এবার হল প্রভোস্টকে বহালের দাবিতে বিক্ষোভ, প্রশাসনিক ভবনে তালা
Published: 13th, March 2025 GMT
ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্রোহী হলের প্রভোস্টকে বহালের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে মিছিল করে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে কলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী আমার কাছে সমান। গতকাল বুধবার রাতে যে ঘটনা ঘটানো হয়েছে, তা অযৌক্তিক এবং জিম্মি করে করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এটি কখনো কাম্য নয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগেও জিম্মি করে ভিসির কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নিয়েছিল, কিন্তু তা টেকেনি।’
উপচার্য আরও বলেন, ‘সব স্টেকহোল্ডার যে দাবিদাওয়া আছে, সে অনুযায়ী কাজ করব। যদি তা করতে পারি, তাহলে থাকব, তা না হলে থাকব না। অনেক খারাপ ল্যাঙ্গুয়েজে সম্মানিত শিক্ষকদের অসম্মানিত করেছে, জুতা নিক্ষেপ করেছে, এর বিচার হবেই।’ লিখিত দাবিগুলো বিবেচনায় এনে তদন্ত কমিটির সুপারিশ সাপেক্ষে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন উপাচার্য।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে নতুন প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, মব সন্ত্রাসের চাপে পড়ে অনৈতিক দাবি মেনে নেওয়ার জন্য প্রশাসনের দুর্বলতার নিন্দা জানাচ্ছি। প্রশাসন কীভাবে কোনো প্রকার যাচাই–বাছাই, তদন্ত ছাড়াই প্রভোস্ট সাইফুল স্যারকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্তে যেতে পারে? প্রশাসন কি চাইলে পারত না সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার প্রকৃত সত্য বের করতে? গুটিকয় মানুষের অনৈতিক দাবি মেনে নেওয়ার আগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করা উচিত ছিল না? তাঁদের মনে হয়েছে প্রশাসন এখানে ব্যর্থ।
এ সময় শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি জানান। এগুলো হলো বিদ্রোহী হল প্রভোস্টের সম্মানহানির সঙ্গে জড়িত সবাইকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তদন্ত ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক বিদ্রোহী হলের প্রভোস্টের বিরুদ্ধে নেওয়া সব ধরনের অন্যায় ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বাতিল বলে ঘোষণা করতে হবে। যেসব অনলাইন পেজ ও গ্রুপ মুষ্টিমেয় শিক্ষার্থীকে উসকে দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
গতকাল ইফতারের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিদ্রোহী হলের প্রভোস্ট সাইফুল ইসলামের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করেন। হল প্রশাসনের আয়োজনে ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ না দিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ ও ছাত্রাবাসের সিট বাতিলসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করলে শিক্ষার্থীদের এসব দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেন উপাচার্য।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
মিয়ানমার সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ে বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন জার্মানির সংসদ সদস্য
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফর করেছেন জার্মানির গ্রিন পার্টির সংসদ সদস্য বরিস মিজাতোভিচ। চার দিনের এই সফরের সময় তিনি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
বুধবার ঢাকায় জার্মান দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জার্মানির পার্লামেন্ট বুন্দেসট্যাগের গ্রিন পার্টির সদস্য বরিস মিজাতোভিচ ২৬ থেকে ২৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সফর করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জ্বালানি প্রকল্প, বিশেষ করে এই অঞ্চলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। বরিস মিজাতোভিচ মিয়ানমারের সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। যার লক্ষ্য ছিল এই বিষয়গুলোকে আন্তর্জাতিক আলোচনার সূচিতে ফিরিয়ে আনা। এই লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশ সফর শেষে থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই ভ্রমণ করেন।
বাংলাদেশ সফরে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা, সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থা, পরিবেশজনিত উদ্বেগ, কর্মপরিবেশ এবং শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতির মতো বিষয়গুলো নিয়ে বরিস মিজাতোভিচ আলোচনা করেন।
বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে সফরকালে মিজাতোভিচ শ্রম উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গেও বৈঠক করেন। সরবরাহ শৃঙ্খল সম্পর্কিত বিষয়গুলোর পাশাপাশি উপসাগরীয় অঞ্চলে শ্রম অভিবাসন এবং কর্মপরিবেশ নিয়েও আলোচনা করেন তাঁরা। এ ছাড়া বৈঠকে জাহাজভাঙার চ্যালেঞ্জ এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন।
এ ছাড়া বরিস মিজাতোভিচ বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে জিআইজেড আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত সম্পর্কে অবগত হন এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্মপরিবেশ উন্নত করার সম্ভাব্য ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরের সময় বরিস মিজাতোভিচ কক্সবাজারে যান।
সেখানে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির পরিদর্শন করেন এবং এ অঞ্চলে মানবিক চ্যালেঞ্জ এবং চলমান ত্রাণ কার্যক্রম আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই সফর মানবাধিকার, কর্মপরিবেশ এবং মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে সংলাপ, বোঝাপড়া এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন।