জবি ছাত্র জোবায়েদ হত্যা মামলায় ২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ
Published: 19th, November 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন হত্যা মামলায় দুইজন সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দীন তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
আরো পড়ুন:
সখীপুরে মেয়েকে হত্যার পর নিজেকে শেষ করলেন মা
নেত্রকোণায় চালককে হত্যা করে মোটরসাইকেল ছিনতাই
সাক্ষীরা হলেন, জবি শিক্ষার্থী সৈকত হোসেন এবং সালাউদ্দিন স্পেশালাইজড হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা.
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বংশাল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফ হোসেন সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আবেদন করেন।
জবানবন্দিতে সৈকত বলেন, “আমি জবির ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ও জোবায়েদ ভার্সিটির বড় ভাই। আমি জোবায়েদ ভাইয়ের ক্লোজ ছোট ভাই হওয়াতে বর্ষা আমার নাম্বার জোবায়েদ ভাই থেকে নেয়। মাঝে মাঝে হোয়াটসঅ্যাপ হাই, হ্যালো কথাবার্তা হত। ২-৩ মাস আগে বর্ষা আমাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। তখন থেকে বর্ষার সঙ্গে আমার আর যোগাযোগ হয়নি। জোবায়েদ ভাই প্রায় ১ বছর ধরে বর্ষাকে বাসায় টিউশন পড়াত।”
তিনি বলেন, “ভার্সিটি এলাকায় থাকাকালে গত ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টা ৫৮ মিনিটের দিকে বর্ষা তাকে ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ দেয়, ‘ভাইয়া কই তুমি?’ আমি জানাই ক্যাম্পাসে। বর্ষা বলে, ‘স্যারের আম্মুর নাম্বার আছে?’ কারণ জানতে চাইলে বর্ষা বলে, ‘লাগবে।’ ভাইয়ের কিছু হয়ছে কি না জানতে চাইলে বর্ষা বলে, ‘ভাইরে (জোবায়দে) কে জানি মাইরা ফেলছে।’ আমি বলি, মাইরা ফেলছে বলতে? বর্ষা বলে, ‘খুন করে ফেলছে।’ তখন বর্ষাকে কল দেওয়ার চেষ্টা করি, কিন্তু তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। এরপর বিষয়টি বড় ভাইদের জানাই।”
ডা. ওয়াহিদুর রহমান জবানবন্দিতে বলেন, “গত ১৯ অক্টোবর সাপ্তাহিক নৈশ্যকালীন ডিউটি থাকায় বাসায় অবস্থান করছিলাম এবং ড্রইং রুমে বসে টিভি দেখছিলাম। হঠাৎ আমার স্ত্রীকে দ্বিতীয় তলার চাচাতো ভাই ফোন করে জানায়, সিঁড়িতে কোনো একজন লোক পড়ে আছে। আমরা তখন সঙ্গে সঙ্গে দরজা খুলে দেখি সিঁড়ির মাঝামাঝি একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।”
তিনি বলেন, “তাদের চিৎকার চেঁচামেচিতে বাড়ির লোকজন জড় হয়ে যায় এবং সেখানে শনাক্ত হয় যে, আমার ভাগ্নি বর্ষার প্রাইভেট টিউটর জুবায়েদের মরদেহ। তাৎক্ষণিক ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে অবহিত করি।”
বর্ষার মামা জানান, পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন তার ভাগ্নি বর্ষার সঙ্গে মাহির নামক এক ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং জোবায়েদ মাস্টারের সঙ্গেও বর্ষার প্রেম ছিল। এই দ্বন্দ্বের কারণে মাহির রহমান, জোবায়েদ মাস্টারকে হত্যা করে ঘটনার দিন দৌড়ে পালিয়ে যায়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, মো. জোবায়েদ হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করতেন। প্রতিদিনের মতো গত ১৯ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বংশাল থানাধীন ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে নুর বক্স লেনের ১৫ নম্বর হোল্ডিং রৌশান ভিলায় বর্ষাকে পড়ানোর জন্য যান।
সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটের দিকে ওই ছাত্রী জোবায়েদ হোসেনের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই সৈকতকে ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে জানায়, “জোবায়েদ স্যার, খুন হয়ে গেছে। কে বা কারা জোবায়েদ স্যারকে খুন করে ফেলছে।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মো. কামরুল হাসান ৭টার দিকে জোবায়েদের ভাই এনায়েত হোসেনকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তথ্যটি জানান। এনায়েত তার শ্যালক শরীফ মোহাম্মদকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাস্থল রৌশান ভিলায় পৌঁছান। ভবনের নিচতলা থেকে ওপরে ওঠার সময় সিঁড়ি এবং দেয়ালে রক্তের দাগ দেখতে পান। ওই ভবনের তৃতীয় তলার রুমের পূর্ব পার্শ্বে সিঁড়িতে জোবায়েদের রক্তাক্ত মরদেহ উপুড় অবস্থায় দেখতে পান।
ঘটনার দুইদিন পর ২১ অক্টোবর জোবায়েদের ভাই এনায়েত হোসেন বংশাল থানায় মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে জোবায়েদকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলার ডান পাশে আঘাত করে হত্যা করেছে।
মামলায় বর্ষা, তার প্রেমিক মো. মাহির রহমান, মাহিরের বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লান ২১ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছে।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য র রহম ন বর ষ র
এছাড়াও পড়ুন:
হার্মিস: ভাইয়ের গরু চুরি করে বীণা উপহার দিয়েছিলেন
হার্মিস গ্রিক পুরাণের একজন গুরুত্বপূর্ণ দেবতা। তিনি দেবতাদের বার্তাবাহক হিসেবে পরিচিত এবং তাকে অলিম্পাসের বারোজন প্রধান দেবতার একজন গণ্য করা হয়। তিনি বাণিজ্য, চুরি, ভ্রমণ, ক্রীড়া, সাহিত্য, এবং আবিষ্কারের দেবতা। তিনি প্রধান দেবতা জিউস এবং প্লিয়াড মাইয়া এর পুত্র। তিনি প্রধান দেবতা জিউস এবং প্লিয়াড মাইয়া এর পুত্র।
মিথ অনুযায়ী, হার্মিস অলৌকিকভাবে একদিনের মধ্যেই গর্ভে আসেন এবং জন্মগ্রহণ করেন। ভোরে জন্ম মায়া ভোরে হার্মিসকে জন্ম দেন এবং প্রসবের পর ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। জন্মের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হার্মিস হামাগুড়ি দিয়ে গুহা থেকে বেরিয়ে আসেন। তিনি শুরু থেকেই অত্যন্ত ধূর্ত এবং বুদ্ধিমান ছিলেন। বেরিয়ে আসার পথে তিনি একটি কচ্ছপ দেখতে পান, সেটিকে মেরে তার খোলস দিয়ে একটি বীণা তৈরি করেন।
আরো পড়ুন:
কণ্ঠস্বর ভালো রাখার জন্য যেসব অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন
বিরক্ত হলে গাছের চূড়ায় উঠে যায় ‘লাল ঝুটি টিয়া’
সেই একই সন্ধ্যায়, হার্মিস তার সৎ ভাই অ্যাপোলোর পবিত্র গবাদি পশুদের একটি পাল চুরি করতে থেসালিতে চলে যান। তিনি গরুর ক্ষুরের ছাপ লুকানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন (যেমন গরুদের উল্টো করে হাঁটানো, নিজের পায়ে ডালপালা বেঁধে স্যান্ডেল তৈরি করা)।
অগ্নি আবিষ্কার তিনি দুটি কাঠি একসাথে ঘষে আগুন জ্বালানোর পদ্ধতিও আবিষ্কার করেন এবং দুটি চুরি করা গরু বলি দেন। অ্যাপোলো তার হারানো পশুর খোঁজ পান এবং হার্মিসকে সন্দেহ করেন। তিনি জিউসের কাছে অভিযোগ করেন, কিন্তু হার্মিস চুরির কথা অস্বীকার করেন।
অবশেষে, জিউস হস্তক্ষেপ করেন এবং হার্মিসের ধূর্ততায় মুগ্ধ হয়ে দুজনকে মিটমাট করিয়ে দেন। হার্মিস অ্যাপোলোকে তার আবিষ্কৃত বীণা উপহার দেন, এবং বিনিময়ে অ্যাপোলো তাকে পশুপালনের দায়িত্ব প্রদান করেন।
হার্মিস মৃত ব্যক্তিদের আত্মাকে পাতাল রাজ্যে (আন্ডারওয়ার্ল্ড) নিয়ে যাওয়ার পথপ্রদর্শক বা ‘আত্মা নির্দেশক’ (psychopomp) হিসাবেও কাজ করতেন। কম সংখ্যক দেবতার মধ্যে হার্মিস ছিলেন একজন, যিনি দেবতা, নশ্বর এবং পাতাল - এই তিন জগতের মধ্যে অবাধে চলাচল করতে পারতেন।
সূত্র: ডাক স্ট্রিস
ঢাকা/লিপি