টেস্ট ক্রিকেটকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বাগত জানাচ্ছে: বুলবুল
Published: 22nd, June 2025 GMT
টেস্ট ক্রিকেটের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত উৎসবে যোগ দিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্ট আমিনুল ইসলাম বুলবুল অবস্থান করছেন রাজশাহীতে। পদ্মাপাড়ের শহরে ক্রিকেট ভক্তদের উচ্ছ্বাস দেখে অভিভূত বুলবুল।
এ সময় তিনি রাজশাহীতে ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোরও আশ্বাস দেন, “রাজশাহীতে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট হয় মাঝেমধ্যে। আমরা গ্রেটার রাজশাহী রিজিয়নের মধ্যে প্রিমিয়ার লিগ চালু করব। এখানে আমরা ক্রিকেট অ্যাকটিভিটি আরও বাড়াব। এখানে ক্রিকেট ট্রেনিং প্রোগ্রাম আরও বাড়ানো হবে।”
রোববার (২২ জুন) রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ টেস্ট স্ট্যাটাসের ২৫ বছর পূর্তিতে দেশব্যাপী অনূর্ধ্ব-১২ সিক্স-এ-সাইড ক্রিকেট প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বুলবুল। এ সময় সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন।
আরো পড়ুন:
গল টেস্টে ড্র বাংলাদেশের জন্য ‘মোরাল ভিক্টরি’
আগামী বছরে রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ঘোষণা
বুলবুল জানান, টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি মানুষ আগ্রহ দেখাচ্ছে, “আমরা টেস্ট ক্রিকেটকে সামনের দিকে দেখতে চাই। এটা একটা লঞ্চ প্যাড হিসেবে দেখলাম বাংলাদেশের মানুষ—বিশেষ করে গতকাল খুলনায়, আজ রাজশাহীতে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে টেস্ট ক্রিকেটকে স্বাগত জানাচ্ছে। আপনারা জানেন, বাংলাদেশ অলরেডি ফুল মেম্বার। ২৫ বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেট খেলছে। আমরা এই আয়োজন সবসময় করতে চাই।”
বিসিবি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বুলবুল জানিয়েছেন দেশের আনাচে-কানাচে ক্রিকেট ছড়িয়ে দেওয়ার কথা। রাজশাহীতেও তার কণ্ঠে ছিল সেই ইঙ্গিত।
“আপনারা জানেন যে, ক্রিকেটকে ডিসেন্ট্রালাইজ করতে যাচ্ছি। সব জায়গায় ক্রিকেট ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছি। কীভাবে এখানে আরও বেশি ক্রিকেট খেলা হতে পারে, কীভাবে রাজশাহী থেকে জাতীয় দলে খেলোয়াড়েরা যুক্ত হতে পারেন, কীভাবে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আপনারা সাহায্য করতে পারেন—সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করব।”
ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কালীগঞ্জে ভুয়া ফেসবুকে আইডি খুলে অপপ্রচার ও প্রতারণা করছে অজ্ঞাত চক্র
গাজীপুরের কালীগঞ্জে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফেক (ভুয়া) আইডি খুলে সম্মানি ব্যক্তি ও পেশাজীবীদের ঘায়েল করতে চালানো হচ্ছে ভয়াবহ অপপ্রচার। প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইলিং এবং সামাজিকভাবে হেয় করাসহ নানা সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বারবার অভিযোগ জানালেও আইটি শাখার ‘দুর্বলতা’র অজুহাতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
অপরদিকে, পুলিশ জানিয়েছে, ভুয়া ফেসবুক আইডি নজরদারিতে থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না।
আরো পড়ুন:
তদবিরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি, ষড়যন্ত্রকারীরা পেছনে লেগেছে: তথ্য উপদেষ্টা
গোপালগঞ্জে সামরিক অভিযানের ভিডিওটি ভুয়া: বাংলা ফ্যাক্ট
পুলিশ ও একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর স্থানীয় একটি অজ্ঞাত চক্র ফেসবুককে অপতৎপরতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। রাজনৈতিক বিরোধিতা ও ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে সামাজিকভাবে সম্মান ক্ষুণ্ন করাই তাদের উদ্দেশ্য। বিশেষ করে, যারা বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেছেন কিংবা অন্য দলের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন, তারা এ চক্রের প্রথম টার্গেট। ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সাংবাদিক ও রাজনীতিকদের ছবি, নাম ও তথ্য ব্যবহার করে চালানো হচ্ছে মানহানিকর প্রচারণা।
২০২২ সালের সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী, কালীগঞ্জ উপজেলায় জনসংখ্যা ৩ লাখ ১০ হাজার ৯৪৩ জন। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। তাদের অনেকের হাতে আছে স্মার্টফোন। তরুণদের মধ্যে কেউ কেউ মজা কিংবা পরিচয় গোপন রাখতে ভুয়া আইডি খুললেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব আইডি ব্যবহার হচ্ছে অপরাধমূলক উদ্দেশ্যে।
এসব ভুয়া ফেসবুক আইডির মূল উদ্দেশ্যই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা। আকর্ষণীয় নারী বা পুরুষের ছবি ব্যবহার করে তৈরি করা হয় ভুয়া প্রোফাইল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছবিগুলো গুগল ইমেজ থেকে নেওয়া, খুঁজলেই পাওয়া যায় একাধিকবার ব্যবহারের প্রমাণ।
স্থানীয় এক সাংবাদিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, “একটি সংঘবদ্ধ চক্র নিয়মিত ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে সমাজে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। অনেক সম্মানি মানুষ তাদের টার্গেটে পরিণত হচ্ছেন। আমরা চাই, বিটিআরসি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিক।”
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নিয়ে অপরাধ বিশেষজ্ঞরাও সতর্ক করছেন। তাদের মতে, ফেসবুক বন্ধুত্বের মাধ্যম হলেও কিছু ব্যক্তি একে ব্যবহার করছেন প্রতারণা ও মানহানির মাধ্যম হিসেবে। ভুয়া আইডি তৈরি এবং তা দিয়ে ক্ষতিকর পোস্ট, মন্তব্য বা ভিডিও শেয়ার করাও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
সচেতন নাগরিকরা বলছেন, ফেক আইডি আজ শুধুই বিরক্তির নয়, এটি পরিণত হয়েছে ভয়ঙ্কর সামাজিক ফাঁদে। দ্রুত এসব আইডি শনাক্ত করে ব্যবহারকারীদের আইনের আওতায় না আনলে সামাজিক অস্থিরতা ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা আরো বাড়বে।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন বলেছেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া আইডি ব্যবহার করে অপপ্রচার চালানো ও হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। কেউ যদি থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ করেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা গ্রহণ করা হবে এবং পুলিশ সদর দপ্তরের আইসিটি শাখার সহায়তায় প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ইতোমধ্যে কয়েকটি সন্দেহভাজন ফেক আইডিকে নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে। তবে, অধিকাংশ ভুক্তভোগী থানায় এসে অভিযোগ দিচ্ছেন না। এ ধরনের অপরাধ রোধে সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি সকলকে পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, “আইসিটি বিভাগ এ বিষয়ে তৎপর আছে। ইতোমধ্যে কিছু ভুয়া আইডি শনাক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে সেগুলো যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/রফিক