জায়গা পাওয়ার চেয়ে ধরে রাখা কঠিন, বললেন সাইফউদ্দিন
Published: 7th, July 2025 GMT
১৩ মাসের অপেক্ষা শেষ হলো মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের। ২০২৪ সালের বিপিএলে ৯ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়ে গত বছর বিশ্বকাপের আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সুযোগ পেয়েছিলেন। সেই সিরিজে ৪ ম্যাচে ৮ উইকেট নিলেও এই পেস বোলিং অলরাউন্ডারের জায়গা হয়নি বিশ্বকাপের দলে।
এরপর সাইফউদ্দিনের ওপর দিয়ে ঝড়ই বয়ে গেছে। ‘এ’ দলে সুযোগ পেয়েও সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে ছুটি নেন, কানাডার গ্লোবাল টি–টোয়েন্টি লিগে সুযোগ পেয়েও যেতে পারেননি ভিসা জটিলতায়। এরপর মানসিক অবসাদের কারণে ক্রিকেট থেকে ছুটি নেন দুই মাসের জন্য।
এ বছরের বিপিএলে ফিরে অবশ্য আহামরি কিছু করতে পারেননি সাইফউদ্দিন। রংপুর রাইডার্সের হয়ে ১২ ইনিংসে ১২ উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতে ৮ ইনিংসে ১৫৮.
২৮ বছর বয়সী অলরাউন্ডার আজ শ্রীলঙ্কায় রওনা হওয়ার আগে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তাঁর ফেরার অনুভূতি, ‘যাত্রাটা অনেক লম্বা ছিল। ১৩ মাস পর আবার জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছি। সুযোগ পাওয়ার চেয়ে জায়গাটা ধরে রাখা অনেক কঠিন, সেই লক্ষ্যই থাকবে। যেহেতু কয়েকটা ক্যাম্প করেছি মিরপুরে এবং চট্টগ্রামে, চেষ্টা করেছি নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। কতটা পেরেছি জানি না, হয়তো নির্বাচকেরা আমার প্রতি সন্তুষ্ট ছিলেন, যার কারণে এই সুযোগ পাওয়া।’
বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৮ টি-টোয়েন্টি খেলে ৪২ উইকেট নিয়েছেন সাইফউদ্দিন। ২১ ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে করেছেন ২০৬ রান। পরিসংখ্যানই বলছে, একসময়ের সম্ভাবনা জাগানো এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার দেশের হয়ে এখনো বড় কিছু করতে পারেননি।
এবার যখন ফিরছেন, নতুন কী অস্ত্র যোগ করেছেন বোলিং ভান্ডারে? শুরুতে এই প্রশ্নের উত্তরে ‘যদি ম্যাচে সুযোগ পাই দেখবেন’ বললেও পরে বলেছেন, ‘যেগুলো আমার আগের স্টক ছিল। সুইং, ইয়র্কার, লাইন-লেংথ ঠিক রাখা—এসব নিয়ে কাজ করেছি। ক্যাম্পে নাজমুল (হোসেন) ভাই ছিলেন। ওনার সঙ্গে কথা বলেছি। সব মিলিয়ে চেষ্টা করছি। দেখা যাক, কী হয়।’
সাইফউদ্দিনের কণ্ঠে এবার বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও ভালো করার প্রত্যয়, ‘তানজিম সাকিবের যদি গত ম্যাচ (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে) দেখেন...ওর ছোট একটা ক্যামিও বাংলাদেশের জয়ের জন্য বেশ কাজে লেগেছে। আপনি যদি ইংল্যান্ড দলটা দেখেন, দুই-তিনজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার খেলে। যত বেশি অলরাউন্ডার খেলবে, দল ও দেশের জন্য তত ভালো। আমিও চেষ্টা করব ভালো করার, সেটা ব্যাটিং হোক কিংবা বোলিং।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের টি–টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হবে আগামী বৃহস্পতিবার।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ইফউদ দ ন উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
শিশুদের হত্যার ভয় দেখিয়ে মিরসরাইয়ের দুই বাড়িতে ডাকাতি
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একই গ্রামের দুটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল ওই দুই বাড়ির চার পরিবারের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের বেঁধে শিশু ও নারীদের জিম্মি করে টাকা, স্বর্ণালংকার, কম্বল ও মুঠোফোন নিয়ে যায়। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত উপজেলার হিঙ্গলী ইউনিয়নের একটি গ্রামের পাশাপাশি দুই প্রবাসী বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, বুধবার রাত দেড়টার দিকে ডাকাত দল প্রথম হানা দেয় কুয়েত প্রবাসীর বাড়িতে। দ্বিতল পাকা বাড়ির মূল ঘর লাগোয়া রান্নাঘরের গ্রিল কেটে ডাকাত দল ঘরে ঢোকে। দলে সাত থেকে আটজন ছিল বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। এ সময় প্রবাসীর স্ত্রী ও সন্তান একা ছিলেন ঘরে। ডাকাত দল ওই বাড়িতে ঢুকে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ ও সন্তানকে হত্যার হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালংকার ও একটি মুঠোফোন নিয়ে যায়।
ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলায় দুই ভাড়াটিয়ার বাড়িতেও ডাকাতেরা হানা দেয়। সেখান থেকে চার হাজার টাকা ও দুটি মুঠোফোন নিয়ে যায় তারা।
রাত চারটার দিকে প্রথম বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার পশ্চিমে আরেক প্রবাসীর বাড়িতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পড়ে ডাকাত দলের সদস্যরা। সেখানে একতলা নির্মাণাধীন বাড়ির মালিক সৌদি আরব প্রবাসীর শ্বশুর, তাঁর স্ত্রী ও ছোট দুই শিশুপুত্র ছিল। শাবল দিয়ে সদর দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পুরুষ সদস্যদের হাত পা বেঁধে ফেলে ডাকাতেরা। পরে দুই শিশুকে হত্যা ও বাড়ির নারীদের ধর্ষণের হুমকি দিয়ে নগদ ৫০ হাজার টাকা, সাতটি কম্বল ও একটি মুঠোফোন নিয়ে যায়। ২২ মিনিটের মধ্যে ডাকাতি শেষ করে নির্বিঘ্নে চলে যায় তারা।
ডাকাতির শিকার এক প্রবাসীর স্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, রাত দেড়টার দিকে রান্নাঘরের জানালা ভেঙে ডাকাত দলের সদস্যরা ঘরে ঢুকে পড়ে। তাদের পরনে হাফপ্যান্ট ও কালো রঙের মুখোশ ছিল। তাদের সবার হাতে দেশি ধারালো অস্ত্র ছিল। ডাকাতেরা তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। ধর্ষণের হমকি দেয়। তাঁর ছেলেকেও মারধর করে। এরপর তারা দ্বিতীয় তলায় তাঁর দুই ভাড়াটিয়ার ঘরেও হানা দেয়।
ডাকাতি হওয়া আরেক বাড়ির বাসিন্দা প্রবাসীর শ্বশুর প্রথম আলোকে বলেন, মেয়ের স্বামী প্রবাসে থাকায় একা বাড়িতে তিনি সবার দেখভাল করেন। বুধবার ভোর চারটার দিকে ঘরের দরজা ভেঙে সাত–আটজন ডাকাত ঢুকে দেশি অস্ত্রের মুখে তাঁকে বেঁধে ফেলে। এরপর মেয়েকে ধর্ষণ ও দুই নাতিকে হত্যার হুমকি দেয় তারা। এ সময় ঘরে থাকা ৫০ হাজার টাকা, ৭টি কম্বল ও একটি মুঠোফোন নিয়ে গেছে ডাকাতরা। ২২ মিনিট সময়ের মধ্যে ঘরের ভেতর তাণ্ডব চালিয়ে চলে যায় তারা।
দুই বাড়ির চারটি পরিবারে ডাকাতির ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার রাতে হিঙ্গুলী ইউনিয়নে এক বাড়িতে গ্রিল কেটে ও আরেক বাড়িতে দরজা ভেঙে চুরি বা ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। গ্রামটি ফেনী নদীর পাড়ে হওয়ায় নদীর উত্তর পাশের ছাগলনাইয়া উপজেলার সমিতির বাজার এলাকা থেকে শেষ রাতে ডাকাত দল এখানে এসে হানা দেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।