৯ বছর পর কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন, পুরোনো নেতৃত্বেই আস্থা কাউন্সিলরদের
Published: 21st, September 2025 GMT
৯ বছর পর উৎসবমুখর পরিবেশে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুরোনো নেতৃত্বের ওপরই আস্থা রেখেছেন কাউন্সিলররা। সভাপতি হয়েছেন শিল্পপতি শরীফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন মাজহারুল ইসলাম।
গতকাল শনিবার দুপুরে শহরের পুরোনো স্টেডিয়ামে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। উদ্বোধন করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। পরে দিবাগত রাত ৩টার কিছু পর ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
সভাপতি পদে ‘আনারস’ প্রতীকে শরীফুল আলম ১ হাজার ৫২২ ভোটে নির্বাচিত হন। তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী সহসভাপতি রুহুল হোসাইন ‘ছাতা’ প্রতীকে পান ১৯৭ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে ‘রিকশা’ প্রতীকে মাজহারুল ইসলাম পান ১ হাজার ১৫৯ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল ‘বল’ প্রতীকে পান ৬১১ ভোট। অন্য দুই প্রার্থী শফিকুল আলম রাজন (মাছ প্রতীক) পান ৩০ ভোট ও আইনজীবী সাজ্জাদুল হক (গোলাপফুল প্রতীক) পান ৭ ভোট। মোট ২ হাজার ৯০ কাউন্সিলরের মধ্যে ভোট দেন ১ হাজার ৮৪০ জন।
২০১৬ সালে সর্বশেষ জেলা বিএনপির সম্মেলন হলেও কমিটি সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা করা যায়নি। পরে কেন্দ্র থেকে শরীফুল আলমকে সভাপতি ও মাজহারুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই তিন বছরের কমিটি দিয়ে ৯ বছর পার হয়।
সম্মেলন ঘিরে গতকাল সকাল থেকেই শহরে উৎসবের আমেজ ছিল। ঢাকঢোল বাজিয়ে বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতা–কর্মীরা সম্মেলনে যোগ দেন। স্টেশন রোডে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ ছিল। ভোট গণনার সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল তিনটি ব্যালট বাক্স সরানোর অভিযোগ তুললেও পরে তিনি ফল মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেন।
নির্বাচিত হওয়ার পর সভাপতি শরীফুল আলম বলেন, ‘কাউন্সিলররা আমার প্রতি আস্থা রেখেছেন। আমি কৃতজ্ঞ।’ সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম দলের নেতা–কর্মীদের সহযোগিতা চেয়েছেন দায়িত্ব পালনে।
নির্বাচনে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আইনজীবী মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে দেশ টিভির আরিফ ও নাসার নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময়ের দুটি মামলায় নাসা গ্রুপের কর্ণধার নজরুল ইসলাম মজুমদার ও দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরিফ হাসানকে সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
রাজধানীর গুলশান থানা এলাকায় কামাল হোসেন প্রকাশ সবুজ হত্যা মামলায় নাসা গ্রুপের কর্ণধার ও এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত।
আর গণ–অভ্যুত্থান চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট কোতোয়ালি থানার সিএমএম কোর্ট এলাকায় রোফায়েদ হাসানসহ ২৫–৩০ জন আন্দোলনকারীর ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় হত্যাচেষ্টা মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরিফ হাসানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানার আদালত আজ সোমবার এই আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জানান, গত ২৮ ও ৩০ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা আরিফ ও কামালকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। ওই দিন আদালত আসামির উপস্থিতিতে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। আজ শুনানির জন্য তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত গ্রেপ্তার আবেদন মঞ্জুর করেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হাতকড়া ও হেলমেট পরিয়ে তাঁদের আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। আরিফ ও নজরুল আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেন।
আজ সকাল ১০টা ৫২ মিনিটের দিকে বিচারক আসেন। আরিফ হাসানকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক অনুপ ঘোষ। তাঁর আইনজীবী জামিন শুনানির জন্য পাওয়ার চান এবং আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার অনুমতি চান। আদালত সেটি মঞ্জুর করেন।
নাসার নজরুলের মামলার শুনানি শুরু হলে তাঁরা দুজন কাঠগড়ার সামনের অংশের দিকে যান। এরপর নাসার নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী আরিফুর রহমান বলেন, ‘জিডির মাধ্যমে এ মামলা হয়েছে। ফরোয়ার্ডিংয়ের সঙ্গে সাপোর্টিভ কোনো ডকুমেন্টস নেই। এ মামলায় কোনো ১৬৪ ও ১৬১ ধারার জবানবন্দি নেই। ঘটনাস্থলে থাকার কোনো ভিডিও ফুটেজ নেই। কেউ বলেনি, উনি আওয়ামী লীগকে টাকা দিয়েছেন। তাহলে এ মামলার সন্দিগ্ধ আসামি কীভাবে হন? এটা গ্রেপ্তার দেখানো আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
ডিএমপি পরিদর্শক আসাদ আদালতকে বলেন, ‘মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেয়েছেন। আন্দোলনকে দমন করার জন্য তিনি অর্থসহায়তা দিয়েছেন। সে জন্যই গ্রেপ্তারের আবেদন করেছেন।’
পরে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘কোনো ডকুমেন্টস আছে? তথ্য দেন। এমনিতে বললে তো হবে না।’ এরপর বিচারক নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। তাঁদের দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত বছরের ২ অক্টোবর নজরুল ইসলাম মজুমদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে বিভিন্ন মামলায় তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি কাশিমপুর কারাগারে আছেন।
গত বছরের ১৭ নভেম্বর দেশ টিভির এমডি আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা রয়েছে।