পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে এনপিবিসিএল-এ কর্মরত কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী দাবি আদায়ের নামে প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ-সমাবেশ করে বিশৃংখলা সৃষ্টির মাধ্যমে প্রকল্প বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার ( ১৫ মে) সকালে পাবনার ঈশ্বরদী পৌর শহরের ফকিরের বটতলা এলাকায় সচেতন নাগরিক সমাজ ঈশ্বরদীর ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। 

বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে ঈশ্বরদীর শিল্প ও বণিক সমিতি, রিকশা চালক সমবায় সমিতি, সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদসহ বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার নারী ও পুরুষ অংশ নেন। মানববন্ধন পরিচালনা করেন সচেতন নাগরিক সমাজ ও সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ওহিদুজ্জামান টিপু। 

আরো পড়ুন:

মল্লিকা এক্সপ্রেস আটকে ঢাকাগামী ৪ ট্রেন চালুর দাবি

রাজশাহীতে ওসির বিচারের দাবিতে আইনজীবীদের মানববন্ধন

লিখিত বক্তব্যে সচেতন নাগরিক সমাজের নেতা ও ঈশ্বরদী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম ফজলুর রহমান বলেন, ‘‘প্রকল্প এলাকায় দাবি আদায়ের নামে বিশৃংখলা সৃষ্টির কারণে প্রকল্প চালু করেও জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে অনিশ্চতার সৃষ্টি হয়েছে। যেকারণে ঈশ্বরদীবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের প্রকল্পকে বন্ধ করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রখে দাঁড়াতে আজ রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে ৯৪ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি মাসেই গ্রিডের সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হওয়ার কথা। এরপর ডিসেম্বরে স্টার্টআপ করার কথা। এই অবস্থায় প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ-সমাবেশ করে বিশৃংখলা সৃষ্টির ঘটনা অশুভ সংকেত।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডে (এনপিবিসিএল) প্রায় দুই হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োাগ দেয়া হয়েছে। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এ সময় বিএনপি ও বিরোধীদলের কাউকে নিয়োগ বা যোগদান করতে দেয়া হয়নি।’’ এ বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করতে এবং ফ্যাসিস্টদের দোসর যারা রয়েছে, তাদের চিহ্নিত করার দাবি জানান এস এম ফজলুর রহমান। 

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, প্রকল্পের কর্মীদের চাকরি সংক্রান্ত দাবি-দাওয়া থাকতে পারে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের হঠকারী আচরণে মনে হয়েছে তারা পরিকল্পিতভাবে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে মাঠে নেমেছে। নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। দাবির বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয়ার পরও তারা আন্দোলনের নামে ন্যক্কারজনক এ কাজ করেছেন।  

দাবি আদায়ে আন্দোলনের নামে কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে এবং এ প্রকল্পকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে রূপপুর প্রকল্পের নিরাপত্তা বিঘ্নিতকারী এবং বিশৃংখলা সৃষ্টিকারীদের চিহ্ণিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয় মানববন্ধন থেকে। 

ঈশ্বরদী শিল্প ও বনিক সমিতির সহ-সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন জনি বলেন, ‘‘রূপপুর প্রকল্প ঘিরে রাশিয়ানসহ বিদেশিদের আগমনে ঈশ্বরদীর আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসার এবং প্রকল্পে দেশীয় প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক কাজ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে। রূপপুর প্রকল্প ঘিরে অন্তর্বর্তী সরকার ঈশ্বরদীতে বিমানবন্দর অবিলম্বে চালুর বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে। এই অবস্থায় প্রকল্প বন্ধ হলে ঈশ্বরদীর অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে এবং বিমানবন্দরও আর চালু হবে না।’’ 

প্রেস ক্লবের সভাপতি আজিজুর রহমান শাহীন বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক স্পর্শকাতর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে রূপপুর প্রকল্প সার্বক্ষণিক আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার নজরদারিতে থাকে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে আন্দোলন, সমাবেশ বিশ্বে নজিরবিহীন ঘটনা। প্রকল্প এলাকায় নিরাপত্তার শর্ত ভেঙে মিছিল-সমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা শুধু চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজই করেননি, প্রকল্পের অগ্রগতি ও পরবর্তী ধাপের আইএইএ এর লাইসেন্স প্রাপ্তিও হুমকিতে ফেলেছেন।’’  

এ সময় আরো বক্তব্য দেন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা আহসান হাবিব, ঈশ্বরদী শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি আশিকুর রহমান নান্নু, সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এস আলমগীর, উন্নয়ন সংস্থা নিউ এরা ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোস্তাক আহমেদ কিরণ, বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম নয়ন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবু সাঈদ লিটন, পাকশীর ব্যবসায়ী শামসুজ্জোহা পিপপু, আমিনুল ইসলাম স্বপন, মনিরুজ্জামান টুটুল, নারী নেত্রী সাথী খাতুন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ইব্রাহিম হোসেন প্রমুখ। 

ঢাকা/শাহীন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির নির্বাচন ঘিরে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী লেখক সমাজের ব্যানারে একদল লেখক নির্বাচন স্থগিতের দাবিতে মানববন্ধন করেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন লেখক ও সাহিত্যিক এম ফরিদুল ইসলাম, চর্যাপদ একাডেমির মহাপরিচালক রফিকুজ্জামান রনি, হিলশা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংসদের পরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, সহকারী পরিচালক সুলতান মাহমুদুল হাসান, কবি মিজানুর রহমান, মোহনা সাহিত্য শিল্পীগোষ্ঠীর পরিচালক আবদুল মাজেদ প্রমুখ।

বক্তারা অভিযোগ করেন, চাঁদপুরের লেখকেরা ১৫ বছর ধরে বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। তাঁদের সাহিত্য একাডেমির সদস্য করা হয়নি। ফ্যাসিবাদের দোসররা একাডেমি দখল করে রেখেছে। সেই ফ্যাসিবাদী সময়ের পুরোনো ভোটার তালিকা দিয়ে যদি নির্বাচন হয়, তাহলে ফ্যাসিবাদকেই পুনর্বাসন করা হবে। তাঁরা বলেন, অবিলম্বে নতুন সদস্য সংগ্রহ করে হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং তারপর নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়েছে জেলা প্রশাসকের কাছে।

মানববন্ধনে চাঁদপুরের বিভিন্ন পর্যায়ের লেখক, কবি ও সাহিত্যিকেরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ১৩ মে তাঁরা একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপিও দেন।

অন্যদিকে একই দিন বেলা দুইটার দিকে চাঁদপুর শহরের জোড়পুকুরপাড় সাহিত্য একাডেমি প্রাঙ্গণে চাঁদপুর লেখক সমাজের ব্যানারে অপর একটি পক্ষ পাল্টা মানববন্ধন করে। তারা বলে, তারা চায় চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির নির্বাচন হোক এবং সাহিত্যচর্চা আরও বেগবান হোক। তাদের অভিযোগ, একটি পক্ষ নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন লেখক মাহবুব আনোয়ার, আবদুল্লাহ হিল কাফি, নুরুন্নাহার মুন্নি, পলাশ দে প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাম্য হত্যার দায় এড়ানো উপাচার্যের গন্তব্য
  • উজানের ঢলে ফুঁসছে ধলাই বাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নাই
  • আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার দাবি
  • শেরপুরের উন্নয়ন দাবিতে ৭ কিলোমিটার মানববন্ধন 
  • রাজশাহীতে বিএসসি ও ডিপ্লোমা নার্সদের সংঘর্ষ তদন্তে কমিটি
  • ঢাবি ভিসি-প্রক্টর একটি আদর্শে বিশ্বাসী, তাই ছাত্রদলের কথা শুনতে চান না: রিজভী
  • রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
  • চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির নির্বাচন ঘিরে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
  • রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই অপপ্রচার : হিরণ