‘শাপলা’ প্রতীক হিসেবে চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি: নাহিদ ইসলাম
Published: 22nd, June 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জাতীয় ফুল ‘শাপলা’কে দলীয় প্রতীক হিসেবে চায়। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আজ রোববার সন্ধ্যা সাতটার দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষদিন ছিল আজ। এদিন নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন জমা দেয় কয়েক ডজন দল। বিকেলে আবেদন জমা দেয় নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপিও।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা তিনটি মার্কার আবেদন করেছি। শাপলা, কলম ও মোবাইল। কিন্তু আমাদের প্রথম পছন্দ হচ্ছে শাপলা এবং আমরা আশা করছি যে জনগণের মার্কা হিসেবে, গণ–অভ্যুত্থানের মার্কা হিসেবে, সাধারণ গ্রামবাংলার প্রতীক হিসেবে শাপলা মার্কা জাতীয় নাগরিক পার্টি পাবে এবং এই শাপলা মার্কা নিয়েই আমরা আগামী দিনে জনগণের ভেতরে কাজ করব। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।’
নিবন্ধনের জন্য ইসির শর্তের অধিক পূরণ করা হয়েছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই জাতীয় নাগরিক পার্টি নিবন্ধন পাবে। নিবন্ধিত দল হিসেবে জনগণের কাছে যাবে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, ‘সেখানে আমরা
প্রবাসীদের ভোটাধিকার যেকোনো মূল্যে রক্ষা করার কথা বলেছি। কোন প্রক্রিয়ায় প্রবাসী ভোটাধিকারটা নিশ্চিত করা হবে, সে বিষয়ে কমিশন এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে দ্রুত সেটি করা হবে বলে জানিয়েছে।’
শাপলা প্রতীক চাওয়ার বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের আইনগুলো আমরা পর্যালোচনা করেছি। দেখেছি সে আইনগুলোতে এ ধরনের কোনো বাধা বা নিষেধ নেই। জাতীয় ফল হিসেবে কাঁঠাল একটি দলের মার্কা হিসেবে অলরেডি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা দেখিনি বলে আমরা এটিতে আবেদন করেছি। জাতীয় প্রতীকের একটা কথা এসেছে। জাতীয় প্রতীক কিন্তু কেবল শাপলা নয়। শাপলা, দুই পাশে ধানের শীষবেষ্টিত পাটপাতা ও চারটি তারকা—এগুলো মিলেই কিন্তু জাতীয় প্রতীক। সে ক্ষেত্রে আপনারা দেখবেন ধানের শীষ এবং তারকা বা তারা এ দুটিও দুটি দলের মার্কা হিসেবে রয়েছে। ফলে কোনো ধরনের আইনগত সমস্যা আমরা দেখি না।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন যে এখন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কারের একটি কার্যক্রম চলছে এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতির কাছে কমিটমেন্ট দিয়েছেন যে জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই সনদ হবে ঐকমত্যের ভিত্তিতে। ফলে আমাদের কাছে এখনো প্রধান অগ্রাধিকার হচ্ছে কিন্তু সংস্কার। ফলে সংস্কারের ওপর নির্ভর করেই নির্বাচনের বিষয়ে আমরা আসলে সিদ্ধান্ত নেব। আর এনসিপির পক্ষ থেকে আমরা বলেছি যে জুলাই ঘোষণাপত্র, সংস্কার, গণপরিষদ ও বিচারের রোডম্যাপ—সবকিছু মিলিয়েই আমাদের এই মুহূর্তের রাজনীতি।’
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের আবেদন জমা দেওয়ার সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম ন বন ধ ন র জন এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন হলে দেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে: সেনাসদর
দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরো ভালো হবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) সেনাসদরে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, সদর দপ্তর আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (জিওসি আর্টডক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান।
আরো পড়ুন:
‘নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বহাল থাকবে’
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ, নির্বাচনি প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা
তিনি বলেন, “দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সে রূপরেখার মধ্যে সময়সীমাও দেওয়া আছে। আমরা আশা করি নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরো ভালো হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আারো স্বাভাবিক হবে এবং সেনাবাহিনী তখন সেনানিবাসে ফিরে যেতে পারবে। আমরা সেদিকে তাকিয়ে আছি।”
লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান আরো বলেন, “সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের যেটুকু রূপরেখা প্রণয়ন করেছে সেটার ওপর ভিত্তি করে সেনাবাহিনী যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। আমাদের যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এখন সীমিত আকারে চলছে তার মধ্যে নির্বাচনের সময় আমাদের কী করণীয় সেটাকে ফোকাসে রেখেই প্রশিক্ষণ করছি।”
তিনি আরো বলেন, “প্রশিক্ষণের সঙ্গে একটি বিষয় সম্পর্কিত তা হলো শান্তিকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব হলো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। আমরা বলে থাকি ‘উই ট্রেইন এজ উই ফাইট'।”
গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী বাইরে আছে উল্লেখ করে সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, “নির্বাচন পর্যন্ত বা তার কিছুটা পরেও যদি বাইরে থাকতে হয় তাহলে আরো কিছুদিন বাইরে থাকতে হবে। এতে করে আমাদের প্রশিক্ষণ বিঘ্নিত হচ্ছে।”
লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান বলেন, “এর পাশাপাশি যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গত ১৫ মাস যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে সেনাবাহিনী, এটা সহজ পরিস্থিতি ছিল না। এ ধরনের পরিস্থিতি বাংলাদেশ প্রতিদিন ফেস করেনি। এজন্য আমরাও চাই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং আমরা সেনানিবাসে ফেরত আসতে পারি।”
গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী বেসামরিক প্রশাসনের সহয়তায় নিয়জিত আছে এবং অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করছে। এই ১৫ মাস সেনাবাহিনী অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে,” বলেও উল্লেখ করেন এই কর্মকর্তা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ