রাবি রেজিস্ট্রারের বাসভবনে ককটেল বিস্ফোরণ; শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 1st, May 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসভবনের সামনে মধ্যরাতে ককটেল বিস্ফোরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (১ মে) বেলা ১১টায় রাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়।
‘হামলাকারীর ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘স্যারের বাসায় হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ককটেলবাজির রাজনীতি, চলবে না চলবে না’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, সন্ত্রাসীদের বিচার চাই’- এমন সব স্লোগান এমন সব স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।
ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, “কোনো পক্ষকে আমরা দোষারোপ করবো না যতক্ষণ পর্যন্ত তদন্ত চলমান থাকবে। আমরা দেখতে চাই বিপ্লবের ৯ মাস পরে এই প্রশাসন কতটা অ্যাকটিভ হয়েছে।”
“আমাদের একটাই প্রশ্ন- সেটা হলো, ক্যাম্পাসের তিন জায়গায় ফাঁড়ি বসিয়েও ভেতরে কীভাবে ককটেল নিয়ে যায়? প্রশাসনের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে তারা কতটুকু কাজ করেছে,” বলেন সালাউদ্দিন আম্মার।
তিনি বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষ, একজন শিক্ষকের যদি কোনো নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা কোথায়? এখান থেকে বোঝা যাচ্ছে অপরাজনীতি শুরু হয়ে গেছে।”
“আমাদের ১২ ঘণ্টার যে আল্টিমেটাম, আমরা চাই এই সময়ের ভেতরে প্রশাসন এই ঘটনার তদন্ত করবে। এর বিচার করতে হবে এবং অন্যান্য ইস্যুর মতো এই ইস্যুটা যেন ধামাচাপা পড়ে না যায়।”
সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, “গতকাল (৩০ এপ্রিল) রাতে যে ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। প্রশাসনের মধ্যে থেকে আমাদের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার যিনি আমাদের সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অংশ নিয়েছেন, আমরা জানি যে রুয়া নির্বাচনে মাসউদ স্যার পদপ্রার্থী এবং রুয়া, রাকসু নিয়ে যখন আমরা জোর দাবি জানিয়ে আসছি তখনই এমন একটা হামলার ঘটনা ঘটতে দেখা গেল।”
তিনি আরো বলেন, “এই ঘটনার পেছনে যারা আছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্যই মূলত আমাদের আজ এখানে সমাবেশে আসা। আমরা কিছু দিন আগে দেখেছি, কুয়েটে যে ঘটনা ঘটেছে, সে রকম কোনো ঘটনা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন না ঘটে, আমরা এই বিষয়ে সদা তৎপর আছি এবং যেকোনো ধরনের আধিপত্যবাদের রাজনীতি আমরা মোকাবিলা করে যাব।”
বুধবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকায় রেজিস্ট্রারের বাড়ির দরজার সামনে পাঁচ-ছয়টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ঢাকা/ফাহিম/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র ককট ল
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের জেরে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বাসভবনে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।
মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ পৌর পার্ক, লঞ্চঘাট, কাঁচাবাজার এলাকাসহ সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে যান চলাচল ব্যাহত করা হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করা হয়। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ও এনসিপির পথসভা নস্যাৎ করতে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করতে জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১৪টি মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। ১৪টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জুলাই থেকে গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। পরে ২০ জুলাই রাত আটটায় কারফিউ ও ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।