চেন্নাই সুপার কিংসের মাঠ এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে পাঞ্জাব কিংস কাল ১৯১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছে। এ জয়ে প্রীতি জিনতার দল পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুইয়ে উঠে এসেছে। ১১ বছর পর আইপিএল প্লে–অফে খেলা প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে; বিপরীতে মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসকে প্লে–অফের দৌড় থেকে ছিটকে দিয়েছে। ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে পাঞ্জাব অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারের হাতে।
এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু আজ এক দুঃসংবাদ দিয়ে পাঞ্জাবের দিন শুরু হলো। অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারকে যে ১২ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে! আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। আইয়ারকে জরিমানা করার কারণ মন্থর ওভার রেট, যেটিকে এখন আচরণবিধি লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হয়।
কাল চেন্নাইয়ের বিপক্ষে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওভার শেষ করতে ব্যর্থ হয়েছেন পাঞ্জাবের বোলাররা। নিয়ম অনুযায়ী, পাঞ্জাবকে মাঠেই একবার শাস্তি দিয়েছেন দুই আম্পায়ার অক্ষয় টোটরে ও অনীশ সহস্রবুধে। চেন্নাইয়ের ইনিংসের শেষ ওভারে মাত্র চারজন ফিল্ডার ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে রাখতে পারে তারা।
তা–ও ভালো, শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলেই চেন্নাই অলআউট হয়ে গেছে। নয়তো আরও চার বল করতে আরও বেশি সময় লাগত। সে ক্ষেত্রে আইয়ারের শাস্তির মাত্রা বাড়তে পারত।
রান তাড়ায় ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৪১ বলে ৭২ রান করেন আইয়ার। যখন আউট হয়ে যান, পাঞ্জাব তখন জয় থেকে নিশ্বাস দূরত্বে। দলের জয়ে বড় অবদান রাখায় ম্যাচসেরার পুরস্কারটা আইয়ারের হাতেই উঠেছে। সঙ্গে পেয়েছেন ১ লাখ রুপি। এ ছাড়া ম্যাচ হিসেবে ৭ লাখ ৫০ ওভার রুপি তো পেয়েছেনই। কিন্তু মন্থর ওভার রেটের কারণে জরিমানা দিতে হলো ১২ লাখ রুপি। এর মানে, এই ম্যাচ খেলে আইয়ারের লোকসান ৩ লাখ ৫০ হাজার রুপি!
বিবৃতিতে বিসিসিআই জানিয়েছে, ‘চেন্নাইয়ে বুধবার আইপিএলের ৪৯তম ম্যাচে মন্থর ওভার রেটের কারণে পাঞ্জাব কিংসের অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারকে জরিমানা করা হয়েছে। আইপিএল আচরণবিধির ২.
আইপিএলে ২০২৪ মৌসুম পর্যন্ত মন্থর ওভার রেটের কারণে অধিনায়ককে নিষিদ্ধ করা হতো। মুম্বাই ইন্ডিয়ানস অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া যেমন গত মৌসুমে পাওয়া এক ম্যাচ নিষিদ্ধের শাস্তি কাটিয়েছেন এই মৌসুমে। তবে ২০২৫ আইপিএলের আগে নিয়মে পরিবর্তন আনা হয়েছে। মন্থর ওভার রেটের কারণে অধিনায়ককে আর নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না। তবে শাস্তি হিসেবে অর্থদণ্ডের পাশাপাশি ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ করা হচ্ছে। আইয়ারকে অবশ্য ডিমেরিটস পয়েন্ট দেওয়া হয়নি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুর তফসিল সোমবার
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রথম কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে।
রবিবার (২ নভেম্বর) চূড়ান্ত করা হবে নির্বাচনি আচরণবিধি এবং আগামীকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) ঘোষণা করা হবে নির্বাচনের তফসিল।
জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, “২৭ নভেম্বর নয়, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে জকসু নির্বাচন হবে। সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে ডিসেম্বরের ৮, ৯ বা ১০ তারিখ যাচাই করে দেখা হচ্ছে। যেহেতু ১৩ ডিসেম্বর ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে এবং ১১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ কর্মদিবস—সেক্ষেত্রে ১০ ডিসেম্বর বুধবার নির্বাচনের সম্ভাবনা বেশি।”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এবারই প্রথম জকসু নির্বাচন। তাই প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগছে। অনেক ছাত্র সংগঠনও ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়, যাতে তারা প্রচারণা চালাতে পারে। তবে আমরা চাই, যত দ্রুত সম্ভব একটি উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজন করতে।”
অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, “ভোটার তালিকা, প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা, ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া—এসব খসড়া তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচনি আচরণবিধিও প্রস্তুত করা হয়েছে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল অনুসরণ করে।”
আজ সব কার্যকর ছাত্র সংগঠন, সাংবাদিক প্রতিনিধি ও নির্বাচনের অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করে আচরণবিধি চূড়ান্ত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “কেউ যেন দ্বিমত না করে, সেটিই আমাদের লক্ষ্য। আচরণবিধি চূড়ান্ত হলেই সোমবার বা মঙ্গলবার তফসিল ঘোষণা করব।”
ছাত্রদলের সম্পাদকীয় ও সদস্য পদ বৃদ্ধির দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “জকসুর সংবিধি পাস হয়ে গেছে। এখন এটি সংশোধন করতে হলে একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট, ইউজিসি, মন্ত্রণালয় এবং রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লাগবে—এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। তাই নতুন করে সংযোজনের সুযোগ নেই।”
তিনি আরো বলেন, “আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, সেটা স্বীকার করছি। তবে আমরা চাই, সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে। অন্যান্য ক্যাম্পাসের তুলনায় জবির ছাত্র সংগঠনগুলো অনেক ঐক্যবদ্ধ। তাদের সহযোগিতা পেলে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই হবে জকসু নির্বাচন।”
অধ্যাপক মোস্তফা হাসান আশা প্রকাশ করে বলেন, “২০ বছর পর প্রথম জকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আমরা চাই, জবির এই নির্বাচন সারা দেশে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকুক।”
ঢাকা/লিমন ইসলাম/ইভা