সিদ্ধিরগঞ্জে প্রেমিক-প্রেমিকাকে অপহরণ করে মুক্তিপন দাবি, গ্রেপ্তা
Published: 25th, June 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জে শাহিন সিকদার (৪২) ও হাফিজা আক্তার (২৯) নামে প্রেমিক জুটিকে অপহরণ করে মুক্তিপন দাবির ঘটনায় ৫ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এসময় ১টি হাতুড়ী ও ২টি স্টীলের পাইপ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাত ১১টায় সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকাস্থ মিতালী মার্কেটের ১নং ভবনের ২য় তলার একটি কক্ষ থেকে অপহৃতদের উদ্ধার পূর্বক অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, বরগুনা জেলার তালতলী থানার চন্দনতলা এলাকার সামছুল আলমের ছেলে ও সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি বাতেন পাড়া এলাকার সোহাগের বাড়ীর ভাড়াটিয়া মো: সাখাওয়াত হোসেন (৩৮), চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার লক্ষীপুর এলাকার মৃত মনু মিয়ার ছেলে ও মিজমিজি সাহেবপাড়া এলাকার ফজলুর বাড়ীর ভাড়াটিয়া মহিন উদ্দিন (৩৬), ফরিদপুর জেলার সালথা থানার বট্টি এলাকার আক্কাস শেখের ছেলে ও সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি সাহেবপাড়া এলাকার ভাড়াটিয়া মো: হৃদয় শেখ (৩০), চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানার ডালিমদা এলাকার শাহ আলমের ছেলে ও সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি সাহেবপাড়া খলিলের আয়রণ কারখানার শ্রমিক মো: ইমরান (২০) ও মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার কলমা এলাকার মৃত আবুল হোসেন মৃধার ছেলে ফতুল্লার সাহেবপাড়া মিতালী মার্কেটের ৫ম তলার বাসিন্ধা মো: খলিল (৩৪)।
অপহৃতরা হলো, পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ থানার শ্রীনগর এলাকার আব্দুল কুদ্দুস সিকদারের ছেলে শাহিন সিকদার ও একই জেলা ও থানার উত্তর বাজিতা এলাকার গাফ্ফার হাওলাদারের মেয়ে ও সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি বাতানপাড়া এলাকার ভাড়াটিয়া হাফিজা আক্তার।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অপহৃত শাহিন সিকদার পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তাঁর গ্রামের বাড়ীতে একটি মুদি দোকান রয়েছে। হাফিজা আক্তার এবং তিনি পাশাপাশি ইউনিয়নে বসবাস করে। সেই সুবাদে হাফিজা আক্তার সম্পর্কে তাঁর প্রতিবেশী ও পূর্ব পরিচিত।
হাফিজা আক্তার তার পূর্ব পরিচিত হওয়ায় তার সাথে কথা বার্তার একপর্যায়ে তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তারপর হাফিজা আক্তারের প্রথম সংসারে বনিবনা না হওয়ায় তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
পরবর্তীতে হাফিজা আক্তার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি বাতেনপাড়া এলাকায় ভাড়ায় বসবাস করে গার্মেন্টসে চাকরী করতে থাকে এবং তারা উভয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা বার্তা বলতে থাকে। একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় শাহিন হাফিজা আক্তারের সাথে দেখা করার জন্য সাইবোর্ড ফুটওভার ব্রীজের পূর্ব পাশে রাস্তার উপর এসে পৌছলে হাফিজা আক্তারের সাথে দেখা হয়।
এসময় হাফিজা আক্তারের সাথে কথাবার্তার একপর্যায়ে ১নং বিবাদী কৌশলে তাদের কাছে এস কোন অজুহাত ছাড়াই তাদের সাথে খারাপ আচরণ করতে থাকে। তখন শাহিন তার সাথে কথা কাটাকাটি করলে অন্যান্য বিবাদীরা তাদের কাছে আসে এবং তারপর সকল বিবাদীরা পরিকল্পনা অনুযায়ী জোরপূর্বক অজ্ঞাতনামা একটি অটোতে শাহিন ও হাফিজা আক্তারকে উঠাইয়া অপহরণ করে সাইনবোর্ড এলাকার মিতালী মার্কেটের ১নং ভবনের ২য় তলায় অজ্ঞাত একটি রুমের ভিতরে নিয়া তাদের আটক করে রাখে।
তারপর বিবাদীরা মুক্তিপণ বাবদ তাদের কাছে নগদ এক লাখ টাকা দাবী করে। তখন তারা বিবাদীদের দাবীকৃত টাকা প্রদানে অস্বীকার করলে বিবাদীরা লোহার হাতুড়ী ও এসএস স্টীলের পাইপ দ্বারা শাহীনকে এলোপাথারীভাবে মারপিট করতে থাকে। তারপর বিবাদীদের ভয়ে শাহীন তার মানিব্যাগে থাকা নগদ ৭ হাজার টাকা দেয় এবং বিবাদীরা অবশিষ্ট টাকার জন্য তাকে আরও মারপিট করতে থাকলে সে আত্মীয় স্বজনকে অবহিত করে।
তারপর তার আত্মীয়-স্বজনরা বিষয়টি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ বর্ণিতস্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে এবং অপহরণের সাথে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় আরো অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
এব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুর আলম জানান, এ ঘটনায় আজ থানায় একটি মামলা দায়ের শেষে আসামিদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ অপহরণ এল ক র ত রপর
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে রাজনীতি নিষিদ্ধের কথা বললেন ঢাবি ভিসি
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে আবারো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার বিষয়টি জানালেন উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাত ২টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি এই ঘোষণা দেন।
গতকাল ঢাবির ১৮টি হলে কমিটি ঘোষণা করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এরপর থেকেই ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। এদিন রাত ১২টার দিকে বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। রাত ১টার পর আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।
এসময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ঢাবি উপচার্য বলেন, “২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সেটিই বহাল থাকবে এবং প্রত্যেক হল প্রশাসন এই নীতিমালার আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।”
ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত হল কমিটি নিয়ে সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেন তিনি। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের এই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে হল পলিটিক্সের সম্পূর্ণ অবসান দাবি করেন।
এসময় তারা ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে—
ছাত্রদল কেন কমিটি দিলো উপাচার্যকে জবাব দিতে হবে; ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্রদল, শিবির, বাগছাস, বামসহ হলে এক্সিসটিং গুপ্ত কমিটি বিলুপ্ত করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের হল একাডেমিক এরিয়ায় রাজনীতির সকল কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে ছাত্ররাজনীতির পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা দিতে হবে; ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব হল কমিটি বিলুপ্ত করতে হবে; হল প্রভোস্টদের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে এবং দ্রুত ডাকসু বাস্তবায়ন করতে হবে।
ঢাকা/সৌরভ/ইভা