‘আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, কিন্তু থেমে থাকলে চলবে না’
Published: 6th, August 2025 GMT
‘অনেক বড় একটা দুর্ঘটনা হয়েছে। আমরা আমাদের অনেক ছোট ভাই-বোনদের হারিয়েছি। এটা খুবই কষ্টের। কখনো ভোলার মতো নয়। অনেকেই ওই ঘটনায় এখনো মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। কিন্তু থেমে থাকলে তো চলবে না। আমাদের সামনের দিকে এগোতে হবে।’
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ই-বয়েস শাখার শিক্ষার্থী রেজাউল মাহি এ কথাগুলো জানিয়েছে। আজ বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে প্রথম আলোর সঙ্গে মাহির কথা হয়। ওই সময় কলেজের একাডেমিক ভবনের আট তলার ৮০৩ নম্বর কক্ষে তাদের পদার্থবিজ্ঞানের ক্লাস চলছিল।
রেজাউল মাহি প্রথম আলোকে বলে, ‘আমরা ক্লাসে ফেরার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। শেষ পর্যন্ত আজকে থেকে আমাদের ক্লাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আশা করছি, আস্তে আস্তে সবকিছু আবার স্বাভাবিক হবে। আজকে যারা যারা ক্লাসে এসেছে, সবাই স্বাভাবিকভাবেই ক্লাস করছি, মনোযোগ দিচ্ছি।’
আরও পড়ুনযুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ১৫ দিন পর উত্তরার মাইলস্টোন কলেজে পাঠদান শুরু৪ ঘণ্টা আগেরেজাউল মাহির শাখায় মোট শিক্ষার্থী ৩৯ জন। আজ শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত ছিল ২৮ জন। বাকি ১১ জন অনুপস্থিত ছিল।
যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনার ঠিক ১৫ দিন পর আজ উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শুরু হয়েছে কলেজ শাখার (নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) পাঠদান। আজ সকাল সাড়ে আটটা থেকেই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসে যথারীতি ক্লাসে অংশ নেয়।
কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা বলছেন—এত বড় দুর্ঘটনা ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু পরিস্থিতি মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। অনেকেই এখনো মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তবে তারা স্বাভাবিকভাবে শ্রেণি কার্যক্রমে ফেরার চেষ্টা করছেন।
কলেজের শিক্ষিকা ফারজানা রহমান লোপা প্রথম আলোকে বলেন, গত সপ্তাহ থেকেই শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিকভাবে ক্লাসে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাসায় থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। যাদের সমস্যা ছিল, ট্রমা ছিল, তাদের স্কুলে কাউন্সেলিং করানো হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক হওয়ার এবং পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তাঁর ক্লাসে (দ্বাদশ সি-গার্লস) যারা উপস্থিত, তারা সবাই ভালো আছে।
ইউনিফর্ম পরে, ব্যাগ কাঁধে ক্লাসে এসেছে কয়েকজন শিক্ষার্থী। গল্প করছে সহপাঠীরা। ৬ আগস্ট, রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ম ইলস ট ন কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
তৈরি পোশাক খাতের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে চায় আইএমএফ
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সঙ্গে বৈঠক করেছে। এতে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তৈরি পোশাক খাতের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যতের ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে অবহিত হওয়ার চেষ্টা করে আইএমএফের প্রতিনিধিদল।
পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়, রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএর কার্যালয়ে আজ বুধবার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিএমইএর নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনামুল হক খান, সহসভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, ভিদিয়া অমৃত খান, পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা, রশিদ আহমেদ হোসাইনী প্রমুখ। অন্যদিকে আইএমএফের প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ কিয়াও চেন, জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ রুইফেং ঝাং ও অর্থনীতিবিদ আয়া সাইদ।
উভয় পক্ষের আলোচনায় পোশাক রপ্তানিতে মার্কিন শুল্কের সম্ভাব্য প্রভাব, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রভাব, শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজিত পণ্য বৈচিত্র্যকরণের কৌশল গুরুত্ব পায়। সেই সঙ্গে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সম্ভাব্য প্রভাব, ব্যবসায়ের পরিচালন ব্যয় কমানো ও ব্যবসা সহজীকরণের জন্য করণীয় বিষয়েও আলোচনা হয়।
আইএমএফের প্রতিনিধিদের কাছে জাতীয় অর্থনীতিতে তৈরি পোশাকশিল্পের অবদানসহ শিল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বিজিএমইএর নেতারা। তাঁরা শিল্পের কৌশলগত রূপকল্প তুলে ধরে জানান, পোশাকশিল্প বর্তমানে শ্রমনির্ভর মডেল থেকে বেরিয়ে এসে মূল্য সংযোজিত পণ্য, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছে। তারই অংশ হিসেবে কৃত্রিম তন্তু ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইলভিত্তিক পোশাক তৈরির সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
বিজিএমইএ নেতারা জানান, তাঁদের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ইতিমধ্যে তৈরি পোশাকশিল্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ, বন্দর ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার উন্নয়ন, কাস্টমস ও বন্ড প্রক্রিয়া সহজীকরণ, সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন। এ ছাড়া এলডিসি থেকে উত্তরণের পর শুল্কসুবিধা বজায় রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ), যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) সই করার বিষয়ে সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে।