‘চাওয়ালা বাবা’, ‘আআইটি বাবা’, ‘মাসকিউলার বাবা’-র পর ভারতের প্রয়াগরাজের পূর্ণকুম্ভে নজর কাড়ছেন আরো এক ‘বাবা’। তাকে নিয়েও চর্চা আর কৌতূহল তুঙ্গে পুণ্যার্থীদের মধ্যে। তিনি হলেন ‘কবুতর বাবা’!
তিনি মহন্ত রাজপুরীজি মহারাজ। তার মাথার উপরে সবসময় একটি সাদা রঙের পায়রা বসে রয়েছে। মাথার জটাতেই ‘বাসা বেঁধেছে’ ওই পায়রা। গত ৯ বছর ধরে এভাবেই রাজপুরীজি মহারাজের মাথায় রয়েছে পায়রাটি। এমনই দাবি খোদ মহন্তের। আর সে কারণেই তিনি ‘কবুতর বাবা’ নামেই পূর্ণকুম্ভে পরিচিত হয়ে উঠেছেন।
‘কবুতর বাবা’ জানিয়েছেন, তার পায়রার নাম হরিপুরী।
তার কথায়, “আট-ন’বছর ধরে এই পায়রাই আমার সব সময়ের সঙ্গী।”
সবসময় ‘বাবার’ মাথাতেই বসে থাকতে দেখা যায় পায়রাটিকে। দেখে মনে হবে যেন, মাথাতেই বাসা বেঁধেছে ওই পায়রা। ‘বাবা’র মতে, পায়রা প্রেম আর সদ্ভাবের প্রতীক।
কুম্ভ শুরু হতেই বেশ কয়েক জন ‘বাবা’কে ঘিরে কৌতূহল আর উন্মাদনা তুঙ্গে উঠেছে ভারতে। তার মধ্যে রয়েছেন ‘চাওয়ালা বাবা’। তিনি অবশ্য চা বিক্রি করেন না। তবে চা-ই তার পেট ভরানোর একমাত্র রসদ। আর সে কারণেই তিনি ‘চাওয়ালা বাবা’ নামে পরিচিত। তার যে বিষয়টি বেশি নজর কাড়ছে তা হল, মেলা চত্বরে বসেই তিনি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার্থীদের বিনামূল্যে অনলাইনে শিক্ষাদান করছেন।
আরো এক জন হলেন ‘আইআইটি বাবা’। কারণ তিনি পড়াশোনা করেছেন দেশের নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি) থেকে। তার পরে বেছে নিয়েছেন আধ্যাত্মিকতার পথ। এছাড়া রাশিয়া থেকে এসেছেন ৭ ফুট উচ্চতার পেশিবহুল ‘মাসকিউলার বাবা’।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শততম টেস্টের মঞ্চে মুশফিকুরকে সম্মানজনক সংবর্ধনা
২৬০৭ তম টেস্ট চলছে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশের ১৫৬তম। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের বয়স ২৫ পেরিয়েছে। লম্বা পথ পেরোনোর পর বাংলাদেশ পেল টেস্ট ক্রিকেটের একশতম খেলোয়াড়। মুশফিকুর রহিম প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে পেলেন হানড্রেড টেস্ট খেলার সুযোগ। যে সুযোগটি তিনি পেয়েছেন অজস্র পরিশ্রম, নিবেদন, তাড়না দেখিয়ে। ২২ গজে পরিশ্রমের ফুল ফুটিয়ে, সততা ও নিষ্ঠার আলো ছড়িয়ে নিজেকে পাহাড়শৃঙ্গের শেপরা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
তার মাইলফলক ছোঁয়া দিনটি রাঙিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সম্মানজনক সংবর্ধনায় তাকে দিয়েছে বিরাট সম্মান। বিরাট এই দিনে মুশফিকুর পাশে পেয়েছেন তার বাবা-মা, স্ত্রী ও সন্তানদের। ছুটে এসেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। এছাড়া বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, তার প্রথম টেস্ট অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন, ২০০৫ সালে প্রথম টেস্টের সতীর্থরা ছিলেন মাঠে।
আরো পড়ুন:
মুশফিকুরের ‘সেঞ্চুরির’ রঙে রাঙানো ক্যানভাস
মুশফিকুরের শততম টেস্ট: যেসব আয়োজন রেখেছে বিসিবি
শুরুতে তাকে বিশেষ টেস্ট ক্যাপ তুলে দেন হাবিবুল বাশার। যিনি ২০০৫ সালে লর্ডসে মুশফিকের হাতে প্রথম টেস্ট ক্যাপ তুলে দিয়েছিলেন। এরপর ক্যাপের বিশেষ কেসকেট প্রদান করেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ক্রিকেটার আকরাম খান। এরপর বিশেষ ক্রেস্ট তুলে দেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান ও বর্তমান বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সঙ্গে ছিলেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
এরপর হাবিবুল বাশার এবং বর্তমান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর অটোগ্রাফ দেওয়া জার্সি পেয়েছেন মুশফিকুর। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে নাজমুল বলেছেন, ‘‘আপনার মতো খেলতে চেয়েছি, ছোটবেলা থেকে আপনার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছি। আশা করি আপনি এভাবেই খেলে যাবেন। যেভাবে আপনি মাঠে ও মাঠের বাইরে সবসময় পরিশ্রম করেন। সবাই আপনার পরিশ্রম ও পাগলামির কথা বলে। কিন্তু আপনি সবসময় দলের জন্য খেলেন, দলের কথা ভাবেন- নিজের ক্রিকেট খেলেন না। এটা আমাদের জন্য সবসময় অনুপ্রাণার, বিশেষত যাঁরা তরুণ ক্রিকেটার টেস্ট খেলতে চায়, তাঁদের জন্য। আমাদের সঙ্গে খেলায় আপনাকে ধন্যবাদ, আমি আশা করি আপনি খেলা চালিয়ে যাবেন।’’
মুশফিকুর নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়েছিলেন মেয়েকে কোলে নিয়ে। মুখে চওড়া হাসি, বুক ভরা গর্ব নিয়ে মুশফিকুর বলেছেন, ‘‘আল্লাহকে ধন্যবাদ এমন দারুণ একটা সুযোগের জন্য। যাঁরা উপস্থিত আছেন আপনাদের সবাইকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমার পরিবারের সব সদস্য, বাবা–মাকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। বিশেষত আমার স্ত্রীকে, যে অনেক নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। আমার সতীর্থ, কোচ, বন্ধু ও সব ভক্তদেরও ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানাই। আমিও বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একশ ভাগ দেব, যেমনটা সবসময় চেষ্টা করি। আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দলকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই এখানে আসার জন্য।’’
এরপর ফটোসেশনে অংশ নেন সবাই। ২০০৫ সালে লর্ডস টেস্টে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে থাকা হাবিবুল, আনোয়ার হোসেন মনির, মোহাম্মদ রফিক, নাফিস ইকবাল, মোহাম্মদ আশরাফুল, খালেদ মাসুদ উপস্থিত ছিলেন মুশফিকুরের ঐতিহাসিক মঞ্চে। গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে থাকা সমর্থকদের সঙ্গেও ছবি তোলেন। মুশফিকুরের এই মুহুর্তটা গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে থেকে উপভোগ করেন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের ক্রিকেটাররা।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল