‘মেসিও জানেন, আমি তাঁর মতো হতে চাই না’: ইয়ামাল
Published: 1st, December 2025 GMT
‘আমার কাছে তিনিই ইতিহাসের সেরা।’
লামিনে ইয়ামাল এই কথা বলার পর তুলনা করা কি আর মানায়? তবু কেউ কেউ জোর করে লিওনেল মেসির সঙ্গে তুলনা টেনে আনেন। অথচ ইয়ামালের ক্যারিয়ারের সেই সময়টা এখনো আসেনি। সামনে তাঁর আরও অনেক পথ।
হ্যাঁ, ইয়ামালের খেলার ধরন দেখে কারও কারও মনে মেসির কথা আসে। এটুকুই। কিন্তু তুলনা? সে পথে হাঁটতে রাজি নন ইয়ামাল নিজেই। যুক্তরাষ্ট্রের ‘সিবিএস নিউজ’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই বার্সেলোনা উইঙ্গার পরিষ্কার বলেছেন, তিনি মেসির মতো হতে চান না। নিজের পথটা তিনি গড়তে চান নিজের মতো করে। আর মেসিও নাকি সেটা জানেন।
ইয়ামাল যেন অনুচ্চারে বোঝাতে চাইলেন—‘যাদের নিয়ে তুলনা তাদের মাথাব্যথা নেই, আর চারপাশের পাড়া–পড়শির ঘুম নেই!’ মেসি ২০২১ সালে বার্সা ছাড়ার পর সত্যিকার অর্থে শুধু ইয়ামালের খেলাতেই তাঁর ছায়া দেখা যায়। জাতীয় দল আর বার্সা মিলিয়ে এত অল্প বয়সে ইয়ামালের সাফল্যের পথরেখাও প্রায় মেসির মতো। বার্সার হয়ে একাধিকবার লিগ জিতেছেন, স্পেনের হয়ে ইউরো। ব্যালন ডি’অরের আলোচনায়ও আছেন।
লামিনে ইয়ামাল এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভোলায় সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ ১৩ জেলে ভারতের কারাগারে বন্দী
সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ২০ দিন ধরে নিখোঁজ ভোলার লালমোহনের ১৩ জেলের খোঁজ মিলেছে। আজ সোমবার দুপুরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন তাঁরা। হঠাৎ বিকল হয়ে যাওয়া তাঁদের ট্রলার স্রোতের টানে ভারতের সীমানায় ঢুকে পড়ে। বর্তমানে তাঁরা পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলে আটক রয়েছেন বলে ভিডিও কলে জানিয়েছেন।
ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌড়নগর ইউনিয়নে ‘মা বাবার দোয়া’ নামের একটি ট্রলার গত ১০ নভেম্বর রাতে ১৩ জন জেলে নিয়ে চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ ঘাট থেকে সাগরে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। পাঁচ দিন পরে ফিরে আসার কথা থাকলেও ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁদের কোনো খোঁজ না মেলায় পরিবারগুলো হতাশ হয়ে পড়ে।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের চরকালাচাঁদ গ্রামের মো. সাব্বির হোসেন, কুলচড়া গ্রামের মো. হেলাল উদ্দিন, মো. শামীম, মাসুদুর রহমান, মো. খোকন, মো. সজিব, হরধরিঞ্জ গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর আলম, ভেদুরিয়া গ্রামের মো. নাছির, ধলীগৌরনগর গ্রামের মো. আলম, মো. ফারুক মাঝি, মো. মাকসুদুর রহমান, মোহাম্মদ ফারুক ও আব্দুল মালেক।
জেলে মো. খোকনের স্ত্রী মোসাম্মত নিপা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘১০ নভেম্বর আমার স্বামী সমুদ্রে যায়। আজ ভিডিওতে শুধু তার চোখের পানি দেখেছি। আমার একটা প্রতিবন্ধী ছেলে আর ছোট একটা মেয়ে সারা দিন বাবাকে ডাকতে ডাকতে কান্না করে। আমি নিজেও অসুস্থ, সন্তানসম্ভবা। সরকারের কাছে মিনতি—আমার স্বামীসহ সব জেলেকে ফিরিয়ে এনে দিন।’
জেলে মো. সাব্বির হোসেনের স্ত্রী সীমা আক্তার বলেন, ‘চার মাস হলো আমাদের বিয়ে হয়েছে। আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্বামীর সঙ্গে কথা হয়েছে। কিছু বলতে পারেনি, শুধু কাঁদছিল। সবাইকে যেন দ্রুত দেশে আনা হয়, এই আবেদন করছি।’
নিখোঁজ জেলেদের পরিবারের দাবি, ভিডিও কলটি ভারতীয় পুলিশের সহায়তায় সম্ভব হয়েছে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন জেলেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, খাওয়াদাওয়াসহ অনেক কষ্টে তাঁদের দিন কাটছে। তাঁরা দ্রুত দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন স্বজনদের কাছে।
ট্রলারের প্রধান ফারুক মাঝির ছেলে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ১৩ জন জেলের কেউ না ফেরায় তাঁরা লালমোহন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। ঘাটে ঘাটে খুঁজেছেন। সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন করেছেন। সব গণমাধ্যমে এসব সংবাদ প্রচার হয়েছে। অবশেষে খোঁজ পাওয়া গেছে।
লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সাগরে মাছ শিকার করার সময় লালমোহনের জেলেদের ফিশিংবোট বিকল হয়ে যায়। ভাসতে ভাসতে ভারতের সীমানায় চলে গেলে ভারতের নৌবাহিনী তাঁদের আটক করে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। আজ সোমবার দুপুরের দিকে নিখোঁজ জেলেদের একজনের মুঠোফোনে ভিডিও কল দেন তাঁর চাচাতো ভাই। সেই সূত্র ধরে পশ্চিমবঙ্গের জেল-পুলিশের সহযোগিতায় নিখোঁজ জেলেদের সঙ্গে স্বজনেরা কথা বলে জানতে পারেন এসব ঘটনা। ওসি আরও বলেন, ‘আমরা ইমিগ্রেশনে চিঠি লিখেছি। পরবর্তীতে সরকার তাঁদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’