নির্বাচন না পেছালে ক্রিকেট বর্জনের হুমকি ঢাকার ক্লাবগুলোর
Published: 4th, October 2025 GMT
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নির্বাচন নিয়ে নাটক যেন আর থামছেই না!
আগামীকালের মধ্যে তিন দফা দাবি না মানলে বাংলাদেশের সব ধরনের ক্রিকেট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকার ক্লাবগুলো। শনিবার ‘বিসিবি নির্বাচনে নোংরামির বিরুদ্ধে ক্লাব, সংগঠক ও কাউন্সিলরদের প্রতিবাদ’ ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন বিসিবি নির্বাচনে মোহামেডান ক্লাবের কাউন্সিলর মাসুদউজ্জামান। তাঁর সঙ্গে ঢাকার প্রথম সারির বেশ কয়েকটি ক্লাবের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
তাঁদের দাবি, বর্তমান বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ বাড়িয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হোক। অথবা অ্যাডহক কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন দেওয়া হোক। প্রয়োজনে বর্তমান তফসিল বাতিল করে নতুন করে তফসিল ঘোষণা করা হোক। মোহামেডান ক্লাবে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৪৮টি ক্লাব এই দাবির পক্ষে আছে।
গত পরশু বিসিবি কার্যালয়ে গিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছেও একই দাবি জানিয়েছিলেন ইন্দিরা রোড ক্রীড়া চক্রের কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম। আজকের সংবাদ সম্মেলনেও তিনি উপস্থিত ছিলেন। এ সময় মাসুদউজ্জামানকে প্রশ্ন করা হয়, ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে এরপর কোনো কথা হয়েছে কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘পথটা খোলা। ওই দিনই (গত পরশু) খুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো সাড়া না পাওয়াতেই আজকে এই জায়গায় বসা (সংবাদ সম্মেলন করা)।’
সংকটের শুরু তৃতীয় বিভাগ বাছাই পর্ব পেরিয়ে আসা ১৫ ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ হাইকোর্টে স্থগিত হওয়ার পর। এরপর জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালসহ মোট ১৬ জন প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আজকের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ক্রীড়া সংগঠকেরাও।
আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে বিসিবি নির্বাচন নিয়ে ‘নাটক মঞ্চস্থ’ হচ্ছে দাবি করে মাসুদউজ্জামান বলেন, ‘আপিলের সুযোগ আছে, কিন্তু আপনারাই দেখেন, আমরা পারছি কিছু? কোনোভাবে যৌক্তিক কিছু করতে পারছি? আমরা ক্রিকেটের স্বার্থেই কথা বলছি।’
এরপর তিনি আরও বলেন, ‘আলোচনার দরজা খুলে দিচ্ছি। যাঁরা রিট করেছেন, তাঁদের সবার প্রতিই তো এই জিনিসটা (আলোচনার পথ) করা। এখন যদি ধরেন, আপনি মামলা করেছেন, আপনি আপোস চান, আপনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভালো চান। আপনি আলোচনা করে তারপর ব্যবস্থা নেন।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই সাংবাদিকদের হাতে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি তুলে দেওয়া হয়। তাতে লেখা ছিল, ‘বিতর্কিত নির্বাচনের নীলনকশা বাতিল না করা হলে আসন্ন কোনো ধরনের ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোনো ক্লাব অংশ নেবে না।’ ওই বিজ্ঞপ্তিতে জেলা ও বিভাগ থেকে নির্বাচিত কাউন্সিলর তালিকায় সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগও তোলা হয়।
এদিকে আজ বিসিবি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী অঞ্চল থেকে পরিচালক প্রার্থী হাসিবুল আলম এবং ক্লাব ক্যাটাগরিতে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের প্রার্থী লুতফর রহমান। তাঁদের মধ্যে লুতফর রহমান আজ মোহামেডান ক্লাবের সংবাদ সম্মেলনেও উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাতে এক ঘণ্টার ব্যবধানে সাভার-ধামরাইয়ে দুই বাসে আগুন
ঢাকার ধামরাই ও সাভার উপজেলায় রাতে প্রায় এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
রোববার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১০টার দিকে দুটি মোটরসাইকেলে তিনজন ব্যক্তি এসে ডি–লিংক পরিবহনের পার্ক করা একটি বাসের পেছনের জানালা ভেঙে ভেতরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত সেখান থেকে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন পানি ও বালু ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। আগুনে বাসের ভেতরের অধিকাংশ আসন পুড়ে গেছে।
নৈশপ্রহরী ফারুক বলেন, তিনজন এসে প্রথমে বাসে ইট মারে। পরে গানপাউডার দিয়ে আগুন লাগিয়ে দ্রুত চলে যায়। এরপর উপজেলা সড়কের দিকে পালিয়ে যায়।
ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন অফিসার মো. সোহেল রানা জানান, রাত ১০টা ১৫ মিনিটে সংবাদ পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বাসের ভেতরে পেছন দিক থেকে আগুন লাগানো হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এতে গানপাউডার ব্যবহার করা হয়েছে।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, পার্ক করা বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তে কাজ চলছে।
এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর সাভারের বিরুলিয়া বেড়িবাঁধসংলগ্ন বটতলা এলাকায় অন্য একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সাভার মডেল থানার পুলিশ জানায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে আলিফ পরিবহনের বাসটি পার্ক করে বাড়িতে খাবার খেতে যান মালিক আমজাদ হোসেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নেভান।
আমজাদ হোসেন বলেন, পুরো বাসটাই পুড়ে গেছে। এতে অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সাভার মডেল থানার বিরুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল ওয়াহাব বলেন, বাসের মালিক নিজেই চালক। ঋণ করে বাসটি কেনা হয়েছিল। রাতে বাসটি রেখে তিনি খাবার খেতে যান। পার্ক করা বাসে কে বা কারা আগুন দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।