দেশে ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি: জাসদের শ্রমিক জোট
Published: 1st, May 2025 GMT
দেশে রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) শ্রমিক সংগঠন জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ।
সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তনের পর বিভিন্ন শিল্প এলাকায় বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও ন্যায্য মজুরির দাবিতে শ্রমিকদের ন্যায়সংগত আন্দোলনে গুলি চালিয়ে ও লাঠিপেটা করে শ্রমিকদের মারা হয়েছে। শ্রমিক আন্দোলন ও ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে বন্ধ করা হয়েছে।
মহান মে দিবসে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে জিপিওর সামনে লাল পতাকা সমাবেশ করে জাসদের শ্রমিক জোট। সেখানে সংগঠনটির নেতারা নানা অভিযোগ করেন।
শ্রমিক জোটের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুজ্জামান বাদশার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েলের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সহসভাপতি আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরদার খোরশেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক কনক বর্মন, গার্মেন্টস শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম, মিরপুর আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি জেসমিন শিলা ও সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন, গৃহকর্মী শ্রমিক জোটের সভাপতি জেসমিন জুঁই প্রমুখ বক্তব্য দেন। এতে সংহতি জানিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জাসদের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মোল্লা, যুব জোটের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন খান, জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিদুল হক ননী প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশে রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মজীবী–শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বরং রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তনের পর বিভিন্ন শিল্প এলাকায় বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও ন্যায্য মজুরির দাবিতে শ্রমিকদের ন্যায়সংগত আন্দোলনে গুলি চালিয়ে ও লাঠিপেটা করে শ্রমিকদের মারা হয়েছে। শ্রমিক আন্দোলন ও ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে বন্ধ করা হয়েছে।
বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও ন্যায্য মজুরির দাবি তুললেই কলকারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। তাঁরা বলেন, রাজনৈতিক হিংসা-প্রতিহিংসার কারণেও শত শত কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। হাজার হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। শ্রমিকদের চাকরি ও কাজের নিশ্চয়তা স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে কমে গেছে। শ্রমিক-কর্মচারী-শ্রমজীবী-মেহনতি মানুষের ন্যায্য দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।
ন্যূনতম জাতীয় মজুরি ঘোষণা ও বাস্তবায়ন, সব ক্ষেত্রে ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করা, শ্রমিক-কর্মচারীদের চাকরি ও কাজের নিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তার দাবিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানানো হয় এই সমাবেশ থেকে।
সমাবেশ শেষে লাল পতাকা মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, গুলিস্তান, পল্টন, তোপখানা রোড ও প্রেসক্লাব এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ কর্মসূচিতে ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের শিল্পাঞ্চল থেকে গার্মেন্ট শ্রমিক জোট বাংলাদেশ, জাতীয় পোশাক শিল্প শ্রমিক জোট, জাতীয় পুস্তক বাঁধাই শ্রমিক জোট, পরিবহন হকার্স জোট, জাতীয় নির্মাণ শ্রমিক জোট, মৎস্যজীবী শ্রমিক জোটসহ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে বিপুলসংখ্যক শ্রমিক–কর্মচারী লাল পতাকা, জাতীয় পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে যোগ দেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠনে কার্যকর পদক্ষেপসহ ৫ সুপারিশ
‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’ দ্রুত জারি করে ‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ ৫ দফা সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব প্রদানের আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন সংগঠনটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মনির হোসেন।
আরো পড়ুন:
ফেব্রুয়ারিতেই মহোৎসবে জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা
বেড়ায় রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল, সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ঘোষণা
অ্যাসোসিয়েশনের সুপারিশগুলো হলো
১. নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী দ্রুততম সময়ে ‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’ জারি করে ‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনা।
২. প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম অনুমোদন, নতুন পদসৃজন, আপগ্রেডেশন এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সরবরাহ নিশ্চিতকরণ।
৩. জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩ বাতিল করে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের কাছে হস্তান্তর।
৪. আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর নির্বাচন ভবনে সব কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে ‘নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন।
৫. নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫ আয়োজনে প্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন কমিটি গঠন।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশন আরো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ