Samakal:
2025-10-16@13:56:51 GMT

যানজটে দিনভর নাকাল মানুষ

Published: 10th, July 2025 GMT

যানজটে দিনভর নাকাল মানুষ

সিলেট থেকে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডারবাহী ট্রাক নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলেন চালক মো. রাসেল মিয়া। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোডের খাঁটিহাতা মোড়ে এসে তিনি পৌঁছান বেলা ৩টার দিকে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ওই জায়গা থেকে নড়তে পারেননি। এই মহাসড়কে গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর দুর্ভোগে পড়েছেন চালক-যাত্রীরা।
ভুক্তভোগী, পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-আখাউড়া স্থলবন্দর সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজ চলছে। কিন্তু সড়ক যোগাযোগ চালু রাখতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হয়নি। যে কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অনেক জায়গায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। টানা বর্ষণে এসব গর্ত আরও বড় হয়েছে। একই সঙ্গে নিয়ম লঙ্ঘন করে চালকরা ওভারটেক করতে গিয়ে যানজট পাকিয়ে ফেলছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোডের ব্যবসায়ী জুনায়েদুল হক (৬০) বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এখানে কোনো বাস-ট্রাক এক ফুটও নড়েনি। যানজট নিয়ন্ত্রণে আসা পুলিশ সদস্যদের চালকরা পাত্তাই দিতে চান না। ভাঙাচোরা সড়কে চালকরা কে কার আগে যাবেন– এমন প্রতিযোগিতাই যানজটের মূল কারণ।’
বেলা আড়াইটার দিকে ভৈরবে অবস্থিত সড়ক সেতুর টোল প্লাজায় কথা হয় ট্রাকচালক কাজিম আলীর সঙ্গে। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সিলেট যাচ্ছিলেন। তিনি এখানে পৌঁছান দুপুর ১টার দিকে। কাজিম আলী বলেন, ‘দেড় ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। ১০ মিনিটের রাস্তা এসেছি চার ঘণ্টায়। কখন সিলেট পৌঁছাব, আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারবে না।’
এদিন বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সরাইলের অরুয়াইলে পাওয়া যায় আহমেদ মিয়াকে। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকায় যাবেন। এ জন্য তিশা পরিবহনের একটি বাসে উঠেন। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে বাসেই বসে আছেন। 

বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত সরাইলের বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বর, শান্তিনগর ও আশুগঞ্জের খড়িয়ালা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার অংশে যানজট ছিল তীব্র। একই যানজট ছড়িয়ে পড়ে নরসিংদীর ইটাখোলা থেকে চৈতন্য, মরজাল, বারৈচা, নারায়ণপুর, ভৈরবের জগন্নাথপুর ব্রিজ, দুর্জয় মোড় বাসস্ট্যান্ড ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজা পর্যন্ত প্রায় ২৮ কিলোমিটারজুড়ে। এ ছাড়া বুধবার রাত ১০টার দিকে আশুগঞ্জের গোলচত্বর থেকে সরাইলের বেড়তলা, শান্তিনগর, বিশ্বরোড মোড়, কুট্টাপাড়া মোড়, বাড়িউড়া পর্যন্ত যানজট ছড়িয়ে পড়ে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্র জানায়, ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার অংশ হিসেবে আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। ভারতীয় ঋণে ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। ৫ আগস্টের পর তারা কাজ বন্ধ করে দেশ ছেড়ে চলে যান। প্রায় তিন মাস পর ফিরে এলেও কাজের গতি বাড়েনি।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাষ্য, প্রকল্পের বিভিন্ন অংশে একপাশের কাজ শেষ হলেও বিপরীত পাশের কাজ শুরু হয়নি। যে কারণে ওই অংশটি সরু হওয়ায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে দু’পাশের যানবাহন একপাশ দিয়ে চালাতে হয়। ফলে সড়কে অতিরিক্ত চাপ পড়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হচ্ছে। 
ভৈরবের দুর্জয় মোড়ে দুপুরে কর্মরত ছিলেন পুলিশের টিএসআই দুলাল মিয়া। তিনি বলেন, সকাল ৬টায় এসেই যানজট পান। দুপুর পর্যন্ত তিন-চারটা করে গাড়ি সিগন্যাল থেকে ছাড়ছেন। সন্ধ্যা ৭টার পর যানবাহন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়। সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি মামুনুর রহমান বলেন, চার লেন প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ না হলে এ অবস্থার উন্নতি কঠিন। তারা যানজট নিরসনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের একাংশের পিডি শামীম আহমেদের ভাষ্য, যানবাহন চলাচল চালিয়ে যেতে সংস্কার নিয়মিতই চলছে, তবে তা অস্থায়ী। ভারী বৃষ্টি হলেই সমস্যা বেড়ে যায়। প্রকল্পের সমস্যা নিয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা চলছে। এগুলো মিটে গেলে দু-তিন মাসের মধ্যে কাজের গতি বাড়ার আশা করছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রকল প র ব শ বর ড য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

সৌম্য, মাহিদুল কেন দলে

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ধবলধোলাইয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরের মাঠের ওয়ানডে সিরিজের স্কোয়াডে যে পরিবর্তন আসবে, তা অনুমান করা যাচ্ছিল আগে থেকেই। প্রত্যাশিতভাবেই দুটি পরিবর্তন এনে আজ ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছেন নির্বাচকেরা।

গত ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর আবার ওয়ানডে দলে ফেরানো হয়েছে সৌম্য সরকারকে। দলে নতুন মুখ প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দলে সুযোগ পাওয়া মাহিদুল ইসলাম। গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছে মাহিদুলের, জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত তিনি খেলেছেন ওই একটি ম্যাচই। সৌম্য ও মাহিদুলকে জায়গা দিতে ছিটকে গেছেন ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও পেসার নাহিদ রানা।

একবার দলে আসা, আবার দল থেকে বাদ পড়াটা সৌম্যের জন্য এখন নিয়মিতই হয়ে গেছে। তাঁদে দলে ফেরানোর ব্যাখ্যায় বিসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ বলেছেন, ‘তিনি অনেক অভিজ্ঞ একজন খেলোয়াড়। প্রায় ৮০টির (৭৬টি) মতো ওয়ানডে খেলে ফেলেছেন, প্রায় ১০ বছর ধরে খেলছেন। গত বছরের নভেম্বরের দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই তাঁর ব্যাটিংয়ে যথেষ্ট সফলতা ছিল। সেই দলটার সঙ্গেই আমরা আবার খেলছি। লিটন দাস যেহেতু দলে নেই, একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় হিসেবে আমরা সৌম্য সরকারকে নিয়েছি।’

গত বছর একটি টেস্ট খেলা মাহিদুল এর আগে টি–টোয়েন্টি দলেও সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু ম্যাচ খেলা হয়নি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৯৬ ম্যাচে ৪ সেঞ্চুরি ও ২৮ ফিফটিতে ৩৪২৯ রান তাঁর। গত বছর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডানের হয়ে প্রায় ৪৮ গড়ে রান করেছিলেন ৪৩১। গত মে মাসে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে নিজের সর্বশেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে সেঞ্চুরিও করেছিলেন মাহিদুল।

তাঁকে দলে নেওয়ার ব্যাখ্যায় প্রধান নির্বাচক বলেছেন, ‘দলের মিডল অর্ডারের প্রায় সবাই রানখরায় আছে। তো সেই জায়গায় আমরা মাহিদুলকে এনেছি। পরের বিশ্বকাপের জন্য কলেবর বৃদ্ধি করতে যাঁরা সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী থাকবেন, তার মধ্য থেকে মাহিদুল ইসলামের নামটা নিশ্চয়ই অনেক উজ্জ্বল।’

আরও পড়ুনওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দল ঘোষণা, প্রথমবার ডাক পেলেন মাহিদুল৪ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ