রাকসু নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ
Published: 7th, August 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫ এর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী বুধবার (৬ আগস্ট) রাতে এ তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন জানিয়েছেন, এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ২৫ হাজার ১২৭ জন। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ১৫ হাজার ৪৪০ জন এবং ছাত্রী ভোটার ৯ হাজার ৬৮৭ জন। মোট ভোটারের মধ্যে ৬১ শতাংশের বেশি ছাত্র এবং ৩৮ শতাংশের মতো ছাত্রী।
আরো পড়ুন:
রাবিতে বিজয় ফিস্টের খাবার খেয়ে অসুস্থ ৮৩ শিক্ষার্থী
বহিরাগতদের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পা ভাঙল রাবি শিক্ষার্থীর, প্রতিবাদে মানববন্ধন
ছাত্রদের মধ্যে শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হলে ভোটার ৯৭২ জন, শাহ মখদুম হলে ১২৪৭ জন, নওয়াব আব্দুল লতিফ হলে ৮১৭ জন, সৈয়দ আমীর আলী হলে ৯৮৮ জন, শহীদ শামসুজ্জোহা হলে ১০৩৫ জন, শহীদ হবিবুর রহমান হলে ২৩৯৮ জন, মতিহার হলে ১৬১৮ জন, মাদার বখ্শ হলে ১৫৭৩ জন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ১৫৪২ জন, শহীদ জিয়াউর রহমান হলে ১৯৪৭ জন এবং বিজয় ২৪ হলে ১৩০৩ জন ভোটার রয়েছে।
ছাত্রীদের মধ্যে মন্নুজান হলে ভোটার ২০০৭ জন, রোকেয়া হলে ১৮১৬ জন, তাপসী রাবেয়া হলে ১০৩৭ জন, বেগম খালেদা জিয়া হলে ১১২৭ জন, রহমতুন্নেসা হলে ১৫৪৭ জন এবং জুলাই ৩৬ হলে ২১৫৩ জন ভোটার রয়েছে।
খসড়া ভোটার তালিকাটি রাকসুর ওয়েবসাইট (https://www.
ঢাকা/ফাহিম/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ঢাবি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে
বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ার ক্ষতিপূরণ হিসেবে ব্রিটিশরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল তাঁবেদার ও অনুগত নাগরিক তৈরি করা। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথাগত জ্ঞান আহরণের কেন্দ্র না থেকে জাতিরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেছে। তবে সে গৌরব এখন ম্লান হয়ে গেছে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে আয়োজিত সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসে, স্মৃতিতে শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বক্তারা।
আলোচনায় অংশ নিয়ে কথাসাহিত্যিক আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেন, একটি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এ রকম ভূমিকা পালনের দৃষ্টান্ত বিশ্বে বিরল। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের যে পতাকা ওড়ানো হয়েছে, সেটা আর কখনো নামেনি।
বইটির মুখবন্ধের উদ্ধৃতি দিয়ে বেসরকারি ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির এই অধ্যাপক বলেন, সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ জ্ঞান আহরণ, সৃষ্টি ও বিতরণ। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞান আহরণের প্রথাগত কেন্দ্র হিসেবে না থেকে ইতিহাসের ভাঙা–গড়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে তার রাজনৈতিক ভূমিকাও পালন করেছে। জাতিরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
সেটার মধ্য দিয়ে ব্রিটিশদের উদ্দেশ্যকে অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিং নিয়ে ভিন্নমত জানিয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনা সেটা ভিন্নভাবে করতে হবে। এখন র্যাঙ্কিং নিয়ে আওয়াজ ওঠে। গণপরিসরে যখন আলাপ ওঠে তখন বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিছিয়ে থাকার কারণ হিসেবে গবেষণা ও প্রকাশনা না হওয়াকে দায়ী করা হয়। তিনি প্রশ্ন রাখেন, পৃথিবীর কটা বিশ্ববিদ্যালয় জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালন করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসে, স্মৃতিতে বইটির প্রথম প্রবন্ধ ‘অন্ধকারে আলো, আলোতে অন্ধকার’ শিরোনামের একটা পুরো জীবনদর্শনের সন্ধান মেলে জানিয়ে দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, ‘সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী স্যার সবকিছু ব্যক্ত করেন সাংঘাতিক যুক্তির মধ্য দিয়ে। ওনার লেখা যখন শেষ করি, তখন মনে হয়, আমি একটি বুদ্ধিবৃত্তিক ভ্রমণ শেষ করেছি।’
উপাচার্যদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমি কাউকে ব্যক্তিগতভাবে দোষারোপ করছি না। কিন্তু উপাচার্যদের বিশ্ববিদ্যালয়কে সৃজনশীলতার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার যে মূল দায়িত্ব, সেটা পালনে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন।’
লেখক ও অনুবাদক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস বলেন, ‘প্রথম প্রবন্ধটা বইটার সুর তৈরি করে দিয়েছে। স্যার সবকিছুকে ক্রিটিক্যালি দেখেন। যেমন সিপাহি বিদ্রোহ নিয়ে স্যারের পর্যবেক্ষণ। ১৮৫৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এর দু–তিন মাস পরে সিপাহি বিদ্রোহ হয়। স্যার তাঁর বইয়ে বলছেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চমার্গীয় ব্যাপার। সিপাহিরা হচ্ছেন কৃষকের সন্তান।’
খ্যাতিমান নাট্যকার খায়রুল আলম সবুজ বলেন, ‘স্যারের লেখা যখন পড়ি, সেটা অন্তর ছুঁয়ে যায়।’
বিভিন্ন সময়ের লেখাগুলোকে একত্র করে বইটা লেখা জানিয়ে শিক্ষক ও লেখক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আগের যে চেহারা ছিল, আগের যে গৌরব ছিল, সেগুলো ম্লান হয়ে গেছে, এটা খুবই সত্য কথা এবং সে জন্য যে কেবল বিশ্ববিদ্যালয় দায়ী, সেটা নয়। মূল পরিবেশ, গোটা সমাজের যে পরিবেশ, তাকে বিবেচনা করতে হবে। গোটা ব্যবস্থাটাই এমন পুঁজিবাদী একটা ব্যবস্থা, যেখানে মানুষ আত্মস্বার্থ ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে।
বেঙ্গলবুকসের জ্যেষ্ঠ কনটেন্ট ডেভেলপার তৌহিদ ইমামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ও হিউম্যানিটিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ফেরদৌস আজিম। আরও বক্তব্য দেন লেখক ও গবেষক কাজী সামিও শীশ।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বেঙ্গলবুকসের প্রকল্প প্রধান আজহার ফরহাদ। এরপর মঞ্চে অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। বেঙ্গলবুকসের প্রকাশক মাহমুদুল হাসানের বক্তব্যের পর বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।