‘সন্তানেরা সুখী না থাকলে কোটি কোটি টাকা দিয়ে কী হবে’
Published: 26th, June 2025 GMT
২০২০ সালে প্রেমিক চৈতন্যর সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন ভারতের দক্ষিণী সিনেমার অভিনেত্রী নীহারিকা কোনিড়েলা। কিন্তু কিছুদিন পরই তাদের সংসার ভাঙার গুঞ্জন চাউর হয়। ২০২৩ সালে সমঝোতার মাধ্যমে আলাদা হয়ে যান এই যুগল।
এদিকে, গুঞ্জন উড়ছে দ্বিতীয়বার সংসার বাঁধতে যাচ্ছেন নীহারিকা। এ আলোচনাও বেশ কিছুদিন ধরে চলছে। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন নীহারিকার বাবা অভিনেতা-প্রযোজক নাগা বাবু। ডেকান ক্রনিকলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেয়ের বিয়ে-বিচ্ছেদ নিয়ে কথা বলেন এই বরেণ্য তারকা।
নাগা বাবু বলেন, “আমি ও নীহারিকা প্রায়ই সবকিছু নিয়ে আলোচনা করি। আমি আমার বাচ্চাদের ক্যারিয়ারে কখনো হস্তক্ষেপ করিনি। আমার সন্তানদের সিনেমা হিট হোক বা ফ্লপ হোক, তা নিয়ে মাথা ঘামাই না। তাদের সুখই আমার কাছে প্রধান। তারা যদি খুশি না থাকে, তাহলে কোটি কোটি টাকা থেকে কী লাভ?”
পুত্র বরুণের ঘটনা টেনে নাগা বাবু বলেন, “বরুণ আমাকে বলল, সে লাবণ্য ত্রিপাঠিকে বিয়ে করতে চায়। আমি তাৎক্ষণিক প্রশ্ন করি, ‘তুমি কী তার সঙ্গে খুশি থাকবে? ভবিষ্যতে কী সমস্যা এড়াতে পারবে?’ বরুণ আমাকে আশ্বস্ত করে, লাবণ্যর সঙ্গে সে ভালো থাকবে। এরপর আমি তার বিয়েতে সম্মতি জানাই। বরুণের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল, তারা এখন সুখী।”
আরো পড়ুন:
ট্রেন্ডিংয়ে ‘মাছের মানুষ’: বাবার নাম পাঙ্গাস খান, ছেলে রুইতন খান
মা হারালেন অভিনেত্রী অর্ষা
তবে নীহারিকার বিয়ের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন নাগা বাবু। এ অভিনেতার ভাষায়, “তবে নীহারিকার বিয়ের ক্ষেত্রে আমার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। এই বিয়েতে আমাদের ভুল ছিল; আমরা সঠিকভাবে বিচার করতে পারিনি। আমরা জোর করে বিয়ে দিইনি। যখন বিয়ের প্রস্তাব আসে, তখন নীহারিকা ‘হ্যাঁ’ বলে দেয়। আমরা ভেবেছিলাম এটি ভালো হবে। কিন্তু তাদের বোঝাপড়া সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। পারস্পরিক সিদ্ধান্তে তারা আলাদা হয়ে গেছে। তাদের একসঙ্গে থাকার জন্য আমি কখনো জোর করিনি। তারা একসঙ্গে সুখী ছিল না, একসঙ্গে থাকতে চায়নি। ফলে আমি তাদের এই সিদ্ধান্তেও রাজি ছিলাম। নীহারিকা এখন সিনেমা প্রযোজনায় ব্যস্ত। জীবনের কোনো এক সময় সে অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারে।”
নীহারিকার বাবা দক্ষিণী সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা নাগা বাবু, নীহারিকার কাকা অভিনেতা চিরঞ্জীবী, পবন কল্যাণ, চাচাতো ভাই অভিনেতা রাম চরণ, ফুফাতো ভাই আল্লু অর্জুন। নীহারিকার প্রথম বিয়ের সময়েও তারা সবাই উপস্থিত ছিলেন।
টেলিভিশন শো উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে শোবিজ অঙ্গনে পা রাখেন নীহারিকা। ২০১৬ সালে তেলেগু ভাষার ‘ওকা মানাসু’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গনে পা রাখেন তিনি। পরের বছরই তামিল সিনেমায় অভিষেক হয় তার।
নীহারিকা অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘মাদ্রাসকারান’। গত ১০ জানুয়ারি মুক্তি পায় তামিল ভাষার এই সিনেমা। বর্তমানে ‘হোয়াট দ্য ফিস’ নামে তেলেগু ভাষার একটি সিনেমার কাজ নীহারিকার হাতে রয়েছে। পাশাপাশি প্রযোজক হিসেবে কাজ করছেন এই অভিনেত্রী।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আইএমএফের দুই কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার মিলবে দু-এক দিনের মধ্যে
বাংলাদেশের জন্য চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব অনুমোদনে করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের সভায় এ অনুমোদন করা হয়। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে একসঙ্গে দুই কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার বাংলাদেশ পাবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা দিতে ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করা হয়। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণ সহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ হলো আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে। তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার। ১৩০ কোটি পাওয়া গেলে ১০৯ কোটি ডলার বাকি থাকবে। তবে এ কর্মসূচির সঙ্গে নতুন করে প্রায় ৭৬ কোটি যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও শর্ত পরিপালন নিয়ে, বিশেষত টাকা-ডলার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। ফেব্রুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এপ্রিলে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল শর্ত পালনের অগ্রগতি পর্যালোচনায় ঢাকায় আসে। তবে সমঝোতা না হওয়ায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এর পর ওয়াশিংটনে ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হয়।
সবশেষ গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতা হয় এবং বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং পর্ষদ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।