সিদ্ধিরগঞ্জে শাহিন সিকদার (৪২) ও হাফিজা আক্তার (২৯) নামে প্রেমিক জুটিকে অপহরণ করে মুক্তিপন দাবির ঘটনায় ৫ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এসময় ১টি হাতুড়ী ও ২টি স্টীলের পাইপ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাত ১১টায় সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকাস্থ মিতালী মার্কেটের ১নং ভবনের ২য় তলার একটি কক্ষ থেকে অপহৃতদের উদ্ধার পূর্বক অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, বরগুনা জেলার তালতলী থানার চন্দনতলা এলাকার সামছুল আলমের ছেলে ও সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি বাতেন পাড়া এলাকার সোহাগের বাড়ীর ভাড়াটিয়া মো: সাখাওয়াত হোসেন (৩৮), চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার লক্ষীপুর এলাকার মৃত মনু মিয়ার ছেলে ও মিজমিজি সাহেবপাড়া এলাকার ফজলুর বাড়ীর ভাড়াটিয়া মহিন উদ্দিন (৩৬), ফরিদপুর জেলার সালথা থানার বট্টি এলাকার আক্কাস শেখের ছেলে ও সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি সাহেবপাড়া এলাকার ভাড়াটিয়া মো: হৃদয় শেখ (৩০), চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানার ডালিমদা এলাকার শাহ আলমের ছেলে ও সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি সাহেবপাড়া খলিলের আয়রণ কারখানার শ্রমিক মো: ইমরান (২০) ও মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার কলমা এলাকার মৃত আবুল হোসেন মৃধার ছেলে ফতুল্লার সাহেবপাড়া মিতালী মার্কেটের ৫ম তলার বাসিন্ধা মো: খলিল (৩৪)।

অপহৃতরা হলো, পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ থানার শ্রীনগর এলাকার আব্দুল কুদ্দুস সিকদারের ছেলে শাহিন সিকদার ও একই জেলা ও থানার উত্তর বাজিতা এলাকার গাফ্ফার হাওলাদারের মেয়ে ও সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি বাতানপাড়া এলাকার ভাড়াটিয়া হাফিজা আক্তার।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অপহৃত শাহিন সিকদার পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তাঁর গ্রামের বাড়ীতে একটি মুদি দোকান রয়েছে। হাফিজা আক্তার এবং তিনি পাশাপাশি ইউনিয়নে বসবাস করে। সেই সুবাদে হাফিজা আক্তার সম্পর্কে তাঁর প্রতিবেশী ও পূর্ব পরিচিত।

হাফিজা আক্তার তার পূর্ব পরিচিত হওয়ায় তার সাথে কথা বার্তার একপর্যায়ে তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তারপর হাফিজা আক্তারের প্রথম সংসারে বনিবনা না হওয়ায় তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

পরবর্তীতে হাফিজা আক্তার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি বাতেনপাড়া এলাকায় ভাড়ায় বসবাস করে গার্মেন্টসে চাকরী করতে থাকে এবং তারা উভয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা বার্তা বলতে থাকে। একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় শাহিন হাফিজা আক্তারের সাথে দেখা করার জন্য সাইবোর্ড ফুটওভার ব্রীজের পূর্ব পাশে রাস্তার উপর এসে পৌছলে হাফিজা আক্তারের সাথে দেখা হয়। 

এসময় হাফিজা আক্তারের সাথে কথাবার্তার একপর্যায়ে ১নং বিবাদী কৌশলে তাদের কাছে এস কোন অজুহাত ছাড়াই তাদের সাথে খারাপ আচরণ করতে থাকে। তখন শাহিন তার সাথে কথা কাটাকাটি করলে অন্যান্য বিবাদীরা তাদের কাছে আসে এবং তারপর সকল বিবাদীরা পরিকল্পনা অনুযায়ী জোরপূর্বক অজ্ঞাতনামা একটি অটোতে শাহিন ও হাফিজা আক্তারকে উঠাইয়া অপহরণ করে সাইনবোর্ড এলাকার মিতালী মার্কেটের ১নং ভবনের ২য় তলায় অজ্ঞাত একটি রুমের ভিতরে নিয়া তাদের আটক করে রাখে।

তারপর বিবাদীরা মুক্তিপণ বাবদ তাদের কাছে নগদ এক লাখ টাকা দাবী করে। তখন তারা বিবাদীদের দাবীকৃত টাকা প্রদানে অস্বীকার করলে বিবাদীরা লোহার হাতুড়ী ও এসএস স্টীলের পাইপ দ্বারা শাহীনকে এলোপাথারীভাবে মারপিট করতে থাকে। তারপর বিবাদীদের ভয়ে শাহীন তার মানিব্যাগে থাকা নগদ ৭ হাজার টাকা দেয় এবং বিবাদীরা অবশিষ্ট টাকার জন্য তাকে আরও মারপিট করতে থাকলে সে আত্মীয় স্বজনকে অবহিত করে। 

তারপর তার আত্মীয়-স্বজনরা বিষয়টি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ বর্ণিতস্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে এবং অপহরণের সাথে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় আরো অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

এব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুর আলম জানান, এ ঘটনায় আজ থানায় একটি মামলা দায়ের শেষে আসামিদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ অপহরণ এল ক র ত রপর

এছাড়াও পড়ুন:

গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে: মির্জা ফখরুল

৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন জানিয়েছে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে তারা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে পুস্পস্তবক অর্পন করেন। এসময় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

পরে সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকের দিনটি শুধু বিএনপির নয়, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত মানুষের কাছেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ৭ নভেম্বরের চেতনা আমাদের শেখায় জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে না।”

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “আজকে বাংলাদেশে বিভিন্ন রকম, এই গণ-অভ্যুত্থানের পরে বিভিন্ন রকমভাবে একটা প্রচেষ্টা, চক্রান্ত চলছে গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার জন্য।”

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস আমাদের সেই পথেই যেতে অনুপ্রাণিত করে, যে পথে সত্যিকার অর্থে আমরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারব। একটা সমৃদ্ধ রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারব। জনগণের ভোটের অধিকারকে সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠা করতে পারব। বিচারের অধিকার নিশ্চিত করতে পারব। সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, বিএনপি এগিয়ে যাব। বিএনপি সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে।”

১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দী থেকে উদ্ধার করে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব অর্পণের কাজটি বাংলাদেশের অগ্রগতির মোড় ঘোরানো দিক ছিল। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন।”

তিনি আরো বলেন, “রাষ্ট্র পরিচালনার চার বছরে জিয়াউর রহমান দেশে আমূল পরিবর্তন আনেন। তিনি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, তা দেশকে পরবর্তীকালে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।”

বিএনপিকে আলোচনায় বসতে জামায়াতের আহ্বান সম্পর্কিত বিষয়ে মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি নতুন করে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পাঠানো বক্তব্যই বিএনপির চূড়ান্ত বক্তব্য বলে উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব।

এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমদসহ দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে সকাল থেকে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দলসহ বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তারা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে এসে নেতারা সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫১ বছর ধরে পত্রিকা পৌঁছে দিচ্ছেন সৈয়দপুরের গফফার
  • চালককে চেতনানাশক খাইয়ে অটোরিকশা ছিনতাই করেন তাঁরা
  • নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল
  • আন্তর্জাতিক খতমে নবুয়ত মহাসম্মেলন সফল করতে নগরীতে গণমিছিল
  • গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে: মির্জা ফখরুল