ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন কি না সে সম্পর্কে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে কোনো তথ্য নেই। সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন কি না সে সম্পর্কে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। হাসিনার বর্তমান স্ট্যাটাস কী হবে তা ভারত সরকারের এখতিয়ারাধীন।

গত বছরের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ভারতে বসবাস করছেন। ভারতের সাথে সকল চুক্তি পর্যালোচনার দাবির বিষয়ে রফিকুল আলম স্পষ্ট করে বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিগুলো করেছে। যদি কোনো মন্ত্রণালয় বা সংস্থা পর্যালোচনার প্রয়োজন মনে করে, তবে তারা সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারে।

এক প্রশ্নের উত্তরে রফিকুল আলম বলেন, ভারতে বাংলাদেশের নতুন হাইকমিশনারের নিয়োগের বিষয়ে ঢাকা ভারতের জবাবের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। আমরা ভারতের জবাবের অপেক্ষা করছি। আমার মনে হয় না এতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগছে। কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই, তবে সাধারণত এতে ৩ থেকে ৪ মাস লাগে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

দেশ রাজনৈতিকভাবে কঠিন সময় অতিক্রম করছে: ফখরুল

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “ফ্যাসিবাদের পতন হলেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। দেশ রাজনৈতিকভাবে কঠিন সময় অতিক্রম করছে।”

বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

মহান মে দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খানসহ সিনিয়র নেতারা বক্তব্য রাখেন। শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।

সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দল ও জনগণকে অবহেলা করে, এমন কোনো চুক্তি করবেন না, যে চুক্তি দেশের বিরুদ্ধে যাবে।  

সংস্কারকাজ শেষ করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব।

তিনি বলেন, বিভাজন নয়, সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চাই। বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ থাকবে দেশ।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, আমরা অনেক বছর একটা ডাইনির হাতে জিম্মি থেকেছি। কোনো ছেলে-মেয়ের পরিবারে বিএনপির গন্ধ থাকলেই তাদের আর চাকরি হতো না। ব্যবসাতেও একই অবস্থা করেছে তারা। দীর্ঘ সংগ্রাম আর অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা তার হাত থেকে রেহাই পেয়েছি। তারপরও ডাইনি হাসিনা পাশের দেশ ভারতে বসেই আমাদের গুঁতোগুঁতি করে চলেছেন। দেশ থেকে পালিয়েও জনগণকে শান্তিতে থাকতে দিতে চায় না সে ভয়াবহ ডাইনি।

আয়নাঘর সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব বলেন, হাসিনা ও আওয়ামী লীগ যাদের ভয় করেছে বা আওয়ামী যাদের লীগ নিজেদের জন্য হুমকি মনে করেছে, তাদেরকেই তারা গুম করেছে। ১৭০০ মানুষকে গুম করেছে তারা। গুম হওয়া বেশিরভাগ মানুষেরই কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আর যাদের খোঁজ পাওয়া গেছে, তারাও অন্তত ৭ থেকে ৮ বছর পর্যন্ত আটকে থেকেছেন। সিলেটের এমপি ও প্রতাপশালী নেতা ইলিয়াসের এখনো খবর পায়নি তার পরিবার।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষের কাছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দল বিএনপি। অন্যায় করবেন না, যদি করেন তাহলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে। কেউ অন্যায় করলে তাকে আইনের হাতে তুলে দেবেন। দল আপনাদের, ধানের শীষ আপনাদের, রক্ষা করার দায়িত্বও তাই আপনাদেরই।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) শিল্পীদের দেশাত্মবোধক গান ও গণসংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় সমাবেশ।

বিভিন্ন জেলা ও শহর থেকে আসা বিএনপির নেতাকর্মীদের মাথায় ছিল লাল, সবুজ, সাদা ও কালো টুপি, পরনে ছিল টি-শার্ট। 

সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়া পল্টন এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়।

ঢাকা/এএএম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ