দুর্গাপূজার ছুটির শেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের প্রচারণা পুরোদমে শুরু হয়েছে। প্রার্থী ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে নির্বাচনের এই প্রচারণা। আজ রোববার সকাল থেকে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মোড়, শাটল ট্রেন ও সড়কে অবস্থান করে দেখা গেছে এ চিত্র।

এর আগে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ছিল। ফলে শিক্ষার্থীদের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। বন্ধ ক্যাম্পাসেই বিভিন্ন আবাসিক হল, ক্যাম্পাসের আশপাশের কটেজ ও ভাড়া বাসায় প্রচারণা চালান প্রার্থীরা। তবে এটি ছিল তুলনামূলক ধীর। এখন ক্যাম্পাস খোলায় শিক্ষার্থী ও প্রার্থী উভয়ের উপস্থিতি বেড়েছে।

আজ সরেজমিনে দেখা যায়, প্রার্থীরা হাতে প্রচারপত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে যাচ্ছেন। আবার এক প্রার্থী আরেক প্রার্থীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর, রেলওয়ে স্টেশন, বিভিন্ন অনুষদ, শহীদ মিনার, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ঝুপড়ি—সব জায়গায় নির্বাচনী আমেজ দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এ নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রেদওয়ান হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনী পরিবেশ দেখে ভালো লাগছে। চাকসু নির্বাচন পর্যন্ত এ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে বলে আশা করছি। প্রার্থীদের অতীত ও বর্তমানের কার্যক্রম দেখছি আমরা। সেই ভিত্তিতে চাকসু নির্বাচনে ভোট দেব।’

ইশতেহার ঘোষণা

এদিকে চাকসু নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে ‘সার্বভৌম শিক্ষার্থী ঐক্য’ নামের একটি প্যানেল। রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে এই প্যানেল গঠিত হয়েছে বলে জানান প্রার্থীরা। এতে তাঁরা ২২ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় চাকসু ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব ইশতেহারের বিষয়ে জানানো হয়।

এতে প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী তাওসিফ মুত্তাকী চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ দেখেছি। এর সুন্দর কাঠামো বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কোম্পানি থেকে করা হয়েছে। আমরা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে চাই, সেটা দুই উপায়ে করতে পারি। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের মাধ্যমে, আরেকটি সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সমন্বয়ের মাধ্যমে।’

সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা সভাপতি; অর্থাৎ উপাচার্যের ক্ষমতার লোপের কথা বলেছি। চাকসুর সভাপতি যেকোনো সময় চাকসু ভেঙে দিতে পারেন। এমন ক্ষমতা যদি উপাচার্যের কাছে থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম হয়ে এটি আর কাজ করবে না। আমরা এ ক্ষমতা লোপ করতে কাজ করব।’

সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী সাঈদ মোহাম্মদ ২২ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন। এসব ইশতেহারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো ১.

শিক্ষার্থীদের পরিচয় গোপন রেখে অভিযোগ ও মতামত জানানোর সুযোগ, মতামত জানানোর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব বিষয় নিষ্পত্তি করা। ২. চাকসুকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা, মেয়াদ শেষে ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন নিশ্চিত করার আইনি বিধান প্রণয়ন করা। ৩. প্রক্টরিয়াল বডিতে একজন ছাত্র ও একজন ছাত্রী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা। ৪. শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ ব্যবস্থাপনা সিস্টেম চালু ও শতভাগ অনলাইন পেমেন্ট ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।

চাকসু নির্বাচনে নিজেদের ২২ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে ‘সার্বভৌম শিক্ষার্থী ঐক্য’ আজ দুপুর ১২টায় চাকসু ভবনের সামনে

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চিত্রকর্মটি বিক্রি হলো ২,৮৯১ কোটি টাকায়

পোর্ট্রেট অব এলিজাবেথ লেডেরার এখন সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হওয়া চিত্রকর্মের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে চলে এসেছে। প্রথমে রয়েছে জগদ্বিখ্যাত ইতালিয়ান শিল্পী লেওনার্দো দা ভিঞ্চির আঁকা ‘সালভাতর মুন্দি’। যিশুখ্রিষ্টকে নিয়ে আঁকা চিত্রকর্মটি ২০১৭ সালে ৪৫ কোটি ৩০ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল।

পোর্ট্রেট অব এলিজাবেথ লেডেরার আঁকা হয় ১৯১৪ থেকে ১৯১৬ সালের মধ্যে। অস্ট্রিয়ার প্রভাবশালী ইহুদি পরিবারের মেয়ে এলিজাবেথ লেডেরারের বাবা অগাস্ট লেডেরার ছিলেন ক্লিমটের বড় পৃষ্ঠপোষক। ১৯৩৮ সালে অস্ট্রিয়া দখলের সময় চিত্রকর্মটি জব্দ করে নাৎসি বাহিনী। আশির দশকে সেটি আবার চিত্রকর্মের বাজারে আসে। তখন থেকেই এটি ব্যক্তিগত সংগ্রহশালায় ছিল।

গুস্তাফ ক্লিমট

সম্পর্কিত নিবন্ধ