অধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষক নিয়োগও হবে এনটিআরসিএর মাধ্যমে
Published: 5th, October 2025 GMT
এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগও হবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে। এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আববার (সি আর আবরার)।
বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আজ রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগের কথা জানান। প্রসঙ্গত, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন বাবদ মাসে সরকারি অনুদান পায়। তাঁরা সরকার থেকে মূল বেতন ও কিছু ভাতা পেয়ে থাকেন।
আরও পড়ুনবেসরকারি স্কুল-কলেজে কর্মচারী নিয়োগে ক্ষমতা হারাল পরিচালনা পর্ষদ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫বর্তমানে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ হয় এনটিআরসিএর অধীন পরীক্ষা ও সুপারিশের ভিত্তিতে। তবে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং কর্মচারী পদে নিয়োগ পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে হয়ে আসছিল। এসব পদে নিয়োগে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আছে। সম্প্রতি বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজে কর্মচারী নিয়োগে এত দিন ধরে চলা নিয়মও পরিবর্তন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন নিয়মে এ নিয়োগে পরিচালনা পর্ষদের ক্ষমতা থাকছে না। জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটির মাধ্যমে এসব পদে নিয়োগে পরীক্ষা, মূল্যায়ন ও নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হবে। এ কমিটিতে পরিচালনা পর্ষদের কেউ থাকতে পারবেন না।
আরও পড়ুনসহকারী শিক্ষকের বেতন কম্পিউটার অপারেটরের সমান, কলেজ অধ্যাপকের যুগ্ম সচিবেরও নিচে৪ ঘণ্টা আগেঅধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং কর্মচারী পদে নিয়োগও এনটিআরসিএর মাধ্যমে নেওয়ার পরিকল্পনা কথা অনেক দিন ধরেই আলোচনা হচ্ছিল। এখন এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, এনটিআরসিএর মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক এবং অধ্যক্ষ নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুনএমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ৫০০ বাড়ল, পরিপত্র জারি৩৩ মিনিট আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনট আরস এ ব সরক র উদ য গ
এছাড়াও পড়ুন:
নীলফামারীতে বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, রেড অ্যালার্ট
ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
রোববার সকাল ছয়টায় লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। ১২ ঘণ্টার ব্যবধানের সন্ধ্যা ছয়টায় সেখানে ৮৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ওই পয়েন্টে তিস্তা নদীর বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার। সকাল ৬টায় প্রবাহিত হচ্ছিল ৫১ দশমিক ৪৩ মিটার দিয়ে। সন্ধ্যা ছয়টায় সেখানে প্রবাহিত হচ্ছিল ৫২ দশমিক ২৮ মিটার দিয়ে। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তার ডান তীরের বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে বাশের পাইলিং করে বালির বস্তা নিক্ষেপ করছে পাউবো।
তিস্তার তীরবর্তী ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম এবং চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান জানান, রোববার দুপুরের পর থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে, যা অব্যাহত আছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউনিয়নের ঝাড় সিংহেরস্বর ও পূর্ব ছাতনাই গ্রামের বোল্ডারের চর, খোকার চর, খাড়াপাড়া, ফ্লাটপাড়াসহ তিস্তাপারের বিভিন্ন চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, দুপুরের পর থেকে তিস্তা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিস্তীর্ণ এলাকার রোপা আমন খেত তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সূত্রমতে, রোববার সকাল ছয়টায় লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ৫১ দশমিক ৪৩ মিটার, সকাল ৯টায় ৫১ দশমিক ৪৮ মিটার, দুপুর ১২টায় ৫২ মিটার, বেলা তিনটায় ৫২ দশমিক ১৪ মিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ৫২ দশমিক দশমিক ২৮ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল তিস্তা নদীর পানি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। রোববার সকাল ছয়টায় বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও সন্ধ্যা ৬টায় ৮৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা নদীর জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি কালীগঞ্জ নামের স্থানে তিস্তার ডান তীরের প্রধান বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেটির মেরামতকাজ চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব কটি (৪৪ টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। তিনি জানান, তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করে সন্ধ্যায় মাইকিং করা হয়েছে। রাত ৮টার দিকে পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।