মুশফিকুরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পন্টিং বললেন, ‘অবিশ্বাস্য অর্জন’
Published: 19th, November 2025 GMT
প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে মুশফিকুর রহিম আজ বুধবার (১৯ নভেম্বর) শততম টেস্ট ম্যাচে মাঠে নেমেছেন। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের একশতম টেস্ট খেলছেন মুশফিকুর। ম্যাচ সংখ্যার তিন অঙ্কের ছোঁয়ায় মুশফিকুরকে অভিনন্দন জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান রিকি পন্টিং।
আইসিসির দেওয়া ভিডিও বার্তায় মুশফিকুরকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘‘এটি একটি অবিশ্বাস্য অর্জন। মুশফিকুর এটি করা প্রথম বাংলাদেশি হয়েছেন।’’
আরো পড়ুন:
শততম টেস্টের মঞ্চে মুশফিকুরকে সম্মানজনক সংবর্ধনা
মুশফিকুরের ‘সেঞ্চুরির’ রঙে রাঙানো ক্যানভাস
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৬৮ টেস্টে ১৩ হাজার ৩৭৮ রান করেছেন পন্টিং। ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তার ক্যারিয়ার। পন্টিংয়ের মতোই ক্যারিয়ার মুশফিকুরের, ২০ বছরের। ক্যারিয়ার লম্বা হওয়াতে মুশফিকুরকে বড় ভাবে মূল্যায়ন করেছেন পন্টিং, ‘‘আমি সবসময়ই বলেছি, আমি একজন উচ্চমানের ক্রিকেটারকে তাদের লম্বা ক্যারিয়ার দিয়ে বিচার করি। সেরা খেলোয়াড়রা বছরের পর বছর ধরে বড় মঞ্চে পারফর্ম করে।’’
‘‘যখন আপনি ৭০, ৮০, ৯০টি টেস্ট খেলেন, তখন আপনি নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার এবং উন্নত করার, এমনকি আরও ভালো হওয়ার সুযোগ পান। এটা কখনোই সহজ নয়। এটা একটি অসাধারণ কৃতিত্ব। আমি মুশফিকুরকে তার ১০০তম টেস্টের জন্য অভিনন্দন জানাই এবং আশা করি সে তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ম্যাচটি খেলবে।’’
সেই পথেই আছেন তিনি। প্রথম দিন শেষে ৯৯ রানে অপরাজিত আছেন। পন্টিং একমাত্র ক্রিকেটার যিনি একশতম টেস্টে দুই ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। এছাড়া আরো নয় ক্রিকেটার নিজেদের শততম টেস্টে সেঞ্চুরি পেয়েছেন। এই ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে মুশফিকুর কী অমরত্বের স্বীকৃতি পেয়ে যাবেন?
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুশফিকুরের পর্দার আড়ালের পরিশ্রমের গল্প শোনালেন আয়ারল্যান্ডের কোচ
খেলার মাঠে মুশফিকুর রহিমের সবার আগে আসা, ঘাম ঝরানো পরিশ্রম, ব্যাট-বলের অনুশীলন শেষে সবার পরে যাওয়া এসব গল্প শোনা হয়েছে অনেক সময়। টিভির ক্যামেরায় কিংবা ফটো স্টোরিতে বারবার উঠে এসেছে তার অধ্যবসয়, শৃঙ্খলা, নিবেদন ও নিষ্ঠার ছবি।
ক্যামেরার আড়ালে তিনি করেন? কিভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করেন? কিভাবে নিজেকে গড়ে তোলেন? তার ধৈর্য, নিয়মানুবর্তিতা, সততা সবটাই গত দেড় সপ্তাহ খুব কাছ থেকে দেখেছেন আয়ারল্যান্ডের কোচ হাইনরিখ মালান।
আরো পড়ুন:
‘একশটা টেস্টই যেন শেষ না হয়’
মুশফিকুরের শততম টেস্ট নিয়ে আশরাফুলের উচ্ছ্বাস
২০০৫ সালের পুচকে মুশফিকুর কেন আজকের বড় তারকা হলেন, দেশের পোস্টারবয় হলেন তা মালান বুঝে গেছেন এই কয়েক দিনেই। অল্পদিনেই তার মনে দাগ কেটেছে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা তারকা।
তার মুখ থেকেই শুনুন মুশফিকুরের পর্দার আড়ালের পরিকশ্রমের গল্প, ‘‘আমি মনে করি তার পেশাদারিত্ব (শেখার মতো)। আমি ভোরে উঠি এবং প্রতিদিন সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে তাকে নাস্তা করতে দেখি। তারপর সে সবার আগে বাসে ওঠে যায়, মাঠে চলে যায় এবং অন্যরা মাঠে আসার আগেই গা গরম করে, স্ট্রেচিং করে ব্যাটিং অনুশীলন শুরু করে দেয়।”
‘‘আমার মনে হয়, যদি কেউ ধারাবাহিকভাবে পর্দার আড়ালে এমন পরিশ্রম করে যায় দিন-রাত, তখন জানা থাকে, সময়টা এলে পারফর্ম করার রসদ জমা আছে। সেটা দীর্ঘ সময় ধরে প্রমাণও করেছে।’’ – যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলার অপেক্ষায় মুশফিকুর। প্রতিপক্ষ দলের ক্রিকেটার মুশফিকুর। তবুও তাকে সম্মান দিতে একটুও কার্পণ্য করেননি মালান, ‘‘প্রথমত, দেশের জন্য ১০০টি টেস্ট ম্যাচ খেলা একটি বিশাল অর্জন। আমরা মাত্র ১০টি টেস্ট খেলেছি। স্থায়ীত্ব বলতে কী বোঝায়, কঠোর পরিশ্রম মানে কী, সেসব ফুটিয়ে তোলে এটি। এটির সঙ্গে চারশ-পাঁচশ প্রস্তুতি পর্বও যোগ করুন, এত বছর ধরে যা সে করেছে। আমাদের জন্য তাই ব্যাপারটি হলো উপলব্ধির যে, টেস্ট ক্রিকেট কতটা পরিশ্রমের। আশা করি, এই পাঁচ দিন তার খুব ভালো কাটবে না। তবে ১০০ টেস্ট খেলার জন্য তাকে অভিনন্দন।”
এই মাইলফলক, যা শুধু একটি সংখ্যা নয়, মুশফিকুরের ২০ বছরের সাধনার প্রতিচ্ছবিও। তবে মাঠে তাকে কঠিন সময় কাটাতে হবে সেই বার্তাও দিয়ে রাখলেন মালান, ‘‘আশা করি আগামী ৫ দিন তার জন্য খুব একটা ভালো যাবে না (হাসি)। তবে তাঁকে অভিনন্দন।’’
সিলেট টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে আয়ারল্যান্ড। ঢাকা টেস্টে নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে চায় আইরিশরা। মালানের কণ্ঠে আত্মবিশ্বাসী সুর, ‘‘আমরা এখানে (মিরপুর) প্রথম ম্যাচ খেলেছিলাম ২০২৩ সালে। কন্ডিশন কেমন হবে, সে সম্পর্কে আমাদের একটা ভালো ধারণা আছে। আশা করি, আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব এবং এমনভাবে লড়াই করতে পারব, যেন আমাদের অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে পারি।”
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল