জামালপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বহিষ্কার
Published: 23rd, June 2025 GMT
জামালপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) নুরুল মোমেন ও সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলামের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃত নেতার নাম হাবিবুর রহমান (৩৮)। তিনি জামালপুর শহরের শাহপুর এলাকার বাসিন্দা। জামালপুর শহর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য ছিলেন তিনি। চাঁদাবাজির ৫০ হাজার টাকাসহ গত শুক্রবার গভীর রাতে জামালপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন যৌথ বাহিনীর সদস্যরা।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকায় এবং সুনির্দিষ্ট চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সংসদের নির্দেশনা মোতাবেক হাবিবুর রহমানকে বহিষ্কার করা হলো।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) নুরুল মোমেন বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ধরনের কাজের সঙ্গে যাঁরাই জড়িত হবেন, তদন্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে হাবিবুরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা শুক্রবার রাতে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। ওই রাতেই তাঁকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে গত শনিবার সকালে সদর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
টাকা ছাপানো-বণ্টনে বছরে খরচ ২০ হাজার কোটি টাকা, বাড়াতে হবে ক্যাশলেস লেনদেন: গভর্নর
টাকা ছাপানো, সংরক্ষণ, সারা দেশে পরিবহন ও বণ্টনে প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয় বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি মনে করেন, রাষ্ট্রের এ বিপুল খরচ বাঁচাতে হলে নগদ অর্থ ব্যবহারের প্রবণতা কমিয়ে আনতে হবে। ক্যাশলেস বা নগদ অর্থ ছাড়াই লেনদেন বাড়াতে হবে।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫ দিন’শীর্ষক সংলাপে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এ কথা বলেন। এ সংলাপ আয়োজন করে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
সংলাপে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, প্রতিবছর টাকা ছাপানো, পরিবহন ও বণ্টনে বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচ হয়। এ খরচ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে কিউআর কোডভিত্তিক লেনদেন জনপ্রিয় করতে নীতিগত সহায়তা ও প্রযুক্তি অবকাঠামো তৈরির কাজ করছে।
আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে কিউআর কোড ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ভোক্তা—সবার জন্য লেনদেন হবে দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছ। ক্যাশের ব্যবহার কমলে রাষ্ট্রীয় খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।
সংলাপে ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য স্মার্টফোনের গুরুত্ব তুলে ধরেন আহসান এইচ মনসুর। বর্তমানে আর্থিক লেনদেন, বিল পরিশোধ বা ইন্টারনেটভিত্তিক যেকোনো সেবা নিতে স্মার্টফোনের ব্যবহার অপরিহার্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা স্মার্টফোনের দাম কমাতে কাজ করছেন। ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে ভালো মানের স্মার্টফোন বাজারে আনতে পারলে শতভাগ মানুষকে স্মার্টফোনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
গভর্নর আরও বলেন, এ লক্ষ্য অর্জনে ইন্টারনেটের দাম আরও কমাতে হবে এবং সেবার মান বাড়াতে হবে।
আলোচনায় নগরায়ণ ও আবাসন খাতের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশে এখনো কয়েক মিলিয়ন নতুন আবাসনের প্রয়োজন রয়েছে। নগরকেন্দ্রিক উন্নয়ন অবশ্যম্ভাবী। কেননা, মানুষ গ্রামে ফেরত যাবে না। তাই সাশ্রয়ী আবাসন পরিকল্পনা নিয়ে ভাবতে হবে। ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা জমি ডেভেলপারদের সঙ্গে অংশীদারত্বে ব্যবহারের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, এক বছরে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাংক খাতে সংস্কারসহ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উদ্যোগ রপ্তানি খাতকে ভালো অবস্থায় রেখেছে ও বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে দেশকে রক্ষা করেছে। কিন্তু দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না। কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হচ্ছে না। রাজস্ব আহরণ বাড়ছে না। এগুলো উদ্বেগের বিষয়।
সিপিডির সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।