Prothomalo:
2025-05-01@16:16:10 GMT

নবীজির (সা.) অদ্ভুত দোয়া

Published: 1st, May 2025 GMT

নবীজি (সা.) একদিন বিশেষ এক দোয়া করলেন, হে আল্লাহ, ওমর বিন খত্তাব অথবা আবু জাহাল বিন হিশামের মধ্য থেকে যাকে তোমার পছন্দ হয়, তার মাধ্যমে তুমি ইসলামকে শক্তিশালী করো।

দোয়াটা নবীজি (সা.) করেছিলেন নবুওয়াতের ষষ্ঠ বছরে। ছয় বছর ধরে তিনি কঠোর পরিশ্রম করছেন। কালেমার দাওয়াত নিয়ে ঘুরছেন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি ইসলামের। প্রকাশ্যে নামাজ কিংবা কোরাআন তেলাওয়াতের মতো অনুকূল পরিবেশও এখনো আসেনি মুসলমানদের। উল্টো বেড়েছে নির্যাতন, শারীরিক এবং মানসিক। বেলাল (রা.

)-এর গলায় রশি বেঁধে দুষ্ট ছেলেদের হাতে ছেড়ে দেয় তার মনিব উমাইয়া বিন খলফ। যেন ইসলাম গ্রহণের কারণে তিনি মানুষের কাতার থেকে পশুর কাতারে নেমে গেছেন। মরু-দুপুরের প্রখর রোদে বালুর ভেতর চিৎ করে শুইয়ে তার বুকের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয় ভারী পাথর। মক্কার প্রভাবশালী ধনী ব্যবসায়ী ওসমান (রা.) ইসলাম গ্রহণের অপরাধে তাকেও সইতে হচ্ছে চাচার অত্যাচার। ইতোমধ্যে ঘটে গেছে ইসলামের ইতিহাসের প্রথম রক্তপাতের ঘটনা। আবু জাহাল লজ্জাস্থানে বর্শা গেঁথে শহিদ করে দিয়েছে সুমাইয়াকে। ইসলামের প্রথম শাহাদাতের গৌরব অর্জন করেছেন একজন নারী। আর তার স্বামী ইয়াসির, তাকেও শহিদ করা হয়েছে অত্যন্ত নির্মমভাবে। সেই বিবরণ দিতে গিয়ে থমকে যায় ইতিহাসের কলম। জল আসে পাষাণের চোখেও। ইয়াসির রাদিয়াল্লাহু আনহুর দু পায়ে দুটো রশি বেঁধে রশির অপর দুই প্রান্ত বাঁধা হয়েছিল বিপরীতমুখী দুটো উটের সাথে। তারপর ছুটিয়ে দেয়া হয়েছিল সেই উট জোড়া। ইয়াসির আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে গেছেন দ্বিখণ্ডিত শরীর নিয়ে। আর এই শহিদ দম্পতির ছেলে আম্মার, আবু জাহালরা তাকেও শুইয়ে রাখে মরুভূমির তপ্ত বালু আর কংকরের ভেতর, চাপ দিতে থাকে মুহাম্মদের ধর্ম ত্যাগ করার জন্য। আহা! তাদের সেই রক্তের ওপরই নির্মিত হয়েছে আজকের ইসলামের সুরম্য প্রাসাদ।

আরও পড়ুনউত্তম ব্যবহার হৃদয়ের জান্নাত১৮ এপ্রিল ২০২৫

শাগরেদদের এই দুরবস্থার বেদনা সইতে না পেরে নবীজি (সা.)  একদিন ব্যথিত হৃদয়ে উপরের দোয়াটা করলেন। এর কদিন পরই রাদিয়াল্লাহু আনহুতে পরিণত হলেন ইসলামের চরম শত্রু ওমর। ওমর এবং আবু জাহাল তৎকালীন মক্কার প্রবল ক্ষমতাধর, সাহসী দুই ব্যক্তি ছিলেন সন্দেহ নেই। তাই বলে তারা অপ্রতিদ্বন্দ্বীও ছিলেন না। মক্কায় তাদের মতো দুঃসাহস ও প্রতিপত্তি আরও অনেকের মধ্যেই ছিল। তবু সবাইকে রেখে এই দুজনের একজনের কবুলিয়াতের দোয়া করাটা নবিজির বিচক্ষণতার সাক্ষর বহন করে। নবীজি (সা.)  দোয়া ওমরের জন্য কবুল হয়েছিল আর তারপরই ইসলাম মক্কায় কোমর সোজা করে দাঁড়ায়। প্রকাশ্যে নামাজ এবং তাওয়াফ শুরু হয়। সাহাবিরা চিৎকার করে মক্কার অলিতে গলিতে কালিমার ধ্বনি ছড়িয়ে দেয়।

ওমর। আহা ওমর। যার নাম বাদ দিয়ে ইসলামের ইতিহাস কল্পনা করা যায় না। যার খেলাফত কাল আমাদের সোনালি অতীত। যার বীরত্ব, সাহসিকতা আর বিজয়ের গল্প আমাদের গৌরবগাথা। খেজুর পাতার প্রাসাদে বসে অর্ধজাহান শাসন করার কৃতিত্ব একমাত্র তারই। এখনো সাম্যের পৃথিবী গড়ার স্বপ্ন দেখা একজন তরুণের সামনে সবচেয়ে উজ্জ্বল উদাহরণ ওমরের শাসনকাল। ওমর (রা.) না থাকলে হয়তো ইসলামের ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতো। তাঁর আকাঙ্খার দাম দিতে গিয়ে প্রবর্তিত হয়েছে শরিয়তের অনেক বিধান। ইসলামের অনেক সিদ্ধান্তে তাঁর আর আল্লাহর মতামত মিলে গেছে এক মোহনায়। তাঁর ব্যাপারেই নবীজি (সা.) বলেছেন, যদি আমার পরে কেউ নবী হতো, সে হতো ওমর।

ওমরের (রা.) মাধ্যমে ইসলামের বিজয় ডংকার এই যে বেজে ওঠা দিকে দিকে, তার বীজ কি বপিত ছিল নবীজির (সা.) ওই দোয়ার ভেতরে, ইসলামের শৈশবকালে? আর সবাইকে রেখে নবীজি (সা.)  ঠিক কেন ওমরের জন্যই ব্যাকুল হয়েছিলেন সেদিন? তার দূরদর্শী চোখ কি তবে ওমরের কাফের চোখে জ্বলতে দেখেছিল ইসলামের প্রত্যুজ্জ্বল দীপশিখা?

সূত্র: প্রজ্ঞায় যার উজালা জগৎ

আরও পড়ুনপরিবেশ নিয়ে নবীজি(সা.) এর ১০ শিক্ষা১৯ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম র হয় ছ ল ওমর র

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে

ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা।গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্যসচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দিুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
 
এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার দু’জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।  

ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগনি। দোলার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় ব্যবসায়ী।

সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
 
এ বিষয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজে এর একটা ব্যাখ্যা রাজপথের সহযোদ্ধাদের দিয়ে রাখতে চাই। আমি ১০ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য সকল আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যতম মামলা তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং আমি ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’ 

আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’ 

সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অর্থ আত্মসাত: খুলনায় নারী ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
  • বগুড়ায় সারজিসের উপস্থিতিতে মারামারির ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ৪ নেতা হাসপাতালে
  • অমিতাভের চিরকুট কিংবা ফ্যাশন নিয়ে রাধিকার ১০ প্রশ্নের জবাব, ১০ ছবি
  • মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস
  • একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
  • বড় বন্দরে ভারী কাজ করেও চলে না সংসার 
  • নাটোরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল একজনের
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতির মেয়ে
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে