জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনোয়ারা কারাগারে
Published: 29th, May 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে হত্যাচেষ্টার অভিযোগের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এস এম আনোয়ারা বেগমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
আনোয়ারা বেগমের আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার দায়ের করা হত্যাচেষ্টার মামলায় আনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করে পুলিশ। আসামিপক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, আনোয়ারা বেগম দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপনা করেছেন। ২০২১ সালে তিনি অবসরে যান। অবসরের পর কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না। তাঁকে হয়রানি করার জন্য এই মামলায় তাঁর নাম দেওয়া হয়েছে। তিনি জামিন দিলে পালাবেন না।
আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আনোয়ারা বেগমের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
আনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে ওই মামলা হয় রাজধানীর সূত্রাপুর থানায়। সূত্রাপুর থানার পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, গত বছরের ১৯ জুলাই রায়সাহেব বাজারের কাছে স্টার হোটেলের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আন্দোলনকারী ও ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে করে গুলি চালায়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ ঘটনা ঘটান। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার চোখে গুলি লাগে। বাঁ চোখ দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। এ ঘটনায় সুজন মোল্লা বাদী হয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সূত্রাপুর থানায় মামলা করেন।
মামলার ঘটনার সঙ্গে আনোয়ারা বেগম জড়িত বলে আদালতকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সূত্রাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এ কে এম হাসান মাহমুদুল কবীর।
সূত্রাপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, গতকাল সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে আনোয়ারা বেগমকে আটক করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সূত্রাপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে থানায় নিয়ে আসে।
আনোয়ারা বেগম একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য ছিলেন।
আরও পড়ুনজুলাইয়ে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার জগন্নাথের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আনোয়ারা বেগমকে আদালতে নেওয়া হবে আজ ৬ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব গমক
এছাড়াও পড়ুন:
এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে রিটের শুনানি মুলতবি
এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি পৃথক বিভাগ প্রতিষ্ঠার জন্য জারি করা অধ্যাদেশটির বৈধতা নিয়ে রিটের শুনানি এক সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই সময় পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামের নতুন দুটি বিভাগ প্রতিষ্ঠায় গত ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জুয়েল আজাদ ১৭ মে রিটটি করেন। আজ রিটটি শুনানির জন্য আদালতের কার্যতালিকায় ৭৯ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী জুয়েল আজাদ শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী ও আখতার হোসেন মো. আব্দুল ওয়াহাব।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, এক সপ্তাহ সময় চাওয়া হলে আদালত তা মঞ্জুর করেছেন। আগামী সপ্তাহে রিটটি শুনানির জন্য আসবে।
‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’ শিরোনামের ওই অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, রাজস্ব নীতি বিভাগ কর আইন প্রয়োগ ও কর আদায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। রাজস্ব সংগ্রহের মূল কাজ করবে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
আরও পড়ুনএনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ প্রতিষ্ঠার অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে রিট১৭ মে ২০২৫রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, সংবিধানের ২৬, ৩১ ও ২৯(১) অনুচ্ছেদের আলোকে ওই অধ্যাদেশটি কেন সাংঘর্ষিক এবং আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় রাজস্ব ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি সংস্কার বিষয়ে অংশীজনদের (দলগত) প্রস্তাব প্রকাশ করতে বিবাদীদের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রুল বিচারাধীন অবস্থায় ওই অধ্যাদেশের কার্যক্রমও স্থগিত চাওয়া হয়েছে রিটে। আইনসচিব ও অর্থসচিবকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।