মুন্সিগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার সঙ্গে জেলা শহরের সংযোগ স্থাপনকারী প্রধান সড়কটি হলো মুক্তারপুর তেলের পাম্প থেকে মানিকপুর পর্যন্ত সড়ক। অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি বর্তমানে চরম বেহাল। যান চলাচল প্রায় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
কিছুদিন আগে ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটির সংস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই সড়কটি আগের চেয়ে আরও খারাপ হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়সারাভাবে কাজ করেছে, ব্যবহার করেছে নিম্নমানের উপকরণ। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কটি ভেঙে গিয়ে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে।
একটি জেলা শহরের প্রবেশপথের এমন করুণ অবস্থা সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি যানবাহন। ফলে বাধ্য হয়ে ভাঙা সড়ক দিয়েই মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতালে যেতে হচ্ছে।
সড়কটির এমন করুণ অবস্থার পেছনে মূলত দুর্নীতিই দায়ী। কোথায় পানি জমে, কোথায় ঢালু রাখা প্রয়োজন—এসব মৌলিক বিষয়ও পরিকল্পনায় উপেক্ষিত ছিল। প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর জবাবদিহির অভাব ও নজরদারির ঘাটতির কারণেই আজ এ দুরবস্থা।
সড়কের খারাপ অবস্থার জন্য এবং এর পেছনের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে মুন্সিগঞ্জ শহরের সাধারণ মানুষ এখন রাস্তায় নেমেছেন। তাঁরা প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হয়ে দ্রুত সংস্কার ও দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
মো.
রাসেল ভূঁইয়া
খলিফাবাড়ী, সিপাহীপাড়া, মুন্সিগঞ্জ
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মেঘনার জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়কে ধস, দুই উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
মেঘনা নদীর জোয়ারের পানির তোড়ে সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে যাওয়ায় নোয়াখালীর হাতিয়া ও লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। হাতিয়া ও রামগতি উপজেলার মাঝামাঝি এই সেতুর অবস্থান। আর ধসে পড়া সংযোগ সড়কটি পড়েছে রামগতির তেগাছিয়া বাজারে। আজ মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে প্রবল জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে পড়ে। এতে স্থানীয় স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ দুই উপজেলার বাসিন্দারা যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, সেতুর পশ্চিম পাশের সংযোগ সড়কের একাংশের মাটি সরে ধসে পড়েছে। বিষয়টি রামগতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) জানানো হয়েছে। তবে বিকেল নাগাদ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ধসের কারণে সড়কটি দিয়ে যানবাহন, এমনকি মানুষজনের চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মতিন প্রথম আলোকে বলেন, দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী তেগাছিয়া বাজারের খালের ওপর নির্মিত সেতু দিয়ে উভয় উপজেলার বাসিন্দারা তেগাছিয়া বাজারে যাতায়াত করেন। তেগাছিয়া বাজারের বড় অংশটি হাতিয়ার মধ্যে। আরেক অংশ রামগতি সীমানার ভেতরে। এ ছাড়া স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক ও সেতু।
স্থানীয় টাংকির বাজারের ঘাটে আসা ইলিশ লক্ষ্মীপুর হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায় এই সড়ক দিয়ে। তাই সেতুর সড়ক বিধ্বস্ত হওয়ায় দুটি উপজেলার মাছ ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দ্রুত সংযোগ সড়ক মেরামত না করলে মূল সেতুই ঝুঁকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা ওই এলাকার বাসিন্দাদের।
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রামগতি উপজেলা প্রকৌশলী স্নেহাল রায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, হাতিয়া-রামগতি উপজেলা সড়কের তেগাছিয়া বাজারের খালের ওপর নির্মিত ৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির সংযোগ সড়কের কিছু অংশ জোয়ারের পানির তোড়ে ভেঙে গেছে বলে শুনেছেন। কিন্তু পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার বিষয়টি তাঁকে কেউ জানায়নি। তিনি বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে কথা বলে দ্রুত যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করবেন।