অবশেষে এলো সেই তালিকা, যেটিকে ঘিরে গুঞ্জন চলছিল বেশ কিছুদিন। সিঙ্গাপুর ও ভুটানের বিপক্ষে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ সামনে রেখে আজ বুধবার (২৮ মে) ২৬ সদস্যের প্রাথমিক স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।

প্রথমে ৪ জুন ঢাকার মাটিতে ভুটানের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচ। তারপর ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ লড়াই। হ্যাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা দুটি ম্যাচের মাধ্যমেই গড়তে চান একটি নতুন পথ, যেখানে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত একটি দৃঢ় ও প্রতিশ্রুতিশীল দল।

দলে বেশ কিছু নতুন মুখ ও প্রত্যাবর্তন ঘটেছে। ইতালির লিগে খেলা তরুণ মিডফিল্ডার ফাহমিদুল ইসলাম এরইমধ্যে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। রোম থেকে সরাসরি বাংলাদেশ বিমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

রাতে পুনরায় বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচের টিকিট ছাড়বে বাফুফে

বাংলাদেশের হয়ে খেলতে ফিফার অনুমতি পেলেন শমিত

আরও অপেক্ষারত রয়েছেন বাংলাদেশি-ব্রিটিশ মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী। আগেই যার জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক সেরেছেন। তাকে ২ বা ৩ জুন ঢাকায় দেখা যেতে পারে। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি তরুণ শমিত সোম আসবেন ৪ জুন। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় এবার হয়তো তার প্রথম ক্যাপ দেখতে পাবে ফুটবলপ্রেমীরা।

ফরোয়ার্ড লাইনে দলে ফিরেছেন সুমন রেজা, যিনি দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে সুযোগ পেলেন। মিডফিল্ডে আছেন অভিজ্ঞ জামাল ভূঁইয়া, তরুণ মোরসালিন ও কৌশলী মুজিবুর রহমান জনি। ডিফেন্সে যেমন আছেন তারিক কাজী, তেমনি রয়েছেন নির্ভরযোগ্য তপু বর্মণ।

গোলপোস্টের নিরাপত্তায় আছেন তিনজন— মিতুল মার্মা, মোহাম্মদ সুজন হোসাইন ও মেহেদি হাসান শ্রাবণ। তাদের দক্ষ হাতেই নির্ভর করবে দলের শেষ রক্ষার দায়িত্ব।

৩০ মে থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় দলের ক্যাম্প। সেই ক্যাম্প থেকেই বাছাই হবে চূড়ান্ত স্কোয়াড। যারা লড়বেন দেশের জন্য। সিঙ্গাপুর ও ভুটান ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের ফুটবল কি পারবে ঘুরে দাঁড়াতে? সেটা সময়ই বলবে। তবে বাংলাদেশের ফুটবল-ভবিষ্যতের পথে এটি হতে পারে এক নতুন সূচনা!

২৬ সদস্যের বাংলাদেশ দল:
গোলরক্ষক:
মিতুল মার্মা, মোহাম্মদ সুজন হোসাইন ও মেহেদি হাসান শ্রাবণ।

ডিফেন্ডার:
শাকিল আহাদ তপু, জাহিদ হাসান শান্ত, রহমত মিয়া, ইসা ফয়সাল, তাজ উদ্দিন, তারিক কাজী ও তপু বর্মণ।

মিডফিল্ডার:
হৃদয়, সাইয়্যেদ শাহ কাজেম কিরমানি, সোহেল রানা, জনি, মোরসালিন, জামাল ভূঁইয়া, হামজা চৌধুরী ও শমিত সোম।

ফরোয়ার্ড:
ফাহমিদুল ইসলাম, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, রাকিব হোসাইন, ইমন শাহরিয়ার, ইব্রাহিম, আল আমিন ও সুমন রেজা।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

মাইলস্টোনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনা নিয়ে ভিউ ব্যবসায়ীরা গল্প ফাঁদছেন

মাইলস্টোন স্কুলে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম, স্কুলটির কো–অর্ডিনেটর মাহরীন চৌধুরী, শিক্ষক মাসুকা বেগম। তবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই দিয়ে বানানো বিভিন্ন রিলসে তৌকির ইসলাম স্যুট–টাই পরে নিজেই বলছেন, তিনি অনেক চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু দুর্ঘটনাটা এড়াতে পারেননি। একইভাবে মাহরীন চৌধুরী ও মাসুকা বেগমও সুন্দর শাড়ি পরে হাসি হাসি মুখ করে নিজেদের পরিচয় দিয়ে বলছেন, দগ্ধ বাচ্চাদের সেখান থেকে বের করতে গিয়ে নিজেরা দগ্ধ হন এবং পরে মারা যান। অর্থাৎ মারা যাওয়ার পরও তাঁরা কথা বলছেন।

ফেসবুকে ভিউ ব্যবসার জন্য বানানো এসব রিলস দেখে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, বিষয়টি অমানবিক।

২১ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত শিশুসহ মারা নিহত হয়েছেন ৩৪ জন।

ঘটনার দিন আগুনে দগ্ধ হয়ে স্কুলের ভেতর থেকে যখন অনেক বাচ্চা বের হয়ে আসছিল, তখন অনেকে তাদের বাঁচানোর চেষ্টা না করে ভিডিও করছিলেন। এ নিয়ে ক্ষোভ আছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের। তাঁরা বলছেন, মানুষ সেই সময় ভিডিও না করে বাচ্চাগুলোকে একটু বাঁচানোর চেষ্টা করলে হয়তো দু-একজন বেঁচেও যেত। আর ঘটনার পর ওই সব ভিডিও এবং এআই দিয়ে বানানো ছবি ও ভিডিও দিয়ে এখন শুরু হয়েছে নতুন যন্ত্রণা। পাইলট তৌকির মারা যাওয়ার দুই মিনিট আগে কী করছিলেন, বিমানটা কীভাবে বিধ্বস্ত হয়েছিল, মারা যাওয়ার আগে স্কুলের শিক্ষকেরা কী বলেছিলেন—এমন রিলসও বানানো হয়েছে। চটকদার শিরোনাম দেখে অনেকে বিভ্রান্তও হচ্ছেন।

মাইলস্টোন স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এক মায়ের ‘তিন সন্তান মারা গেছে’। ফেসবুকে ‘জুনায়নাস ড্রিমস’ নামের পেজে এমন পোস্ট দেখে সবার মধ্যে এক হাহাকার তৈরি হয়। অনেকে পোস্টের নিজে মন্তব্য করেন। এই পেজ শামীমা মমতাজের। ৩০ জুলাই বুধবার এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শামীমা বললেন, ‘আমার বাচ্চা না। কপি-পেস্ট করেছি।’ কপি-পেস্ট করেছেন তা পোস্টের কোথাও উল্লেখ করেননি কেন, জানতে চাইলে  তিনি বলেন, ‘তাহলে পোস্টটি ডিলিট করে দিচ্ছি।’

এখন পর্যন্ত দুটি পরিবারে একাধিক শিশু মারা যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তাহমিনা আক্তার-আশরাফুল ইসলাম দম্পতির মেয়ে তাহিয়া আশরাফ নাজিয়া মাইলস্টোন স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। আর এই দম্পতির ছেলে আরিয়ান আশরাফ নাফি ছিল তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এই দুই ভাই–বোন এক দিন আগে-পরে মারা গেছে। রাজধানীর কামারপাড়ায় রাজাবাড়ি দক্ষিণপাড়া কবরস্থানে এই ভাই-বোনকে পাশাপাশি কবর দেওয়া হয়েছে।

উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমানবাহিনীর বিধ্বস্ত যুদ্ধবিমান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ