গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে: মির্জা ফখরুল
Published: 7th, November 2025 GMT
৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন জানিয়েছে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে তারা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে পুস্পস্তবক অর্পন করেন। এসময় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
পরে সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকের দিনটি শুধু বিএনপির নয়, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত মানুষের কাছেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ৭ নভেম্বরের চেতনা আমাদের শেখায় জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে না।”
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “আজকে বাংলাদেশে বিভিন্ন রকম, এই গণ-অভ্যুত্থানের পরে বিভিন্ন রকমভাবে একটা প্রচেষ্টা, চক্রান্ত চলছে গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার জন্য।”
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস আমাদের সেই পথেই যেতে অনুপ্রাণিত করে, যে পথে সত্যিকার অর্থে আমরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারব। একটা সমৃদ্ধ রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারব। জনগণের ভোটের অধিকারকে সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠা করতে পারব। বিচারের অধিকার নিশ্চিত করতে পারব। সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, বিএনপি এগিয়ে যাব। বিএনপি সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে।”
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দী থেকে উদ্ধার করে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব অর্পণের কাজটি বাংলাদেশের অগ্রগতির মোড় ঘোরানো দিক ছিল। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন।”
তিনি আরো বলেন, “রাষ্ট্র পরিচালনার চার বছরে জিয়াউর রহমান দেশে আমূল পরিবর্তন আনেন। তিনি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, তা দেশকে পরবর্তীকালে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।”
বিএনপিকে আলোচনায় বসতে জামায়াতের আহ্বান সম্পর্কিত বিষয়ে মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি নতুন করে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পাঠানো বক্তব্যই বিএনপির চূড়ান্ত বক্তব্য বলে উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব।
এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমদসহ দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে সকাল থেকে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দলসহ বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তারা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে এসে নেতারা সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ য় উর রহম ন র গণতন ত র ব এনপ র ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির নির্বাচনী যাত্রা শুরু ৭ নভেম্বরের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে
এবারের ৭ নভেম্বর অন্যবারের চেয়ে ভিন্ন মেজাজে উদ্যাপন করবে বিএনপি। দলটির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দিনটি উপলক্ষে সারা দেশে দলীয় কর্মসূচির মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রার্থীরা আজ শুক্রবার নানা কর্মসূচিতে অংশ নেবেন, যার মধ্য দিয়ে কার্যত বিএনপির নির্বাচনী যাত্রা শুরু হবে।
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, এবার ৭ নভেম্বর উপলক্ষে দলীয় কর্মসূচির মূল লক্ষ্যে থাকছে আগামী জাতীয় নির্বাচন। এদিন বিভাগীয়, জেলাসহ সারা দেশে আলোচনা অনুষ্ঠান ও শোভাযাত্রার পাশাপাশি জনসভার কর্মসূচি রাখা হয়েছে। এতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারসহ জনসম্পৃক্ত বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে।
আগামী নির্বাচন সামনে রেখে গত সোমবার বিএনপি প্রার্থী হিসেবে ২৩৭ জনের প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণা করে। ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’–এর কর্মসূচি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দলীয় নির্বাচনী প্রতীক ‘ধানের শীষ’–এর পক্ষে প্রচার জোরদারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। এ উপলক্ষে রাজধানীতে আজ বেলা তিনটায় বিএনপির উদ্যোগে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শোভাযাত্রা হবে। এ ছাড়া ঢাকার বিভিন্ন আসনের প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় সমাবেশসহ জনসংযোগের কর্মসূচি রেখেছেন।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব এবারের ৭ নভেম্বরকে ভিন্ন মেজাজে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তা হচ্ছে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থীদের একযোগে মাঠে নামানো।১৯৭৫ সালের ঘটনাবহুল ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে উদ্যাপন করে আসছে বিএনপি। ৭ নভেম্বর প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসার দিন।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব এবারের ৭ নভেম্বরকে ভিন্ন মেজাজে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তা হচ্ছে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থীদের একযোগে মাঠে নামানো। সে কারণে অন্যবার আলোচনা অনুষ্ঠান ও শোভাযাত্রার মধ্যে ৭ নভেম্বরের কর্মসূচি সীমাবদ্ধ থাকলেও এবার প্রায় সব আসনেই জনসভার কর্মসূচিও রাখা হয়েছে।
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আজ বেলা তিনটায় জনসভা করবে মহানগর বিএনপি। এতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব এবারের ৭ নভেম্বরকে ভিন্ন মেজাজে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচন সামনে রেখে এবারের জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা অন্যবারের চেয়ে বেশি। তাই এবারের ৭ নভেম্বর একটা ভিন্ন মেজাজে উদ্যাপিত হবে।
বরিশাল-১ (গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া) আসনে আজ ৭ নভেম্বর দলীয় কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন। বেলা তিনটায় গৌরনদী সরকারি স্কুল মাঠে তাঁর নির্বাচনী জনসভা হবে।
জহির উদ্দিন স্বপন প্রথম আলোকে বলেন, ‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে জনসভার মধ্য দিয়ে আমার নির্বাচনী যাত্রা শুরু হবে।’
একইভাবে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুরের মান্দারি বাজারে সমাবেশ করবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী। তার আগে লক্ষ্মীপুর শহরে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভা করবেন। শহীদ উদ্দীন চৌধুরীকে লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। একইভাবে খুলনা নগরেও আলোচনা সভা, শোভাযাত্রাসহ সমাবেশের কর্মসূচি রয়েছে বলে জানান খুলনা-২ আসনের বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘৭ নভেম্বর আমাদের অনুপ্রেরণা। এদিনে আমরা পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে নতুন যাত্রা শুরু করেছি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই দিনের তাৎপর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ফ্যাসিবাদের পতনের পর বাংলাদেশ যে নতুন যাত্রা শুরু করেছে, সেখানে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাতির গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক দিনে সেই নির্বাচনের পথে যাত্রা শুরু করছি।’