বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য পরিবেশবান্ধব ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তির ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে যৌথ অংশীদারিত্বে দেড় কোটি ডলার চীনা বিনিয়োগ (বাংলাদেশি ১৮০ কোটি টাকা) পেল রংপুরের গঙ্গাচড়ার স্টেডফাস্ট কুরিয়ারের প্রতিষ্ঠাতা এবং ফাস্টপাওয়ার টেকের চেয়ারম্যান কেএম রিদওয়ানুল বারী জিয়ন।

ইভি, অ্যাসেম্বলি লাইন, চার্জিং স্টেশন ও সংশ্লিষ্ট প্ল্যান্ট স্থাপনে চীনের জ্বালানি প্রযুক্তি কোম্পানি এনইউসিএল থেকে এ বিনিয়োগ পাচ্ছে লজিস্টিক প্রতিষ্ঠান স্টেডফাস্ট কুরিয়ারের সহযোগী এই প্রতিষ্ঠান। এ বিনিয়োগ দিয়ে দেশে একটি টেকসই ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি অবকাঠামো গড়ে তুলতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করতে চায় স্টেডফাস্ট। সে লক্ষে গত ১ মে চীনের গুয়াংজুর বাইয়ুন জেলার হুয়াংবিয়ানে চীনা প্রযুক্তি কোম্পানি এনইউসিএল নিউ এনার্জি টেকনোলজি (জিডি) লিমিটেড এবং বাংলাদেশের ফাস্টপাওয়ার টেকের মধ্যে যৌথ অংশীদারিত্ব চুক্তি হয়েছে। 
ফাস্টপাওয়ার টেকের চেয়ারম্যান কেএম রিদওয়ানুল বারী জিয়ন এবং এনইউসিএলের সিইও ফরেস্ট লিয়াং চুক্তিতে সই করেন। এসময় স্টেডফাস্ট কুরিয়ারের পরিচালক অর্ণব মুস্তাফা এবং প্রবাসী প্রতিনিধি শাদমান সাকিব ও এনইউসিএলের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তির অধীনে বাংলাদেশে একটি পরিবেশবান্ধব নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থাপনা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে এক্সটেন্ডেড রেঞ্জ ইলেক্ট্রিক ভেহিকেল (ইআরইভি) এবং প্লাগইন হাইব্রিড ইলেক্ট্রিক ভেহিকেল (পিএইচইভি) প্রযুক্তিতে এনইউসিএলের কার ক্লাউড নেটওয়ার্কের অধীনে দেশব্যাপী চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা হবে। জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভরতা এবং কার্বন নির্গমন কমাতে এ যৌথ অংশীদারত্বকে মাইলফলক হিসেবে দেখছেন বাজার বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, স্থানীয় শিল্প প্রবৃদ্ধির সঙ্গে অত্যাধুনিক চীনা প্রযুক্তি একীভূত করে এবং স্টেডফাস্ট কুরিয়ারের প্রতিষ্ঠিত অবকাঠামো ব্যবহার করে এ যৌথ উদ্যোগটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে গতিশীলতা আনবে। 
ফাস্টপাওয়ার টেকের চেয়ারম্যান কে এম রিদওয়ানুল বারী জিয়ন বলেন, আমরা এখন লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্যাটারি ও লিড অ্যাসিড ব্যাটারির মতো স্টোরেজ ব্যাটারি এবং সৌরশক্তির মতো কিছু নবায়নযোগ্য শক্তি নিয়ে কাজ করছি। আর নতুন বিনিয়োগে ও যৌথ অংশীদারিত্বে এবার বাংলাদেশে একটি কারখানা স্থাপন করবো। এ জন্য দেশের ইকোনমিক জোনগুলোর মধ্য থেকে স্থান নির্বাচন করা হবে। যাতে আরও অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যায়।

প্রসঙ্গত, পিছিয়ে পড়া রংপুরের গঙ্গাচড়া থেকে উঠে এসেছেন তরুণ উদ্যোক্তা কেএম রিদওয়ানুল বারী জিয়ন। এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন তিনি। যার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন তার প্রতিষ্ঠিত স্টেডফাস্ট কুরিয়ারের মাধ্যমে। এবারে জিয়নের স্টার্টআপ ফাস্টপাওয়ার টেক প্রতিষ্ঠানটি চীনা বিনিয়োগ পাওয়ায় গঙ্গাচড়াসহ রংপুরে আনন্দের ঝড় বইছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত, শুক্রবারের হামলায় আরও ৮২ ফিলিস্তিনি নিহত

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বর্বরতা অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েল। স্থানীয় সময় শুক্রবার উপত্যকাটিতে আরও ৮২ জন নিহত হয়েছেন।

এরমধ্যে মধ্য গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৭ জন। তাদের ২৩ জন ত্রাণ আনতে গিয়ে দখলদারদের হাতে নিহত হয়েছেন। গাজা সিটিতে নিহত হয়েছেন আরও ২৩ জন। আর দক্ষিণ গাজায় প্রাণ গেছে ২২ জনের। এদের মধ্যে ১১ জন ত্রাণ আনতে গিয়েছিলেন।

এদিকে গাজা যুদ্ধ চলমান থাকায় টানা দ্বিতীয় বছরের মতো শিশুদের বিরুদ্ধে গুরুতর সহিংসতার কারণে ইসরায়েলকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করেছে জাতিসংঘ। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৪ সালে যুদ্ধপীড়িত অঞ্চলে শিশুদের ওপর সহিংসতা ‘চরম মাত্রায়’ পৌঁছেছে। এর মধ্যে গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে সবচেয়ে বেশি সহিংসতা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

‘সশস্ত্র সংঘাতে শিশু’বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় গত বছর বিশ্বব্যাপী শিশুদের বিরুদ্ধে গুরুতর সহিংসতার ঘটনা ২৫ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৪ সালে মোট ৪১ হাজার ৩৭০টি গুরুতর সহিংসতা যাচাই করে দেখা গেছে, এর মধ্যে শিশুদের হত্যা, শারীরিকভাবে আহত করা, যৌন সহিংসতা এবং স্কুল-হাসপাতালে হামলার মতো ঘটনা রয়েছে।

এর মধ্যে শুধু ফিলিস্তিন ভূখণ্ড ও ইসরায়েলে ২ হাজার ৯৫৯ শিশুর বিরুদ্ধে ৮ হাজার ৫৫৪টি গুরুতর সহিংসতার ঘটনা নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘ। এই সংখ্যা অনুযায়ী, গাজায় গত এক বছরে  ১ হাজার ২৫৯  ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে এবং ৯৪১ জন আহত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, নিহত শিশুর সংখ্যা আরও অনেক বেশি। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে গাজায় আরও ৪ হাজার ৪৭০ শিশু নিহতের তথ্য যাচাই চলছে। অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ৯৭ ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যুর তথ্যও নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘ। সেখানে ৩ হাজার ৬৮৮টি শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।

সূত্র: আলজাজিরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ