পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র স্রোত। এতে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় সচল তিনটি ফেরিঘাটের মধ্যে দুটি দিয়ে ফেরি ভিড়তে পারছে না। একটি মাত্র ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে এ পরিস্থিতি চলছে। ফলে দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় জানায়, পদ্মায় পানি বাড়ার সঙ্গে স্রোতের তীব্রতা বেড়েছে। স্রোতের বিপরীতে ফেরি চালাতে সময় দ্বিগুণ লাগছে। একই সঙ্গে তীব্র স্রোতের তোড়ে দুটি ঘাটে ফেরি ভেড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে গতকাল দুপুর থেকে দৌলতদিয়ার ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট বন্ধ রাখা হয়েছে। শুধু ৭ নম্বর ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার চলছে। স্রোতের কারণে পাঁচটি ফেরি বন্ধ রাখা হয়েছে। ঘাট–সংকট ও ফেরি স্বল্পতায় পারাপারে বিঘ্ন ঘটছে।

আজ শুক্রবার সকালে দেখা যায়, দৌলতদিয়ার সাতটি ঘাটের মধ্যে ১, ২ ও ৫ নম্বর ঘাট কয়েক বছর আগে নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। ৩ নম্বর ঘাটে একটি বড় কে–টাইপ ফেরি বেঁধে রাখা আছে, ৪ নম্বর ঘাটে খালি পন্টুন। এ দুটি ঘাটের সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া তীব্র স্রোতে কোনো নৌযান ভিড়তে পারছে না। ৬ নম্বর ঘাটে পন্টুন থাকলেও ফেরি ভেড়ানোর মতো পরিস্থিতি নেই। সচল একমাত্র ৭ নম্বর ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়েছে।

ঘাটসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল দুপুরে পাটুরিয়া থেকে ‘বাইগার’ নামের একটি কে–টাইপ ফেরি দৌলতদিয়ার ৪ নম্বর ঘাটে ভেড়ানোর চেষ্টা করে। দীর্ঘ চেষ্টার পর ভিড়লেও পরে আর কোনো ফেরি ঘাটে ভিড়তে পারেনি। ফলে কর্তৃপক্ষ ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট বন্ধ করে দেয়।

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় মিলে ১৫টি ফেরির মধ্যে স্রোতের বিপরীতে চলতে না পারায় ‘ঢাকা’, ‘কুমিল্লা’, ‘ফরিদপুর’সহ ৫টি ফেরি বন্ধ রাখা হয়েছে। বাকি ১০টি ফেরি দিয়ে পারাপার চললেও আগে যেখানে চার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে ২৫-৩০ মিনিট লাগত, এখন লাগছে এক ঘণ্টার বেশি। এতে উভয় ঘাটেই যানবাহনের দীর্ঘ সারি পড়েছে।

কুষ্টিয়া থেকে আসা দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহনের ঘাট তত্ত্বাবধায়ক বারেক সরদার বলেন, ঢাকামুখী পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস ঘাটে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে লাইনও লম্বা হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট বন্ধ রয়েছে, চালু আছে কেবল ৭ নম্বর ঘাট। স্রোতের বিপরীতে ফেরি চালানো ও ঘাট রক্ষা করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঘ ট বন ধ দ লতদ য় বন ধ র

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ অবলোপনের সময় সীমা তুলে নিল বাংলাদেশ ব্যাংক

খেলাপি ঋণ অবলোপনে সময়ের বাধা-নিষেধ তুলে নিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন ঋণ মন্দ ও ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত (ব্যাড এন্ড লস) হলে এবং এ ঋণ ফেরত আসবে না বলে মনে হলেই তা অবলোপন করতে পারবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। আগে এর জন্য কমপক্ষে দুই বছর সময় লাগত।  

সোমবার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে  এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

আরো পড়ুন:

মূল্যস্ফীতি বড় চ্যালেঞ্জ: সুদহার অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত

বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রাইজবন্ডসহ সব সেবা ২০ নভেম্বর থেকে বন্ধ

অবলোপন ঋণ হলো সেইসব খেলাপি ঋণ, যা দীর্ঘ সময় ধরে আদায় করা যায়নি এবং যা আদায়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ। ব্যাংকগুলো তাদের আর্থিক প্রতিবেদন (ব্যালান্স শিট) থেকে এই ঋণগুলো সরিয়ে আলাদা লেজারে সংরক্ষণ করে, যাকে 'ঋণ অবলোপন' বা 'রাইট অফ' বলা হয়। যদিও এটি ব্যাংক কর্তৃক আর্থিক হিসাব থেকে বাদ দেওয়া হয়, কিন্তু ঋণগ্রহীতার ওপর ব্যাংকের দাবি এবং ঋণ আদায়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, মন্দ ও ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত এবং ভবিষ্যতে আদায়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ এরূপ ঋণ হিসাব অবলোপন করা যাবে। তবে, কালানুক্রমিকভাবে অধিকতর পুরনো মন্দ ও ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত ঋণ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অবলোপন করা যাবে। এ ক্ষেত্রে ঋণ হিসাব অবলোপনের কমপক্ষে ১০ কর্মদিবস আগে ঋণগ্রহীতাকে বিষয়টি জানাতে হবে।  

বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের ২০২৪ সালের এ সম্পর্কিত সার্কুলারে বলা হয়, “যে সকল ঋণ হিসাব একাধিক্রমে দুই বছর মন্দ ও ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত রয়েছে, সে সকল ঋণ হিসাব অবলোপন করা যাবে।’’
 

ঢাকা/নাজমুল/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ