রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের এবার রেলপথ অবরোধ
Published: 13th, August 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে উল্লাপাড়া রেলস্টেশন–সংলগ্ন রেলগেট এলাকায় বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের ওপর এ কর্মসূচি শুরু হয়। এতে ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, কয়েক বছর ধরে তাঁরা স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলন করছেন। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে টানা ১১ দিন আন্দোলনের পর কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তা স্থগিত করা হয়। এরপর ৭ মে একনেক সভায় প্রকল্পের ডিপিপির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হলেও আর কোনো অগ্রগতি নেই। ২৪ জুন ও ২৭ জুলাই দুটি একনেক সভা হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ২৬ জুলাই থেকে আবারও আন্দোলন শুরু করেছেন। তাঁদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, আর পেছনে ফেরার অবকাশ নেই। ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন না করে তাঁরা রাজপথ ছাড়বেন না।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি বাস্তবায়নে গত রোববার সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। সরকারের তরফ থেকে এ পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই রেলপথ অবরোধ করতে হচ্ছে।
এই অবরোধের কারণে ট্রেনের শিডিউলে বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মনিরুল ইসলাম। আজ সকালে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রেলওয়ের নিরাপত্তায় উল্লাপাড়া থানা-পুলিশ ও রেলওয়ে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুনরবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ, প্রায় ২ ঘণ্টা ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ বন্ধ১০ আগস্ট ২০২৫বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে প্রকল্পটি প্রস্তাবিত হয় ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকায়। এরপর সাতবার সংশোধনের পর সবশেষ ৫১৯ কোটি ১৫ লাখ টাকায় নেমে আসে। প্রকল্প মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৫ সালের মার্চ থেকে ২০২৯ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির বাংলা, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সংগীত ও ব্যবস্থাপনা নামে পাঁচটি বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ২০০। সেই সঙ্গে ৩৪ জন শিক্ষক, ৫৪ কর্মকর্তা ও ১০৭ জন কর্মচারী আছেন। পৌর শহরের শাহজাদপুর মহিলা কলেজ, সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া ডিগ্রি কলেজসহ ভাড়া করা দুটি বাড়িতে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম।
আরও পড়ুনমহাসড়ক অবরোধ করে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের সেমিনার১৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রোনালদোর লাল কার্ড, পর্তুগালকে চমকে দিল আয়ারল্যান্ড
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অবিশ্বাস্য এক রাত দেখল ডাবলিন। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লেন, আর ট্রয় প্যারটের জোড়া গোল আয়ারল্যান্ডকে এনে দিল পর্তুগালের বিরুদ্ধে দারুণ ২-০ গোলের জয়। যা তাদের নিয়ে গেল হাঙ্গেরির সাথে গ্রুপ রানার্স-আপ নির্ধারণের লড়াইয়ে।
৪০ বছর বয়সী পর্তুগাল অধিনায়ক দ্বিতীয়ার্ধে বল ছাড়া পরিস্থিতিতে ডারা ও’শিয়াকে কনুই মেরে বসেন। ম্যাচে তখনো আধাঘণ্টার বেশি বাকি। কিন্তু স্বাগতিকরা এরই মধ্যে নিজেদের গল্প লিখে ফেলছিলেন। বিশ্ব র্যাংকিংয়ে পঞ্চম স্থানের দলকে হারিয়ে আইরিশ ফুটবলের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় যোগ করার পথে।
আরো পড়ুন:
হামজার জোড়া গোলের পর ‘পুরোনো রোগে’ জয় বঞ্চিত বাংলাদেশ
‘যেভাবে বার্সেলোনা ছাড়ব ভেবেছিলাম, তা হয়নি’ মেসির হৃদয়ভরা আক্ষেপ
ডাবলিনে নেমেই রোনালদো বলেছিলেন তিনি “ভদ্র ছেলে” হয়ে থাকতে চান। কিন্তু মাঠে তার হাসিমুখ দ্রুতই রাগ, ক্ষোভ আর শেষ পর্যন্ত হতাশায় বদলে যায়। সুইডিশ রেফারি গ্লেন নিয়বেরগ যাকে ম্যাচের আগেই আয়ারল্যান্ড কোচ হেইমির হ্যালগ্রিমসনেরা বলেছিলেন যাতে রোনালদোর প্রভাব তাকে বিচলিত না করে। শেষ পর্যন্ত কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই বাধ্য হন।
যদিও শেষ পর্যন্ত জয়টা এনে দেয় প্যারটের প্রথমার্ধের দুই গোল। কিন্তু গোটা ম্যাচ জুড়েই আয়ারল্যান্ড দল দেখিয়েছে দারুণ চরিত্র, অসাধারণ ঐক্য। আর এই জয় মানে রবিবার বুদাপেস্টে আরেকটি এমন পারফরম্যান্সই তাদের ‘গ্রুপ-এফ’ এ রানার্স-আপ নিশ্চিত করবে।
হাঙ্গেরির জয়ের পর আয়ারল্যান্ড জানত তাদের কী করতে হবে। আগের মাসে লিসবনেও পর্তুগালের কাছে তারা কঠিন সময় তৈরি করেছিল। আর এবারও শুরুতে নিজেদের অর্ধে আটকে গেলেও ধীরে ধীরে আক্রমণে উঠতে থাকে।
এদিকে রোনালদো ম্যাচের শুরুতে একাধিক সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি। বিরল আক্রমণে যখনই আয়ারল্যান্ড ওপরে উঠেছে, তখনই তারা বিপদ তৈরি করেছে। ১৭ মিনিটে গোলও আসে এমনই এক মুহূর্তে। প্যারট গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তাকে ভুল করতে বাধ্য করেন। এরপর জশ কালেনের সেট-পিস থেকে লিয়াম স্কেলসের হেড ফিরিয়ে দেওয়া বলটা কাছ থেকেই জালে ঠেলে দেন প্যারট।
এরপর কিছুক্ষণ পরই প্রায় ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলছিল আয়ারল্যান্ড। ও’শিয়ার লম্বা ক্লিয়ারেন্সে ছুটে গিয়ে ওগবেনে যে শট নেন, তা পোস্টে লেগে ফিরে আসে।
কেলেহের দারুণ সেভে ফেলিক্সকে আটকে দেন, দালোত দুবার লক্ষ ভ্রষ্ট করেন। কিন্তু বিরতির ঠিক আগে ও’শিয়ার লম্বা পাস ধরে প্যারট ডান দিক দিয়ে ঢুকে কস্তাকে নিকট পোস্টে পরাস্ত করলে আয়ারল্যান্ডের লিড দ্বিগুণ হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পর্তুগাল ফিরতে পারত। রেনাতো ভেইগার হেড থেকে বল পেয়ে ভিটিনিয়া গোল করতে ব্যর্থ হন। বল দখলে পর্তুগাল আধিপত্য বজায় রাখলেও তাদের সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসে ৫৯ মিনিটে। প্রথমে রোনালদোকে শুধু হলুদ কার্ড দেখালেও ভিএআর পর্যালোচনায় রেফারি সিদ্ধান্ত বদলে সরাসরি লাল কার্ড দেখান।
মাঠ ছাড়ার সময় রোনালদো ও হ্যালগ্রিমসনের মধ্যে সংক্ষিপ্ত বাক্যালাপ ও করমর্দন হয়। কিন্তু দুজনেই বুঝে গিয়েছিলেন- এতেই ম্যাচের ভাগ্য ঠিক হয়ে গেছে।
শেষ দিকে পর্তুগালের চাপ বাড়লেও আয়ারল্যান্ড দৃঢ়তার সঙ্গে ম্যাচ শেষ করে। আর ডাবলিনে জন্ম নেয় আরেকটি স্মরণীয় রাত।
ঢাকা/আমিনুল