নবীজি (সা.) একদিন বিশেষ এক দোয়া করলেন, হে আল্লাহ, ওমর বিন খত্তাব অথবা আবু জাহাল বিন হিশামের মধ্য থেকে যাকে তোমার পছন্দ হয়, তার মাধ্যমে তুমি ইসলামকে শক্তিশালী করো।
দোয়াটা নবীজি (সা.) করেছিলেন নবুওয়াতের ষষ্ঠ বছরে। ছয় বছর ধরে তিনি কঠোর পরিশ্রম করছেন। কালেমার দাওয়াত নিয়ে ঘুরছেন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি ইসলামের। প্রকাশ্যে নামাজ কিংবা কোরাআন তেলাওয়াতের মতো অনুকূল পরিবেশও এখনো আসেনি মুসলমানদের। উল্টো বেড়েছে নির্যাতন, শারীরিক এবং মানসিক। বেলাল (রা.
শাগরেদদের এই দুরবস্থার বেদনা সইতে না পেরে নবীজি (সা.) একদিন ব্যথিত হৃদয়ে উপরের দোয়াটা করলেন। এর কদিন পরই রাদিয়াল্লাহু আনহুতে পরিণত হলেন ইসলামের চরম শত্রু ওমর। ওমর এবং আবু জাহাল তৎকালীন মক্কার প্রবল ক্ষমতাধর, সাহসী দুই ব্যক্তি ছিলেন সন্দেহ নেই। তাই বলে তারা অপ্রতিদ্বন্দ্বীও ছিলেন না। মক্কায় তাদের মতো দুঃসাহস ও প্রতিপত্তি আরও অনেকের মধ্যেই ছিল। তবু সবাইকে রেখে এই দুজনের একজনের কবুলিয়াতের দোয়া করাটা নবিজির বিচক্ষণতার সাক্ষর বহন করে। নবীজি (সা.) দোয়া ওমরের জন্য কবুল হয়েছিল আর তারপরই ইসলাম মক্কায় কোমর সোজা করে দাঁড়ায়। প্রকাশ্যে নামাজ এবং তাওয়াফ শুরু হয়। সাহাবিরা চিৎকার করে মক্কার অলিতে গলিতে কালিমার ধ্বনি ছড়িয়ে দেয়।
ওমর। আহা ওমর। যার নাম বাদ দিয়ে ইসলামের ইতিহাস কল্পনা করা যায় না। যার খেলাফত কাল আমাদের সোনালি অতীত। যার বীরত্ব, সাহসিকতা আর বিজয়ের গল্প আমাদের গৌরবগাথা। খেজুর পাতার প্রাসাদে বসে অর্ধজাহান শাসন করার কৃতিত্ব একমাত্র তারই। এখনো সাম্যের পৃথিবী গড়ার স্বপ্ন দেখা একজন তরুণের সামনে সবচেয়ে উজ্জ্বল উদাহরণ ওমরের শাসনকাল। ওমর (রা.) না থাকলে হয়তো ইসলামের ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতো। তাঁর আকাঙ্খার দাম দিতে গিয়ে প্রবর্তিত হয়েছে শরিয়তের অনেক বিধান। ইসলামের অনেক সিদ্ধান্তে তাঁর আর আল্লাহর মতামত মিলে গেছে এক মোহনায়। তাঁর ব্যাপারেই নবীজি (সা.) বলেছেন, যদি আমার পরে কেউ নবী হতো, সে হতো ওমর।
ওমরের (রা.) মাধ্যমে ইসলামের বিজয় ডংকার এই যে বেজে ওঠা দিকে দিকে, তার বীজ কি বপিত ছিল নবীজির (সা.) ওই দোয়ার ভেতরে, ইসলামের শৈশবকালে? আর সবাইকে রেখে নবীজি (সা.) ঠিক কেন ওমরের জন্যই ব্যাকুল হয়েছিলেন সেদিন? তার দূরদর্শী চোখ কি তবে ওমরের কাফের চোখে জ্বলতে দেখেছিল ইসলামের প্রত্যুজ্জ্বল দীপশিখা?
সূত্র: প্রজ্ঞায় যার উজালা জগৎ
আরও পড়ুনপরিবেশ নিয়ে নবীজি(সা.) এর ১০ শিক্ষা১৯ এপ্রিল ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম র হয় ছ ল ওমর র
এছাড়াও পড়ুন:
সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
রাস্টফ ব্যান্ডের ভোকাল আহরার মাসুদ মারা গেছেন। সেমাবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ভক্তদের কাছে দীপ নামে পরিচিত ছিলেন আহরার মাসুদ।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়। তবে এ শিল্পীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
আরো পড়ুন:
৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে
সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা
রাস্টফ ব্যান্ডের ফেসবুক পেজে দীপের মৃত্যুর খবর জানিয়ে লেখা হয়, “এমন এক বেদনাদায়ক মুহূর্তে সঠিক শব্দ খুঁজে পাওয়া বা কোনো শব্দ খুঁজে পাওয়া—প্রায় অসম্ভব। প্রিয় ভোকালিস্ট, বন্ধু ও সহযাত্রী আহারার ‘দীপ’ মাসুদের মৃত্যুসংবাদ আমাদের স্তম্ভিত করেছে। আমরা শোকে ভেঙে পড়েছি, এখনো অবিশ্বাসের ভেতর ডুবে আছি। গত রাতেই তিনি আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন।”
দীপের শূন্যতা ব্যাখ্যা করে লেখা হয়, “তার পরিবার, বন্ধু ও প্রিয়জনদের প্রতি আমাদের অন্তরের সমবেদনা ও প্রার্থনা। আপনাদের মতো আমরাও এই অপূরণীয় ক্ষতি বোঝার চেষ্টা করছি, চেষ্টা করছি দীপের অসাধারণ প্রতিভাকে সম্মান জানাতে এবং তার চেয়েও বড় কথা—মানুষ হিসেবে তিনি আমাদের কাছে যে অমূল্য ছিলেন, তাকে স্মরণ করতে। এই কঠিন সময়ে সবার কাছে অনুরোধ, দয়া করে পরিবার ও কাছের মানুষদের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করুন এবং তার আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করুন। শান্তিতে ঘুমাও, দীপ। তোমার শূন্যতা চিরকাল বেদনাময় হয়ে থাকবে।”
তরুণদের কাছে জনপ্রিয় আরেকটি ব্যান্ড পাওয়ারসার্চও দীপের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, “স্মরণ করছি আহরার মাসুদ দীপকে। কিছুক্ষণ আগে আমরা হারিয়েছি আমাদের প্রিয় ভাই, ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং এক সত্যিকারের শিল্পীকে। এক্লিপস, কার্ল, ক্যালিপসো ও সবশেষ রাস্টফ ব্যান্ডের অবিস্মরণীয় কণ্ঠ আহরার মাসুদ দীপ আমাদের মাঝে আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।”
পাওয়ারসার্চ আরো লেখেন, “আহরার মাসুদ দীপ শুধু একজন ভোকালিস্টই ছিলেন না, তিনি ছিলেন শক্তি, সৃজনশীলতা আর আবেগের প্রতীক, যিনি তার চারপাশের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছেন; একই সাথে তার অত্যন্ত নমনীয় ব্যবহার, যা সবাইকে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীই করে ফেলত! শান্তিতে থাকো ভাই, তুমি সব সময় আমাদের গল্পের অংশ হয়ে থাকবে।”
ঢাকা/শান্ত