির সঙ্গে আলাপ করছিলেন। এ সময় রাকসুর সাধারণ সম্পাদক আম্মার রেজিস্ট্রারের কক্ষে প্রবেশের অনুমতি চাইলে তিনি তাকে ১০ মিনিট পরে প্রবেশ করতে বলেন।
ওই সময় ফিশারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান রেজিস্ট্রারের সঙ্গে সাক্ষাতের অপেক্ষায় ছিলেন। তিনিও আম্মারকে ভিতরে গেস্ট আছে জানিয়ে অপেক্ষা করতে বলেন। তিনি নির্বাচিত জিএস, তাই তার যে কোন সময় প্রবেশাধিকার আছে বলে দাবি করে।
তিনি রেজিস্ট্রার ও ডিনের অনুরোধ উপেক্ষা করে রেজিস্ট্রারের কক্ষে জোরপূর্বক কয়েকজন শিক্ষার্থীসহ ঢুকে পড়ে এবং কোনো একটি ফাইলের ব্যাপারে মিথ্যা দোষারোপ করে উচ্চবাচ্য শুরু করে অফিসের পরিবেশ বিঘ্নিত করে।
তিনি নির্বাচিত জিএস হলেও প্রশাসনিক কাজে খবরদারী করা তার এখতিয়ার বহির্ভূত কাজ। নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকে বিভিন্নভাবে প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপ ও শিক্ষক লাঞ্ছনাসহ নানা কাজে সংশ্লিষ্ট থাকা সত্ত্বেও অজ্ঞাত কারণে বিশ্বদ্যিালয় প্রশাসন তার বিষয়ে নীরব থেকেছে এবং সে আইনের আওতার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। ফলে তার দুঃসাহস ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার এসব কার্যকলাপে রাবির জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম গভীর উদ্বেগ, তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
একইসঙ্গে তার অতীত ঘটনাবলীর তদন্ত রিপোর্ট অনতিবিলম্বে প্রকাশ করে তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম জোর দাবি জানিয়েছে।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী