রাঙামাটিতে ৩৬ ঘণ্টা হরতালের ডাক
Published: 19th, November 2025 GMT
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় কোটা বৈষম্য ও অনিয়মের প্রতিবাদে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ৩৬ ঘণ্টা হরতালের ডাক দিয়েছে তিনটি সংগঠন।
আজ বুধবার কোটাবিরোধী ঐক্যজোট, সাধারণ শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকবৃন্দের ব্যানারে এই হরতাল আহ্বান করা হয়। রাঙামাটি শহরের বনরূপার একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সংগঠন তিনটির নেতারা হরতালের ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ‘রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়োগে কোটা বৈষম্যের প্রতিবাদে দীর্ঘদিন ধরে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের সমাধান দেয়নি। বাধ্য হয়েই আমরা হরতালের কর্মসূচি দিয়েছি।’
হরতাল চলাকালীন জেলা শহরের সব সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যানবাহন ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে জরুরি সেবা যেমন হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস ও ওষুধের দোকান হরতালের আওতার বাইরে থাকবে বলে জানিয়েছে হরতাল আহ্বানকারীরা। এ সময় বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠনের নেতা রাকিব হাসান, শিক্ষার্থী ইব্রাহিম রুবেল, নুরুল আলম, রুবেল হোসেন, রেজাউল করিম ও ইমাম হোছাইন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হরত ল র
এছাড়াও পড়ুন:
জকসু নির্বাচন: ছেলে এজিএস প্রার্থী, নির্বাচনী দায়িত্বে বাবা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসে উত্তাপ ক্রমশই বাড়ছে। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন যেমন তাদের অবস্থান মজবুত করতে ব্যস্ত, তেমনি নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন।
সেই প্রশ্নের কেন্দ্রে এবার স্থান পেয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের জবি শাখার সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম মারুফ। তিনি বাম জোট থেকে জকসু নির্বাচনে মাওলানা ভাসানী ব্রিগেড প্যানেলে এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে, তার বাবা হল সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করছেন।
আরো পড়ুন:
জকসু নির্বাচন: কেন্দ্রীয় ও হল সংসদে ২৪৯ মনোনয়ন জমা, চলছে বাছাই
জকসু: জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ অনিকের সম্মানে পদ খালি রাখল ছাত্রশক্তি
এ বিষয়টি নিয়ে নির্বাচনী পরিবেশকে ঘিরে একটি গুরুতর প্রশ্নবিদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই।
জানা গেছে, মারুফের বাবা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সেকশন অফিসার। তিনি নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি হল সংসদ নির্বাচনী কার্যক্রমে যুক্ত।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, বাম সংগঠনগুলোর জোট হল সংসদ নির্বাচনেও প্যানেল দিয়েছে। যেখানে ছেলে প্যানেলভুক্ত হয়ে নির্বাচন করছে, সেখানে বাবা নির্বাচনী কার্যক্রমে যুক্ত থাকতে পারে কি? এটা সরাসরি স্বার্থসংঘাতের উদাহরণ। একজন কর্মকর্তা যখন নির্বাচনী দায়িত্বে থাকেন, তখন তার কোন অবস্থান, নির্দেশনা বা প্রশাসনিক পদক্ষেপ নির্বাচনী পরিবেশকে প্রভাবিত করতে পারে। ফলে একজন প্রার্থীর অভিভাবক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকায় নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেও এ বিষয়টি নিয়ে কিছুটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বণ্টন অনেক সময় সীমিত জনবল দিয়ে করতে হয়। তবে নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে বিষয়টি নিয়ে আরো ভাবা উচিত ছিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, একজন কর্মকর্তা যখন নির্বাচনী কাজে জড়িত থাকেন, তখন তার আত্মীয় নির্বাচনে অংশ নিলে স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ স্বাভাবিকভাবেই জন্ম নেয়। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে আনোয়ার হোসেনের নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অপসারণ করতে হবে।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, বিষয়টি আরো আগেই প্রশাসনের নজরে আসা উচিত ছিল। নির্বাচনী দায়িত্ব বণ্টনের আগে যদি বিষয়টি বিবেচনা করা হত, তাহলে এমন বিতর্ক সৃষ্টি হত না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনে নৈতিকতার মান বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এমন পরিস্থিতিতে আরো বেশি সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “এই ঘটনাটি পুরো নির্বাচনের স্বচ্ছতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তার ছেলে বামপন্থি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় নিরপেক্ষতা বজায় রাখা সম্ভব নয় বলে আমরা মনে করি। নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।”
শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আব্দুল আলিম আরিফ বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় ভূমিকা নিশ্চিত করা জরুরি। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে—এমন কোনো ছোটখাট বিষয়েও সুযোগ রাখা উচিত নয়। কমিশনের দায়িত্বে থাকা কারো আত্মীয় বা সন্তান নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিশেষ সুবিধা পেলে তা কোনো পক্ষই মেনে নেবে না। এটি সুস্পষ্টভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন এবং এর মাধ্যমে একটি দল সুবিধা পেতে পারে, এটি স্পষ্ট।”
তবে হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রিজাইডিং অফিসার আঞ্জুমান আরা বলেন, “সে শুধু নির্বাচনী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ভোটার তালিকা প্রণয়নের সঙ্গে ছিল। এর বাইরে কোনো ধরনের দায়িত্ব বা কার্যক্রম তার হাতে আর দেওয়া হবে না।”
সার্বিক বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, “বিষয়টি আমরা কমিশনের মিটিংয়ে উঠাব। লিখিত অভিযোগ পেলে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী