কলেজশিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিনকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে যোগদান করতে না দিতে স্মারকলিপি
Published: 27th, May 2025 GMT
কলেজশিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিনকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে যোগদান করতে না দেওয়ার দাবিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন কলেজের একদল শিক্ষার্থী। স্মারকলিপিতে নাদিরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ তিন দফা দাবি জানানো হয়।
আজ মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহা.
এর আগে হেফাজতে ইসলামের আলটিমেটামের পর নরসিংদী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে বদলি করা হয়। গতকাল সোমবার দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বদলির তথ্য জানা যায়।
নাদিরা ইয়াসমিন নরসিংদীতে নারী অধিকারকর্মী হিসেবে পরিচিত। ‘নারী অঙ্গন’ নামে তাঁর একটি সংগঠন আছে। এ ছাড়া ‘নারী অঙ্গন’ নামের একটি ওয়েব পোর্টালের সম্পাদক তিনি। সম্প্রতি ‘হিস্যা’ নামের একটি ম্যাগাজিনে ‘বিতর্কিত লেখা’ ছাপানোর অভিযোগ তুলে তাঁকে অপসারণের দাবি জানায় হেফাজতে ইসলাম।
নাদিরা ইয়াসমিনকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে বদলির খবর জানার পর এর প্রতিবাদ জানান কলেজের একদল শিক্ষার্থী। এরপর আজ দুপুরে কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী বখতিয়ার হোসেন ও রবিউল ইসলাম, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ফাহমিদ আলম ও আবদুল্লাহ আল মামুন, অর্থনীতি বিভাগের ঝুমা মারিয়াম, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের ইমরান নাজির ও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শাওন হোসেনের নেতৃত্বে কলেজের অধ্যক্ষ ও জেলা প্রশাসক বরাবর তিন দফা জানিয়ে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনহেফাজতের আলটিমেটামের পর কলেজশিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিনকে নরসিংদী থেকে সাতক্ষীরায় বদলি২২ ঘণ্টা আগেদাবিগুলো হলো নাদিরা ইয়াসমিনকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে যোগদান করতে না দেওয়া; তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া এবং ভবিষ্যতে সাতক্ষীরায় এমন কাউকে বদলি বা নিয়োগ না করা। শিক্ষার্থীদের দাবি, নাদিরা ইয়াসমিন ধর্ম নিয়ে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছেন, তাঁর উপস্থিতি শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহা. আল মুস্তানছির বিল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তাঁর কাছে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। তিনি শিক্ষার্থীদের জানিয়েছেন, শিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিন ডিজি অফিসে যোগদান করবেন ও তাঁর বেতনও হবে সেখান থেকে। শুধু তাঁকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে পাঠদানের জন্য বলা হয়েছে। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপিটি পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল বলেন, ‘যেহেতু বদলি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত। তাই স্মারকলিপিটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত সেখান থেকেই আসবে।’
আরও পড়ুনকলেজশিক্ষক নাদিরার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির২৪ মে ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ম রকল প কল জ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস