বর্তমানে যে অবস্থা, তাতে নির্বাচনে অসুবিধা নেই: উপদেষ্টা
Published: 15th, November 2025 GMT
বর্তমানে দেশে আইনশৃঙ্খলার যে অবস্থা, তাতে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে অসুবিধা নেই বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘‘দেশের পরিস্থিতি এখন ভালো আছে, ভবিষ্যতেও ভালো থাকবে। নির্বাচনকালীন ছোটখাটো সকল ধরনের ঘটনা, সব সময়ই ঘটে। বর্তমানে দেশে অস্থিরতা নেই।’’
আরো পড়ুন:
এনসিপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের সময় বাড়ল
কুষ্টিয়া-১ আসনে এনসিপির প্রার্থী হতে চান নুসরাত তাবাসসুম
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন ট্যুরিজম পার্ক পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ সব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘‘ইলেকশন ভালো হওয়ার জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দল, জনগণ, নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন এবং সাংবাদিকের সহযোগিতা। সবাই যদি সহযোগিতা করে এবং সবাই যদি নিজের কাজটা ভালোভাবে করে তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠভাবে হবে।’’
সমুদ্র নিরাপত্তা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী অত্যন্ত সক্রিয় রয়েছে। তবে অনেক সময় জেলেরা মাছ শিকারের সময় অজান্তেই মিয়ানমারের জলসীমায় ঢুকে পড়ায় তাদের আটক হওয়ার ঘটনা ঘটে। আমরা জেলেদের প্রণোদনা বাড়ানোর চেষ্টা করছি।’’
পুলিশের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘আগের চেয়ে পুলিশের মনোভাব ও মনোবল বৃদ্ধি পেয়েছে। পুলিশের দক্ষতাও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।’’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ, আনসার ও ভিডিপির বিভাগীয় উপ-মহাপরিচালক আব্দুস সামাদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সমীর সরকার, কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসিন সাদেক প্রমুখ।
পরে উপদেষ্টা কুয়াকাটা সুমদ্র সৈকত পরিদর্শন করেন। তিনি কুয়াকাটায় রাত্রিযাপন করবেন। রাতে তিনি কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌপুলিশ ক্যাম্প এবং সকালে তিনি মহিপুর থানা পরিদর্শন করে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
ঢাকা/ইমরান/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইমাম শাফেয়ি (রহ.): আলেম কবি, তত্ত্বজ্ঞানী ইমাম ও উসুল শাস্ত্রের পথিকৃৎ
ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইদ্রিস আল-শাফেয়ি। কুরাইশ বংশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র তিনি। তাঁর বংশধারা মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রপিতামহ আবদে মানাফের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের চার মহান ইমামের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তাঁর আগে রয়েছেন ইমাম আবু হানিফা এবং ইমাম মালিক (রহ.)।
তিনি এক অসামান্য প্রতিভার অধিকারী, যিনি ফিকহ তথা ইসলামের আইনশাস্ত্রকে সুশৃঙ্খল রূপ দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় হিজরি শতকের ‘মুজাদ্দিদ’ বা সংস্কারক হিসেবেও তাঁর খ্যাতি রয়েছে। তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি ‘আর-রিসালা’ গ্রন্থ লিখে ‘উসুলে ফিকহ’ বা ইসলামি আইনশাস্ত্রের মূলনীতিগুলো লিপিবদ্ধ করেন।
তিনি ছিলেন ফিকহ, হাদিস ও তাফসির শাস্ত্রের ইমাম। সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন উঁচু দরের সাহিত্যিক ও কবি। যুগে যুগে মুসলিম উম্মাহর মাঝে তাঁর জ্ঞান ও প্রভাব আজও অম্লান।
জন্ম ও শৈশব১৫০ হিজরি সনের রজব মাসে (৭৬৭ খ্রিষ্টাব্দ) ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চলে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবেই তাঁর বাবা ইন্তেকাল করেন। বাবার চেহারাটুকুও তাঁর স্মৃতিতে ছিল না।
তাঁর মা ফাতিমা বিনতে আব্দুল্লাহ ছিলেন একজন মহীয়সী নারী। ছেলের বংশপরিচয় যেন হারিয়ে না যায়, সেই আশঙ্কায় তিনি দুই বছরের শিশু মুহাম্মদকে নিয়ে মক্কায় ফিরে আসেন। যেখান থেকে ইসলামের আলো চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল, মক্কার সেই পবিত্র ভূমিতেই তিনি বেড়ে ওঠেন।
জ্ঞানার্জন ও নিজেকে গড়ে তোলাকিশোর বয়সেই তাঁর জ্ঞানতৃষ্ণা প্রকাশ পায়। প্রচণ্ড দারিদ্র্য সত্ত্বেও তাঁর মা তাঁকে শিক্ষকের কাছে পাঠান। মাত্র সাত বছর বয়সেই তিনি সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করে ফেলেন।
সেই দিনগুলোর কথা স্মরণ করে তিনি বলতেন, ‘আমি এতিম ছিলাম, আমার মায়ের কোনো অর্থকড়ি ছিল না। শিক্ষক যখন কোথাও যেতেন, আমি তাঁর স্থানে অন্যদের পড়াতাম, আর তাতেই তিনি সন্তুষ্ট থাকতেন।’
অসাধারণ মেধা আর তীক্ষ্ণ বুদ্ধির ছটা তাঁর মধ্যে ছোটবেলা থেকেই দেখা যায়। তাঁর মা তাঁকে পবিত্র কাবার শাইখদের কাছে কোরআনের তাফসির শিখতে পাঠান। এরপর তিনি হাদিস শিক্ষার দিকে ঝুঁকে পড়েন। তাঁর স্মরণশক্তি ছিল প্রবাদতুল্য।
ভাষার প্রতি তাঁর অনুরাগ ছিল প্রবল। তিনি আরবের বেদুইনদের কাছ থেকে বিশুদ্ধ আরবি ভাষা ও প্রাচীন কবিতা শিখতে আগ্রহী হন। কারণ, কোরআনের প্রকৃত অর্থ ও মর্ম বুঝতে হলে ভাষার অলংকার ও কাব্যশাস্ত্র জানা প্রয়োজন। তৎকালীন মিসরের ইমাম লাইস ইবনে সা’দ তাঁকে এই পরামর্শ দেন।
আরও পড়ুনইমাম তাবারি: জ্ঞানী, দুঃসাহসী, মর্মান্তিক জীবন০২ নভেম্বর ২০২৫ইসলামি ক্যালিগ্রাফিতে লেখা ইমাম শাফেয়ির নাম