মাদারীপুরে যাত্রীবাহী একটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে একটি কাভার্ডভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দোকানের ভেতর ঢুকে গেছে। এতে দোকানদার নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে সদর উপজেলার সমাদ্দার ব্রিজ এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ইলিয়াস সরদার (৪০) নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের মন্নাত সরদারের ছেলে।

আরো পড়ুন:

অভয়নগরে ট্রলি উল্টে নিহত ১

চুয়াডাঙ্গায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে স্ত্রী নিহত

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কাভার্ডভ্যানটি বরিশালের দিকে যাচ্ছিল। সমাদ্দার ব্রিজের কাছে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী বাসকে সাইড দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে ইলিয়াসের দোকানের ভেতর ঢুকে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই দোকানদার ইলিয়াস মারা যান। আহত হয় তার মেয়ে লাবনী আক্তার ও শওকত সরদার নামে একজন ক্রেতা। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মতিয়ার রহমান বলেন, ‘‘নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ডভ্যান দোকানের ভেতর ঢুকে যাওয়ার ঘটনায় একজন নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।’’

ঢাকা/বেলাল/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন ন হত

এছাড়াও পড়ুন:

বামপন্থা, ইসলাম ও পালনবাদ: ভাসানীর রাজনৈতিক দর্শন

মাওলানা ভাসানী সম্পর্কে একটা কথা প্রচলিত আছে, তিনি একজন বিভ্রান্ত মানুষ। না হতে পারলেন মাওলানা, না রাজনীতিবিদ, না পারলেন সমাজতন্ত্র কায়েম করতে, না পারলেন ইসলামি সমাজতন্ত্র কায়েম করতে। কিন্তু মাওলানা কি আদৌ সমাজতন্ত্র বা ইসলামি সমাজতন্ত্র কায়েম করতে চেয়েছেন? তাঁর রাজনৈতিক দর্শনটা আসলে কী?

মাওলানার চীন সফর–পরবর্তী সংবর্ধনাকে ঘিরে একটি ঘটনা প্রচলিত আছে। সেদিনও ভাসানীর মাথায় ছিল তালপাতার টুপি, পরনে লুঙ্গি। তাঁর বেশভূষা দেখে শ্রোতাদের মধ্যে গুনগুন মন্তব্য, ‘ইয়ে তো মিসকিন হ্যায়!’ কোরআন তিলাওয়াত দিয়ে ভাসানী বক্তব্য শুরু করতেই সেই শ্রোতারা বলল, ‘ইয়ে তো মাওলানা হ্যায়!’

রাজনৈতিক বক্তব্য শুনে তারা এবার অবাক হয়ে পরস্পরের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল, ‘আরি বাহ্, ইয়ে তো পলিটিশিয়ান হ্যায়!’ যখন ভাসানী বিশ্ব মোড়লদের শোষণ–নিপীড়ন সম্পর্কে বলতে শুরু করলেন, তখন ওই একই দর্শকশ্রোতা বলে উঠল, ‘হায় আল্লাহ, ইয়ে তো এস্টেট মেন হ্যায়!’ কবি শামসুর রাহমানের ভাষায়:

‘দুর্গত এলাকা প্রত্যাগত বৃদ্ধ মৌলানা ভাসানী
কী বলেন। রৌদ্রালোকে দাঁড়ালেন তিনি, দৃঢ়, ঋজু,
যেন মহাপ্লাবনের পর নূহের গভীর মুখ
সহযাত্রীদের মাঝে ভেসে ওঠে, কাশফুল-দাড়ি
উত্তরে হাওয়ায় ওড়ে। বুক তার বিচর্ণিত দক্ষিণ বাংলার
শবাকীর্ণ হু হু উপকূল, চক্ষুদ্বয় সংহারের
দৃশ্যাবলীময়, শোনালেন কিছু কথা, যেন নেতা
নন, অলৌকিক স্টাফ রিপোর্টার।’

(সফেদ পাঞ্জাবী/শা.রা.)

মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তাঁর গঠিত ‘হুকুমতে রাব্বানিয়া সমিতির’র মাধ্যমে কি প্রচলিত ধারণার ইসলমি খেলাফত চেয়েছেন নাকি ইসলামি সমাজতন্ত্র চেয়েছেন? তাঁর রাজনৈতিক পরিভাষাগুলো আমাদের অনেক শিক্ষিত ইতিহাসবিদের কাছেও অবোধ্য-দুর্বোধ্য। আমরা তাঁর তিনটি রাজনৈতিক পরিভাষার ব্যাখ্যার মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক দর্শনকে বোঝার চেষ্টা করব। রুবুবিয়াৎ, খুদায়ে খিদমাতগার এবং হুকুমতে রাব্বানিয়া।

কোরআনে বলা হয়েছে, মানুষকে আমি (আল্লাহ) খলিফা বা প্রতিনিধি হিসেবে প্রেরণ করেছি। (২:৩০) এই খলিফা ইসলামি খেলাফত বা রাজতন্ত্রের খলিফা না। কারণ, খেলাফত ব্যবস্থায় রাজতন্ত্রের খলিফা হন একজন। আর রুবুবিয়াতের খলিফা আমি, আপনি, সবাই।রুবুবিয়াৎ বা পালনবাদ

কোরআনের অনুবাদ করতে গিয়ে অধিকাংশ অনুবাদক ‘রব’ শব্দের অর্থ করেছেন ‘প্রভু’, যা ইসলামি দৃষ্টিতে শিরক বা আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার করা। মাওলানা ভাসানী সচেতনভাবে এর অনুবাদ করেছেন ‘পালনবাদ’। একজন পালনকর্তা হিসেবে আল্লাহ সবাইকে খাওয়ান, পরান, আলো–বাতাস দেন। জীবজন্তুকে খাওয়ানোরও দায়িত্ব নেন। কোরআনে বলা হয়েছে, মানুষকে আমি (আল্লাহ) খলিফা বা প্রতিনিধি হিসেবে প্রেরণ করেছি। (২:৩০) এই খলিফা ইসলামি খেলাফত বা রাজতন্ত্রের খলিফা না। কারণ, খেলাফত ব্যবস্থায় রাজতন্ত্রের খলিফা হন একজন। আর রুবুবিয়াতের খলিফা আমি, আপনি, সবাই। আমরা সবাই আল্লাহর প্রতিনিধি। সৃষ্টির প্রতি আল্লাহর যা যা দায়িত্ব, আমাদের ওপরও তা-ই দায়িত্ব। এটা যে ভাসানীর মনগড়া ব্যাখ্যা, বিষয়টা এমন না। তাঁর ব্যাখ্যার পেছনে কোরআনে যথেষ্ট প্রমাণ আছে। পবিত্র কোরআনের অন্য জায়গায় মানুষকে আল্লাহর রঙে রঙিন হতে বলা হয়েছে। (২:১৩৮)

মাওলানা ভাসানীর হুকুমতে রাব্বানিয়া সমিতি থেকে প্রকাশিত ‘হুকুমতে রাব্বানিয়া: পূর্বশর্ত’ গ্রন্থের দ্বিতীয় প্রবন্ধে লেখক শামসুল হক বলেন, ‘আল্লাহর সমস্ত গুণাবলী মানবজীবনে রূপায়িত হলে কতই না সুন্দর হবে।...রব হিসেবে এই সৃষ্টিকে পালন অর্থাৎ রুবুবিয়াতের কাজ করাই আল্লাহর সবচাইতে বড় কাজ। আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি হিসেবে মানুষেরও প্রথম এবং প্রধান কাজ হবে রুবুবিয়াৎ পালন।’

রুবুবিয়াতের চারটি স্তর—বিয়ের আগে, পারিবারিক জীবন, রাষ্ট্রপতি হিসেবে, সত্যিকারের মুসলিম হিসেবে।

আবদুল হামিদ খান ভাসানী (১২ ডিসেম্বর ১৮৮০—১৭ নভেম্বর ১৯৭৬)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইমোশনাল অ্যাবিউজের মাধ্যমে শিশুর যে ক্ষতি করেন বড়রা
  • যুবদল নেতা হত্যায় বড় অংকের অর্থ লেনদেন হয়েছে: র‌্যাব
  • জকসু নির্বাচন: ছেলে এজিএস প্রার্থী, নির্বাচনী দায়িত্বে বাবা
  • গুরুতর অভিযোগ তুলে মিস ইউনিভার্সের দুই বিচারকের পদত্যাগ
  • বিকাশের মাধ্যমে ৫০ লাখ মাসিক সঞ্চয়ী হিসাব খুলেছেন গ্রাহকেরা
  • বক্স অফিসে রাশমিকার সিনেমার হালচাল কী?
  • ভাত কী সত্যিই ওজন বাড়ায়?
  • হার্মিস: ভাইয়ের গরু চুরি করে বীণা উপহার দিয়েছিলেন
  • বামপন্থা, ইসলাম ও পালনবাদ: ভাসানীর রাজনৈতিক দর্শন