১৫ মের মধ্যে শেষ হবে ঐকমত্য কমিশন-রাজনৈতিক দলের প্রাথমিক আলোচনা: আলী রীয়াজ
Published: 4th, May 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, আগামী ১৫ মের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শেষ করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনা করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
রোববার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ১২-দলীয় জোটের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে আলী রীয়াজ এ কথা বলেন। ১২-দলীয় ১১ নেতা এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে আলী রীয়াজ বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য তৈরির দায়িত্ব শুধু জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের একার নয়। আপনারা যাঁরা সংগ্রামে আছেন, আপনারা যাঁরা আজ আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন, আপনারা আপনাদের সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলুন, অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে কথা বলুন; কী করে আমরা এক জায়গায় আসতে পারি।’
ঐকমত্যে আসার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ছাড় দেওয়ার আহ্বান জানান আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘আমাদের সবাইকে এক জায়গায় আসতে হবে। আমরা সব বিষয়ে একমত হতে পারব না, কিন্তু রাষ্ট্র গঠনের মৌলিক জায়গায় আমাদের একমত হয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
আলী রীয়াজ বলেন, ‘শুধুমাত্র এই টেবিলে বসে, এখানে আলোচনা করে আমরা জাতীয় ঐকমত্যের চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছতে পারব, এটা আমরা মনে করি না।’
চলমান আলোচনার সময়সীমার কথা জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ১৫ মের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শেষ করে ঐকমত্যের বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু পরিকল্পনা রয়েছে। যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হবে, সেগুলোর ভিত্তিতে জাতীয় সনদ তৈরি হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য গঠন) মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠক উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার ও মোহাম্মদ মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। ১২-দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (বিএলডিপি) চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আল র য় জ
এছাড়াও পড়ুন:
কোনো দলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হলে জোট হতে পারে: সারজিস আলম
আগামীর বাংলাদেশ এবং জনগণের স্বার্থ সামনে রেখে যদি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়, তাহলে নির্বাচনী জোট হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এসসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এনসিপির কমিটি গঠন উপলক্ষে ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার আহ্বায়ক এবং সদস্যসচিবের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সারজিস আলম বলেন, ‘যদি তারা (রাজনৈতিক দল) জুলাই সনদ বাস্তবায়নে একমত থাকে, বিচারিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে একমত থাকে, যদি তারা বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী এবং আওয়ামী ফ্যাসিস্টবিরোধী তাদের শক্ত অবস্থান ধরে রাখতে পারে—এ বিষয়গুলোতে যদি আমরা ঐকমত্য হতে পারি, তাহলে জনগণের স্বার্থে অ্যালায়েন্স (নির্বাচনী জোট) হতে পারে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলমান, তবে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
আগামী নির্বাচনে এনসিপি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে কাজ করছে জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে যদি প্রতিটি ওয়ার্ডে এনসিপির আহ্বায়ক কমিটি থাকে, তাহলে ৩০০ আসনে শক্তিশালী প্রার্থী দিতে পারবেন। কমিটি গঠনের বিষয়ে কাজ চলছে।
আগামী সংসদ নির্বাচনে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির (জাপা) অংশগ্রহণ করার কোনো অধিকার নেই উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপি নেতা সারজিস আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এবং তাদের যারা দোসর জাতীয় পার্টি, তাদেরও আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কোনো অধিকার নেই। এই জাতীয় পার্টির কত বড় সাহস, এই জিএম কাদেররা এবং এঁদের যারা সাঙ্গপাঙ্গ আছে, এরা যে খুনিদের দোসর এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ওই খুনিদের মদদদাতা, তার প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়। তারা যখন বলে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না! তাদের জন্মদাতা যে আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগ যে তাদের পেলেপুষে বড় করেছে, এর প্রমাণ তারা আবার নতুন করে দিচ্ছে। তাদের জাত চেনাচ্ছে। এই খুনিদের আগামীর বাংলাদেশের কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অধিকার নেই।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব কি না, এমন প্রশ্নে সারজিস আলম বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন আমাদের শাপলা প্রতীক দিতে গিয়ে তারা তাদের জায়গা থেকে একটি লম্বা সময় স্বেচ্ছাচারিতা করেছে এবং কোনো আইনগত বাধা না থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে শাপলা না দিয়ে শাপলা কলি দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে আমাদের জায়গা থেকে আহ্বান করব, তারা যদি ওই একই ধরনের আচরণ আগামী দিনে করে, তাহলে তাদের ওপর আস্থার সংকট তৈরি হবে। আমরা চাই, তারা সর্বোচ্চ নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠুভাবে তাদের প্রতিষ্ঠানের স্বাধীন যে সাংবিধানিক অবস্থা, তা যেন বজায় রাখে। তারা যেন পূর্বের মতো কোনো দলীয় নির্বাচন কমিশনে পরিণত না হয়। যদি কারও ভেতর এমন চিন্তা বা চেষ্টা থাকে, তাহলে তাদের পরিণতি তাদের পূর্বসূরিদের মতো হবে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা সারোয়ার, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকিন আলম প্রমুখ।