ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার দর্শনা সীমান্তে এক ভারতীয় কৃষকের ‘নিখোঁজ’ হওয়া নিয়ে তার পরিবারের উদ্বেগের মধ্যে জানা গেল চোরাকারবারের স্বর্ণসহ বাংলাদেশের মুজিবনগর সীমান্তে বিজিবির হাতে আটক হয়েছেন তিনি।

বিজিবি বলছে, মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুজিবনগর সীমান্তের ১০৪ নম্বর পিলারের কাছ থেকে নূর হোসেনকে আটক করা হয়। তিনি ভারতের নদীয়া জেলার হৃদয়পুর গ্রামের মৃত সোনা সেখের ছেলে।

এর আগে, নূর হোসেনের পরিবার ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের কাছে তার সন্ধান চেয়েছিল। তারা বলেছিল, সকালে কাজে বেরিয়ে আর ফিরে আসেননি নূর হোসেন। খবর পেয়েছেন, সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে বিজিবি তাকে ধরে নিয়ে গেছে।

নূর হোসেনকে বিজিবি ধরে নিয়ে আসেনি; বরং চোরাচালানের স্বর্ণের বারসহ হাতেনাতে তাকে আটক করা হয়েছে। 

বুধবার (১৫) বিকেলে বিষয়টি বিজিবির কাছ থেকে পরিষ্কার হওয়া গেছে। মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্তে ১৮টি স্বর্ণের বারসহ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নূর হোসেনকে আটক করে বিজিবি।

চুয়াডাঙ্গা বিজিবি-৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মাদ জাহিদুর রহমান বলেন, ‘‘মুজিবনগর মাঠের মধ্য দিয়ে স্বর্ণ চোরাচালানের খবর পেয়ে মেইন পিলার ১০৪-এর সাব-পিলার ৫-এর কাছে ফোর্স নিয়ে অবস্থান নেয় মুজিবনগর বিওপির টহল কমান্ডার হাবিলদার রফিকুল ইসলাম।’’ 

‘‘পরে সন্দেহভাজন একজন সীমান্তে প্রবেশ করলে তাকে চ্যালেঞ্জ করেন বিজিবির সদস্যরা। এ সময় পালানোর চেষ্টা করে সে। বিজিবি তাকে ধাওয়া করে। পরে মাঠের মধ্য থেকে আটক করা হয় নূর হোসেনকে। তার শরীর তল্লাশি করে কোমরে প্যান্টের ভেতর স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো তিনটি প্যাকেট জব্দ করা হয়। পরে সেগুলো খুলে ১৮টি বার পাওয়া যায়; যার ওজন দুই কেজি ১৮ গ্রাম।’’

“এ ব্যাপারে হাবিলদার রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় মামলা করছেন। স্বর্ণের বারগুলো মেহেরপুর ট্রেজারি অফিসে জমার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে,” বলেছেন জাহিদুর রহমান।

নূর হোসেনের পরিবার ও তার স্বজনদের দাবি অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকালে নূর হোসেন সেখ বিএসএফ-এর কাছে তার পরিচয়পত্র জমা দিয়ে কাঁটাতার পেরিয়ে জিরো পয়েন্টের কাছে ভারতের ভূখণ্ডের মধ্যে থাকা নিজের জমিতে কাজ করতে যান। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও তিনি বাড়িতে ফেরেননি। এরপরই সীমান্তবর্তী অন্য চাষিদের কাছ থেকে খবর আসে, বিজিবি তাকে ধরে নিয়ে গেছে।

নূর হোসেনের বিষয়ে অন্যের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে তার পরিবার এ বিষয়ে খোঁজ নিতে বুধবার বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করলে বেরিয়ে আসে স্বর্ণ চোরালাচানের জড়িত থাকার চাঞ্চল্যকর ঘটনা। কৃষকের ছদ্মবেশে সীমান্তে স্বর্ণ চোরাকারবারির সঙ্গে যুক্ত নূর হোসেন এখন মুজিবনগর থানা হেফাজতে রয়েছেন।
 

ঢাকা/সুচরিতা/সোহাগ/এনএইচ 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

সীমান্তে ফের উত্তেজনা, বিএসএফ সদস্য ও বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আহত

ফের উত্তেজনা ছড়াল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায়। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও বাংলাদেশি গরু পাচারকারীদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হিলি সীমান্তের কাছে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মল্লিকপুর বিওপি এলাকা। গুলি-পাল্টা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হয়েছে এক বিএসএফ জওয়ান ও এক বাংলাদেশি নাগরিক। আহতদের বর্তমানে চিকিৎসা চলছে পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গারামপুর সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। পুরো ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এটেছে স্থানীয় প্রশাসন।

বিএসএফের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় এখনো অফিসিয়াল বিবৃতি না এলেও বিএসএফের স্থানীয় বর্ডার আউটপোস্ট সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ভোররাতে  ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর ব্লকের মল্লিকপুর সীমান্তে। গুলিবিদ্ধ ওই বাংলাদেশি পাচারকারীর নাম মুহাম্মদ আলাউদ্দিন (৩২) তিনি বাংলাদেশের দিনাজপুরের বাসিন্দা। আহত বিএসএফ জাওয়ানের নাম ওরফেজ কুমার (২৭) তিনি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার রামপুরহাট এলাকার বাসিন্দা। আহত ৯১ নম্বর ব্যাটালিয়ানের বিএসএফ ব্যাটেলিয়নের জওয়ান ওয়াফেজ বুধবার মল্লিকপুর বিওপিতে কর্তব্যরত ছিলেন।

বুধবার ভোররাতে প্রায় পাঁচজন সশস্ত্র বাংলাদেশি পাচারের উদ্দেশে ঢুকে পড়ে ভারতীয় সীমান্তে। এ সময় কর্তব্যরত ওই জওয়ান বাধা দিতে গেলে অতর্কিত হামলা চালায় ওই বিএসএফ জওয়ানের ওপর। এ সময় বিএসএফ জাওয়ানের রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা করে। বাধা দিলে ধরানো অস্ত্রের কোপ দিয়ে গুরুতর আহত করা হয় তাকে। এরপরেই আত্মরক্ষার্থে পাচারকারীদের উদ্দেশে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় ওই বিএসএফ জওয়ান। ঘটনায় মুহাম্মদ আলাউদ্দিন নামে ওই বাংলাদেশি পাচারকারী গুলিবিদ্ধ হলে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে বাকিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

এদিকে এমন খবর প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায় সীমান্তবর্তী এলাকায়। সীমান্তে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। অন্যদিকে আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। বর্তমানে সেখানেই চলছে দুই আহতের চিকিৎসা। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্তে নেমেছে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ।

সম্প্রতি গঙ্গারামপুরের সুখদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই মল্লিকপুরের উন্মুক্ত সীমান্ত এলাকায় শুরু হয়েছে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ। ফলে এই এলাকায় বিএসএফ-বিজিবির পাল্টাপাল্টি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে কয়েক গুণ। তারপরেও পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য থামাতে রীতিমত ঘাম ছুটছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নওগাঁ সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি আটক
  • সীমান্তে ফের উত্তেজনা, বিএসএফ সদস্য ও বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আহত
  • নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেল বিএসএফ 
  • গরু আনতে গিয়ে বিএসএফ-এর হাতে আটক বাংলাদেশি 
  • সীমান্তে বিএসএফের হাতে আটক চার বাংলাদেশি