রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ‘ঝটিকা মিছিলে’ অংশ নেওয়ার অভিযোগে যুবলীগ, কৃষক লীগ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের আটজনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আটক করা ব্যক্তিরা হলেন কামরাঙ্গীরচর থানার ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ শহিদ, বংশাল থানা ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি মো.

জিয়া মিয়া, ২৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ শেরেবাংলা নগর থানার সহসভাপতি মো. কবির হোসেন ওরফে পানি কবির, ২৮ নম্বর ওয়ার্ড শেরেবাংলা নগর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আবদুর রব পাটোয়ারী, ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম কে আজিম, বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সংস্কৃতিবিষয়ক সহসম্পাদক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম খান লিটু, ঢাকা মহানগর উত্তর তুরাগ থানা কৃষক লীগ নেতা মো. দেলোয়ার হোসেন এবং বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব পরিষদের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক রায়হান আহমেদ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিকে বলা হয়, শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা থেকে শামীম আহমেদ শহিদ ও জিয়া মিয়াকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ বিভাগ।

অন্যদিকে ডিবির মতিঝিল বিভাগের একটি দল তেজগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. আবদুর রব পাটোয়ারী ও মো. কবির হোসেনকে আটক করে। আর যাত্রাবাড়ী থানাধীন কলাপট্টি থেকে এম কে আজিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাতে তুরাগ থানা এলাকা থেকে মো. দেলোয়ার হোসেনকে আটক করে ডিবির উত্তরা বিভাগ।

এ ছাড়া শুক্রবার দিবাগত রাতে মুগদা এলাকা থেকে রায়হান আহমেদ ও রামপুরা মহানগর প্রজেক্ট এলাকা থেকে মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম খানকে আটক করে ডিবির গুলশান বিভাগ।

পুলিশ জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন থানায় দায়ের করা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য বল গ আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকায় আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গসংগঠনের ১২ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের