১৮ মাসের মধ্যে দক্ষ প্রকৌশলীর মতো কোড লিখতে পারবে এআই: মার্ক জাকারবার্গ
Published: 1st, May 2025 GMT
মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ বলেছেন, ১২ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে মেটার নিজস্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এললামা মডেলের বেশির ভাগ কোড দক্ষ প্রকৌশলীর মতো লিখে দেবে এআই। তাঁর দাবি, বর্তমানে এআই একজন গড় মানের ভালো সফটওয়্যার প্রকৌশলীর সমান দক্ষতায় কাজ করতে পারে। তবে খুব শিগগির কোড লেখার ক্ষেত্রে দক্ষ প্রকৌশলীদেরও ছাড়িয়ে যাবে এআই।
সম্প্রতি গবেষক দ্বারকেশ প্যাটেলের সঙ্গে এক পডকাস্ট আলোচনায় জাকারবার্গ বলেন, ‘আমার ধারণা, ১২ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে আমরা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছাব, যেখানে এললামা-সংক্রান্ত প্রকল্পগুলোর অধিকাংশ কোডই এআই দিয়ে লেখা হবে। আমি এখানে সাধারণ অটোকমপ্লিটের কথা বলছি না। এখনকার এআই ভালো মানের অটোকমপ্লিট দিতে পারে, অর্থাৎ আপনি কোড লেখা শুরু করলে এটি বাকিটা সম্পূর্ণ করে দিতে পারে। কিন্তু আমি যে পর্যায়ের কথা বলছি, সেখানে আপনি একটি লক্ষ্য দিলে এআই নিজেই পরীক্ষা চালাবে, ত্রুটি শনাক্ত করবে এবং এমন মানের কোড লিখে দেবে, যা একজন ভালো প্রকৌশলীর চেয়েও উন্নত হবে।’
আরও পড়ুনকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে সফটওয়্যার প্রকৌশলীদের চাহিদা কি কমে যাবে০৩ এপ্রিল ২০২৫মেটা বর্তমানে একটি কোডিং এজেন্ট ও একটি গবেষণাভিত্তিক এআই এজেন্ট তৈরি করছে, যা বিশেষভাবে এললামা প্রকল্পের জন্য কাজ করবে। এ বিষয়ে জাকারবার্গ বলেন, ‘আমরা মেটার ভেতরে একাধিক কোডিং এজেন্ট তৈরির কাজ করছি। কারণ, আমরা কোনো সাধারণ এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান নই। এই প্রযুক্তি মূলত নিজেদের প্রয়োজনে তৈরি করা হচ্ছে। আমরা কোনো সাধারণ ডেভেলপার টুল বানাচ্ছি না, আমাদের লক্ষ্য হলো একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য পূরণে সক্ষম কোডিং এজেন্ট ও গবেষণা–সহায়ক এজেন্ট তৈরি করা, যা এললামা গবেষণায় সরাসরি ভূমিকা রাখবে। আমি মনে করি, ভবিষ্যতে এটি আমাদের কাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে।’
এর আগেও একাধিকবার এআই–নির্ভরতার ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছেন জাকারবার্গ। বছরের শুরুতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা এমন এক সময়ে পৌঁছাতে যাচ্ছি, যেখানে আমাদের অ্যাপগুলোর কোড, এমনকি সেখানে ব্যবহৃত এআইও লিখে দেবে এআই প্রকৌশলীরা।’ তাঁর ভাষ্য, বর্তমানে এআই যথেষ্ট উন্নত এবং তা একজন মধ্যম মানের সফটওয়্যার প্রকৌশলীর কাজের জায়গা নিতে সক্ষম।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ক রব র গ
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।