বিএনপির নামে চাঁদাবাজি এলাকাবাসীর থানা ঘেরাও
Published: 13th, February 2025 GMT
আড়াইহাজারে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে স্থানীয় এক নেতার লাগামহীন চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী থানা ঘেরাও করে শাস্তির দাবি করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার ছোট ফাউসা এলাকাবাসী শাহীন মিয়া নামে ওই চাঁদাবাজের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে আড়াইহাজার থানা ঘেরাও করে। এ সময় বিপুলসংখ্যক নারী-পুরুষ থানায় সমবেত হয়।
স্থানীয়রা জানায়, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি প্রার্থী শাহীন মিয়া ছোট ফাউসা এলাকায় মামলা হামলার ভয় দেখিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজি শুরু করেন। তাঁকে চাঁদা দিতে গিয়ে স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন জানান, শাহীন ও তাঁর লোকজন তাঁর কাছ থেকে এক লাখ টাকা দাবি করে। চাঁদা না দিলে তাঁকে আওয়ামী লীগার বানিয়ে মামলায় কারাগারে পাঠানোর হুমকি দেয় তারা।
ওই এলাকার টেক্সটাইল মিলের শ্রমিক আমান উল্লাহ জানান, তাঁর কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করে শাহীন ও তাঁর লোকজন। চাঁদা না দিলে তাঁকে আওয়ামী লীগের দোসর বানিয়ে মামলায় তাঁর নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে তারা।
শাহীন মিয়া ছোট ফাউসা গ্রামের আনছার আলীর ছেলে। এক সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর সঙ্গে সখ্য রেখে এলাকায় বেশ প্রভাব বিস্তার করে চলতেন তিনি। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর রাতারাতি ভোল পাল্টে বিএনপি বনে যান। শুরু হয় তাঁর নতুন অধ্যায়। বিভিন্ন স্থানে ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি প্রার্থী প্রচার করে ব্যানার টানান। শাহীন তাঁর এলাকায় ছাত্রলীগের বেশ কিছু কর্মী নিয়ে একটি ক্লাব গঠন করেন। সেই কর্মীদের নিয়ে একটি চক্র তৈরি করেন। এ চক্রটি ওরশ, খেলা, বিচার-সালিশসহ বিভিন্ন অজুহাতে স্থানীয়দের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতে থাকে। এলাকার মাদক কারবারিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অবাধে ব্যবসা করার সুযোগ করে দেয়। বৃহস্পতিবারও একটি ওরশ উদযাপনকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে তারা।
ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নুরুল আমিন জানান, শাহীনের চাঁদাবাজির কারণে ছোট ফাউসা এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। নানা অজুহাতে তিনি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এসব অপকর্ম করে যাচ্ছেন।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ বলেন, শাহীন সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু ও তাঁর ভাগনিজামাই রবিনের কর্মী হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন। এখন ভোল পাল্টে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করছেন। শাহীন বিএনপির কেউ নয়। তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে থানার ওসিকে বলা হয়েছে।
চাঁদাবাজির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন শাহীন মিয়া। নিজেকে ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য দাবি করে তিনি বলেন, তাঁর দলের প্রতিপক্ষরা আওয়ামী লীগের লোকজনকে ফুসলিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। ছাত্রলীগের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর বাড়িঘরে হামলা করা হয়েছে।
আড়াইহাজার থানার ওসি এনায়েত হোসেন জানান, এ ব্যাপারে স্থানীয়রা থানায় এসে পুলিশকে জানিয়েছে। শাহীনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ র ন ম ব এনপ র স এল ক য় আওয় ম ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
লামিনে ‘মেসি’ ইয়ামাল
১৭ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: ১৯ ম্যাচ, ৫ গোল, ৪ গোলে সহায়তা।
১৭ বছর বয়সী লিওনেল মেসি: ৯ ম্যাচ, ১ গোল, গোলে সহায়তা নেই।
১৭ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামাল: ১০০ ম্যাচ, ২২ গোল, ৩৩ গোলে সহায়তা।
মেসি–রোনালদোর সঙ্গে তুলনা নয়, লামিনে ইয়ামালের শুরুটা বোঝাতে এই পরিসংখ্যান হাজির করেছে টিএনটি স্পোর্টস। ধূমকেতুর মতো শুরু হলেও ধূমকেতুর মতোই মিলিয়ে যাওয়ার পাত্র তিনি নন।
বার্সেলোনার এস্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে গত রাতের ম্যাচটি স্মরণ করতে পারেন। ৬ গোলের থ্রিলার, যেখানে বার্সেলোনা–ইন্টার মিলান সেমিফাইনাল প্রথম লেগের ‘ক্লাসিক’ লড়াই ৩–৩ গোলে অমীমাংসীত। দুই দলের হয়েই ‘সুপার হিরো’ ছিলেন বেশ কজন। ইন্টারের যেমন ডেনজেল ডামফ্রিস ও মার্কাস থুরাম, বার্সার তেমনি রাফিনিয়া, ফেরান তোরেসরা। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে ঠিকই রবির কিরণের মতো আলো দিয়েছেন এক কিশোর—লামিনে ইয়ামাল নাসরাউয়ি এবানা। সংক্ষেপে লামিনে ইয়ামাল।
আরও পড়ুন৬ গোলের থ্রিলারে বার্সেলোনা–ইন্টার সেয়ানে সেয়ানে টক্কর৮ ঘণ্টা আগে২৪ মিনিটে ইয়ামালের করা গোলটির প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। যেভাবে খেলেছেন তাতে গোলটি না করলেও লোকে কাল রাতে তাঁর পারফরম্যান্স মনে রাখতেন। পরিসংখ্যান বলছে ১০২টি টাচ, একটি গোল, ২টি গোল হওয়ার মতো পাস, ৬টি শট (পোস্টে মেরেছেন দুবার) এবং ১০টির মধ্যে ৬টি সফল ড্রিবলিং।
কিন্তু পরিসংখ্যানে এ তথ্য নেই—মাঠে ডান প্রান্তকে ইয়ামাল ফাইনালে ওঠার হাইওয়ে বানিয়ে যতবার কাট–ইন করে ইন্টারের বক্সে ঢুকেছেন, সেটা আসলে ইতালিয়ান ক্লাবটির রক্ষণের জন্য দুঃস্বপ্নের। প্রতিবারই মৌমাছির মতো ছেঁকে ধরা হয়েছে ইয়ামালকে। কিন্তু আটকানো কি সম্ভব হয়েছে? রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওগুলো ভাসছে। সেসব আসলে ইয়ামালের পায়ের কারুকাজে ইন্টারের রক্ষণকে স্রেফ খোলামকুচির মতো উড়িয়ে দেওয়ার ভিডিও।
ইয়ামাল কত ভয়ংকর সেটা এই এক ছবিতেই পরিস্কার। সবাই ছেঁকে ধরেও তাঁকে আটকাতে পারেননি