শরীরের নানা স্বাস্থ্যগত সমস্যার জানান দেয় শুষ্ক, দুর্বল ও ভঙ্গুর নখ। অনেক সময় আবহাওয়া ও পানিদূষণের মতো কারণে নখের স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। তবে খাদ্যাভ্যাস ও শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সুষম পুষ্টির অভাবকেই নখ দুর্বল হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে দাবি করেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ত্বকবিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক ড.
প্রতিদিনের খাবারে এসব পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখার পরামর্শ দেন যুক্তরাষ্ট্রের আরেক ত্বকবিশেষজ্ঞ ড. মার্নি নুসবাউম। তিনি বলেন, প্রতিদিন নির্দিষ্টি কয়েকটি খাবার খেলেই মিটবে সুস্থ ও সুন্দর নখের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা। দেখে নিন খাবারগুলোর তালিকা—
১. সবুজ শাকসবজিপালং, ডাঁটা, পুঁই ইত্যাদি গাঢ় সবুজ পাতাযুক্ত শাক অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ও ভিটামিনসমৃদ্ধ। সবুজ সবজি, যেমন বাঁধাকপি, ব্রকলি ইত্যাদিতে আছে প্রচুর আয়রন, ফোলেট, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ ও সি। এসব নখ ভেঙে যাওয়া রোধ করে। ড. নুসবাউম বলেন, আয়রনের অভাবে নখের আকৃতি নষ্ট হতে পারে। নখ ফ্যাকাশে হয়ে ভঙ্গুর ও বিবর্ণ হতে পারে। এ অবস্থায় ভিটামিন সি শরীরকে আয়রন শোষণ করতে সাহায্য করে, যা ধীরে ধীরে নখের সুস্থতা ফিরিয়ে দেয়।
২. মিষ্টি আলুমিষ্টি আলুতে প্রচুর বিটা–ক্যারোটিন থাকে, যা ভিটামিন এ–এর ভালো উৎস। ত্বকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শক্তিশালী এই অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, দৃষ্টিশক্তি রাখে প্রখর। ভিটামিন এ শরীরকে কেরাটিন তৈরি করতে সাহায্য করে। এটি একধরনের প্রোটিন, যা নখ তৈরি ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটি নখকে পাতলা ও বাঁকা হওয়া থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন এ ছাড়া মিষ্টি আলু ভিটামিন সি ও বি৬–এর ভালো উৎস। এতে নখের জন্য উপকারী ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম ও আয়রন পাবেন।
আরও পড়ুননখ উল্টে গেলে কী করবেন১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫৩. ডিমডিমে পাবেন প্রোটিন, বায়োটিন ও ভিটামিন ডি। বায়োটিন ভিটামিন বির একটি রূপ, যা আমিষজাত খাবারে বিদ্যমান ফ্যাটি অ্যাসিড, গ্লুকোজ ও অ্যামিনো অ্যাসিড বিপাকে সহায়তা করে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মতে, কাঁচা ডিমের সাদা অংশে পাওয়া যায় ডায়েটারি অ্যাভিডিন নামক একটি গ্লাইকোপ্রোটিন, যা শরীরকে বায়োটিন শোষণ করতে বাধা দেয়। তবে ডিম রান্না করলে আগুনের তাপ অ্যাভিডিনকে নিরপেক্ষ করে। অর্থাৎ ডিম রান্না করে খেলে তা থেকে শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে বায়োটিন পায়, যা নখ ও চুলের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৪. মাছপ্রোটিন, ভিটামিন ডি, সেলেনিয়াম ও বি২, বি৩, বি৬ ও বি১২ ভিটামিনের ভালো উৎস মাছ। এসব মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট আপনার নখ ফাটা, আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। মাছের সবচেয়ে উপকারী উপাদান হচ্ছে ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এই চর্বি ত্বক ও নখের স্বাস্থ্য উন্নত করে। মস্তিষ্ক ও চোখ সুস্থ রাখার পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।
আরও পড়ুননখ একটুতেই ভেঙে ভেঙে পড়ছে? জেনে নিন করণীয়২৭ জুলাই ২০২৪৫. গরুর কলিজাড. নুসবাউম বলেন, গরুর কলিজা বায়োটিন ও প্রোটিনের খুব ভালো উৎস। বায়োটিন কেরাটিন উৎপাদনে অবদান রাখে, যা মজবুত নখ ও চুলের গঠনে ভূমিকা রাখে।
৬. সূর্যমুখীর বীজসূর্যমুখীর বীজ ম্যাগনেশিয়ামের দুর্দান্ত উৎস, যা দুর্বল ও ভঙ্গুর নখের সমস্যা সমাধানে আদর্শ খাবার। ম্যাগনেশিয়াম চুল, ত্বক ও নখের জন্য দারুণ কার্যকর খনিজ। এটি প্রোটিন সংশ্লেষণের সঙ্গে যুক্ত এবং আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি সক্রিয় ও বিপাক করতে সাহায্য করে। ড. নুসবাউম বলেন, শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি হলে নখ দুর্বল ও খসখসে হয়। এ পর্যায়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম গ্রহণ করতে হবে। এর জন্য সূর্যমুখীর বীজ ভালো উৎস হতে পারে।
সূত্র: ভোগ অনলাইন
আরও পড়ুননখ আপনার স্বাস্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দিচ্ছে, বুঝতে পারছেন তো?০৫ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স হ য য কর দ র বল নখ র স
এছাড়াও পড়ুন:
‘ফিরিয়ে দাও’ থেকে ‘ধূসর সময়’: সিডনিতে একই মঞ্চে মাইলস ও আর্টসেল
সিডনির বসন্তের সন্ধ্যা। লিভারপুলের হুইটল্যাম লেজার সেন্টারের বাইরে তখন লম্বা লাইন—হাতে পতাকা, কাঁধে ব্যাগ, চোখে প্রত্যাশা। সাউন্ডচেকের শব্দ ভেসে আসছে বাইরে। ভেতরে যেন উন্মুখ এক ‘সাগর’, যেখানে মিশে আছে দুই প্রজন্মের মুখ, কণ্ঠ আর স্মৃতি। শনিবার রাতটি হয়ে উঠেছিল প্রবাসী বাঙালিদের জন্য এক ব্যতিক্রমী উৎসব—বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের দুই যুগের দুই প্রতীক, মাইলস ও আর্টসেল; প্রথমবারের মতো একই মঞ্চে গান করল সিডনিতে।
‘গ্রিনফিল্ড এন্টারটেইনমেন্ট’ আয়োজিত এই ‘মিউজিক ফেস্ট’ ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছিল, তা যেন উপচে পড়ল সেই রাতে। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পরপরই সব শেষ। অনুষ্ঠান শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিম উপশহর লিভারপুলের রাস্তাগুলো ভরে গেল গানের ভক্তে।
আয়োজনের আগে ভিডিও বার্তায় মাইলস জানায় তাদের উচ্ছ্বাস। ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য হামিন আহমেদ বলেন, ‘সিডনি বরাবরই আমাদের কাছে বিশেষ কিছু। সম্ভবত ১৯৯৬ সালে আমরাই প্রথম বাংলাদেশি ব্যান্ড হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় পারফর্ম করি। এরপর এ নিয়ে অন্তত পঞ্চমবারের মতো সিডনিতে এলাম। এখানকার দর্শকদের ভালোবাসা সব সময়ই অবিশ্বাস্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতাম এটি স্মরণীয় একটি আয়োজন হতে যাচ্ছে। আমরা চেয়েছি সবাই একসঙ্গে গাইবে, চিৎকার করবে—ভক্তরা সেটাই করেছেন।’ গিটারিস্ট তুজো যোগ করেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি শহরে ট্যুর করছি, কিন্তু সিডনির আবহ একেবারেই আলাদা। দর্শকেরা আমাদের রাতটিকে স্মরণীয় করে দিয়েছেন।’
মঞ্চে আর্টসেল