প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে কোনো বাধা যে ডিঙানো সম্ভব, আবার তা প্রমাণ করল যশোরের মনিরামপুরের লিতুন জিরা। জন্মগতভাবে হাত-পাহীন এ কিশোরী চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে। অন্যদিকে পটুয়াখালীর মারিয়া আক্তার বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় বসেছিল। সে পেয়েছে জিপিএ ৩ দশমিক ৮৩।

চিকিৎসক হতে চায় লিতুন জিরা
মনিরামপুরের লিতুন জিরার জন্মগতভাবেই হাত-পা নেই। কনুইয়ের ওপর থেকে আছে হাতের ছোট দুটি অংশ। শারীরিক এ প্রতিবন্ধকতা লেখাপড়া থেকে দমাতে পারেনি তাকে। ডান হাতের ছোট্ট অংশ আর থুতনির সাহায্যে কলম চেপে ধরে লিখতে শেখে সে। এভাবে লিখেই এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে এ কিশোরী। গতকাল বৃহস্পতিবার ফল প্রকাশের পর লিতুন জিরার বাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনন্দের বন্যা বইছে। 
লিতুন জিরা গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেয়। ফল প্রকাশের পর উচ্ছ্বসিত লিতুন জিরা জানায়, লেখাপড়া করে সে চিকিৎসক হতে চায়। ২০১৯ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাতেও সে জিপিএ ৫ পেয়েছিল। 
উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের কলেজশিক্ষক হাবিবুর রহমান ও গৃহিণী জাহানারা খাতুনের একমাত্র মেয়ে লিতুন জিরা। জাহানারা জানান, পড়ালেখার প্রতি তাঁর মেয়ের প্রবল আগ্রহ। লেখাপড়া শিখিয়ে তাকে মানুষের মতো মানুষ করতে চান তারা। লিতুন জিরা যেন চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে, সে ব্যাপারে এ দম্পতি সবার সহযোগিতা চান।

পাস করলেও মন খারাপ মারিয়ার
বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় বসা মারিয়া আক্তার জিপিএ ৩ দশমিক ৮৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। তবে আশানুরূপ ফল না হওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়ে অদম্য এ শিক্ষার্থী। মারিয়া পটুয়াখালী সদরের বদরপুর শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
গত ১০ এপ্রিল ছিল এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন। সেদিন ছিল বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা। পরীক্ষার কেন্দ্রে যাওয়ার আগে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তার বাবা মামুন হাওলাদার।  
গতকাল ফল প্রকাশের পর মারিয়া বলে, ‘বাবার স্বপ্ন ছিল আমাকে চিকিৎসক বানাবেন। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য সেদিন বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিই। পুরো পরীক্ষা চোখে জল নিয়েই দিয়েছি। কিন্তু যেভাবে পড়েছি, সেভাবে ফল করতে পারিনি। আমার জন্য কষ্ট লাগছে না, বাবার স্বপ্ন সফল হবে না ভেবে কষ্ট হচ্ছে।’ মারিয়ার চাচা অলিউল্লাহ হাওলাদার বলেন, মেয়েটিকে ঢাকায় ভালো কোনো কলেজে ভর্তি করাতে চান তাঁরা।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ক ষ য় চ ক ৎসক

এছাড়াও পড়ুন:

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন স্কুল পরিচালিত এসএসসি প্রোগ্রামের মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান শাখায় ২০২৬-২০২৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভর্তির যোগ্যতা জেএসসি পাস হতে হবে। জেএসসি ছাড়াদের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

ভর্তির দরকারি তারিখ—

১. অনলাইনে ভর্তি এবং আবেদনের তারিখ শেষ তারিখ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৬।

২. অষ্টম শ্রেণি বা সমমানের সনদবিহীন ভর্তি-ইচ্ছুকদের ভর্তি পরীক্ষা : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৬।

৩. ওরিয়েন্টেশন ও টিউটোরিয়াল ক্লাস শুরু : ১৫ মে ২০২৬।

ভর্তির যোগ্যতা—

১. জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষায় পাস বা উত্তীর্ণ হতে হবে। (ভর্তির তারিখ ০২/১১/২০২৫ থেকে ৩১/০১/২০২৬)।

২. সরাসরি অনলাইন ভর্তির জন্য: osapsnew.bou.ac.bd

ভর্তির যোগ্যতা(জেএসসি ছাড়া) —

১. যেসব শিক্ষার্থীর জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের সনদপত্র নেই তারাও ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন, এ ক্ষেত্রে বয়স হতে হবে ন্যূনতম ১৪ বছর (৩১/১২/২০২৫ তারিখে)।

২. এসব আবেদনকারীকে যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য বাউবি কর্তৃক নির্ধারিত ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

৩. এ জন্য ভর্তির প্রাথমিক আবেদন ফরম ফি বাবদ ৩০০ টাকা দিতে হবে।

৪. ভর্তি পরীক্ষার বিষয়, মানবণ্টন, তারিখ ও পরীক্ষা কেন্দ্র এবং প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য বাউবি’র ওয়েবসাইট, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র এবং স্টাডি সেন্টার থেকে পাওয়া যাবে। (অনলাইনে আবেদনের তারিখ ০২/১১/২০২৫ থেকে ৩১/০১/২০২৬)।

প্রয়োজনীয় কাগজ যা লাগবে—

১. দুই কপি ছবি।

২. জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষায় পাস বা উত্তীর্ণের সনদ।

৩. জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদের সত্যায়িত ফটোকপি।

ভর্তি ও অন্যান্য ফি—

অনলাইন আবেদন ফি: ১০০ টাকা,

রেজিস্ট্রেশন ফি : ১০০ টাকা,

কোর্স ফি (প্রতি কোর্স ৫২৫ টাকা): ৩৬৭৫ টাকা,

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আবশ্যিক) ব্যবহারিক ফি: ১০০ টাকা,

একাডেমিক ক্যালেন্ডার ফি:৫ টাকা,

ডিজিটাল আইডি কার্ড ফি: ২০০ টাকা,

পরীক্ষা ফি (প্রতি কোর্স ৫০ টাকা) : ৩৫০ টাকা,

প্রথম বর্ষ নম্বরপত্র ফি : ৭০ টাকা,

মোট আবেদন ফি: ৪৬৯৬ টাকা।

বিজ্ঞান শাখার জন্য দুটি ব্যবহারিক কোর্সের জন্য অতিরিক্ত ২০০ টাকা জমা দিতে হবে।

দরকারি তথ্য—

১. অষ্টম শ্রেণি বা সমমান পাসের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর নাম, পিতা ও মাতার নাম এবং জন্ম তারিখ ইত্যাদি প্রদত্ত সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী একই রকম হতে হবে।

২. জেএসসি বা জেডিসি পাসের ক্ষেত্রে জেএসসি বা জেডিসি সনদ অনুযায়ী হতে হবে। ২০২০ সাল কিংবা তার পরবর্তীতে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অষ্টম শ্রেণি পাশ সনদে বা প্রমাণকে বোর্ড কর্তৃক ইস্যুকৃত রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ থাকতে হবে। সনদবিহীনদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী হতে হবে।

৩. তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থীরা কোর্স ফির শতকরা ৬০ ভাগ ছাড় পাবেন।

# বিস্তারিত তথ্যের জন্য ওয়েবসাইট

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি