‘উপদেষ্টাদের অনেকেই সেইফ এক্সিটের কথা ভাবতেছে’, নাহিদ ইসলামের এই বক্তব্য নিয়ে আলোচনা
Published: 5th, October 2025 GMT
‘উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে, তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের (নিরাপদ প্রস্থান) কথা ভাবতেছে’—সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নানা আলোচনা–সমালোচনা চলছে।
বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও অ্যাকাউন্ট থেকে নাহিদ ইসলামের এই বক্তব্যের ভিডিও ও ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়েছে। এসব পোস্টে পক্ষে–বিপক্ষে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় একাত্তর টেলিভিশনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ–সংক্রান্ত যে ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়েছে, সেখানে আজ রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত ১২ হাজার ব্যবহারকারী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আর ১ হাজার ৪০০টি মন্তব্য করা হয়েছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক দফা ঘোষণা করেছিলেন সে সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি উপদেষ্টা হয়েছিলেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হয়েছিলেন তিনি। গত ফেব্রুয়ারিতে সরকার থেকে পদত্যাগ করে এনসিপির আহ্বায়কের দায়িত্ব নেন নাহিদ। অবশ্য ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে যোগ দেওয়া মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এখনো উপদেষ্টা রয়েছেন।
টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁরা কেউ সরকারের উপদেষ্টা পদে যেতে চাননি। তাঁরা জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেটা হলে ছাত্রদের দায়িত্ব নিতে হতো না। রাজনৈতিক শক্তি বা অভ্যুত্থানের শক্তি সরকারে না থাকলে অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাসও টিকত না। প্রথম ছয় মাস সরকারকে উৎখাত করা বা প্রতিবিপ্লব করার নানা ধরনের চেষ্টা চলমান ছিল। এটা এখনো মাঝেমধ্যে আছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নেতাদের এবং যাঁরা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাঁদের অনেককে বিশ্বাস করাটা আমাদের অবশ্যই ভুল হয়েছিল। আমাদের উচিত ছিল ছাত্র নেতৃত্বকেই শক্তিশালী করা, সরকারে গেলে সম্মিলিতভাবে যাওয়া। নাগরিক সমাজ বা রাজনৈতিক দলকে আমরা যে বিশ্বাসটা করেছিলাম, যে আস্থা রেখেছিলাম, সেই জায়গায় আসলে আমরা প্রতারিত হয়েছি। অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়েছে অথবা গণ–অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিট্রে (প্রতারণা) করেছে। যখন সময় আসবে, তখন আমরা এদের নামও উন্মুক্ত করব।’
সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম আরও বলেছেন, ‘উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে। তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবতেছে। এটা আমাদের অনেক পোহাতে হচ্ছে এবং পোহাতে হবে। কিন্তু তারা যদি এটা বিশ্বাস করত যে তাদের নিয়োগকর্তা ছিল গণ–অভ্যুত্থানের শক্তি, রাজপথে নেমে জীবন দেওয়া ও আহত সাধারণ মানুষজন এবং তারা যদি তাদের ওপর ভরসা করত, তাহলে উপদেষ্টাদের এই বিচ্যুতি হতো না।’
এসব বক্তব্যের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আজ রোববার রাতে মুঠোফোনে নাহিদ ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল প্রথম আলো। তবে তিনি সাড়া দেননি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম উপদ ষ ট দ র র জন ত ক দ র অন ক র এই ব সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
২১ বছর পর কী নিয়ে আসছে শহরতলী
ভক্তরা বলে, বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতে নতুন ধারা এনেছে ‘শহরতলী’। এ ধারাকে বলা হচ্ছে ‘থিয়েট্রিক্যাল রক’ অর্থাৎ গান, কবিতা ও সংলাপকে একবিন্দুতে এনে তৈরি করা হয়েছে ভিন্ন এক আবহ। ২০০৪ সালে এ ধরনের গান নিয়ে শুরু হয় পথচলা। আজ পথচলার ২১ বছর পার করছে তারা। এ উপলক্ষে প্রকাশ পাচ্ছে ব্যান্ডটির নতুন গান ‘অপ্রলাপ’। এটি ব্যান্ডটির তৃতীয় অ্যালবাম ‘এখন, এখানে...–এ’র শেষ গান।
প্রতিষ্ঠা: ৬ অক্টোবর ২০০৪ঘরানা: থিয়েট্রিক্যাল রক
প্রকাশিত অ্যালবাম: ‘বরাবর শহরতলী’, ‘অপর পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য’ ও ‘এখন, এখানে...’
জনপ্রিয় গান: আসাদের খোলা চিঠি, জেলখানার চিঠি, ফেলানী, গণজোয়ার, দেশমাতার কাছে চিঠি
বর্তমান লাইনআপ মিশু খান (ভোকাল, রিদম গিটার), জিল্লুর রহমান (পারফর্মিং ভোকাল), সাদি মাহমুদ (কি-বোর্ড), ফাহিম পাশা (লিড গিটার), মাহবুবুল আকরাম (ড্রামস), রাজিবুর রহমান (বেজ গিটার) এবং মাহিবুল হাসান (সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার)।
গানটি লিখেছেন ব্যান্ডের পারফর্মিং ভোকাল জিল্লুর রহমান, সুর করেছেন মিশু খান। সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে জীবনানন্দ দাশের কবিতা ‘আট বছর আগের একদিন’। আজ সোমবার রাত ৯টায় শহরতলীর ইউটিউব চ্যানেলে গানটির অ্যানিমেটেড চিত্র প্রকাশ পাবে। স্পটিফাইসহ বিশ্বের অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও গানটি শোনা যাবে।
গানটি নিয়ে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘জীবনের নানাবিধ সংকটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মানুষ আশা ও নিরাশার মধ্যবর্তী অমীমাংসিত এক দ্বন্দ্বের ভেতর পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকে। কেউ কেউ স্রেফ আশার ওপর ভর করে টিকে থাকার নিরন্তর লড়াইয়ে শামিল হয়, কেউ–বা ক্লান্ত–বিপর্যস্ত হয়ে টেনে দিতে উদ্যত হয় জীবন নাটকের যবনিকা। এ দুইয়ের টানাপোড়েনের ভেতরই এগিয়ে চলে জীবন। কিন্তু মানুষ তবু পৌঁছাতে পারে না তার সেই আদর্শ জীবনের কাছে, যেখানে তাকে রাতদিন তাড়া করে ফিরবে না অগণিত অমীমাংসিত প্রশ্ন। “অপ্রলাপ” গানে উঠে এসেছে মানুষের ভেতরকার চলমান সেই টানাপোড়েনের গল্প।’
আরও পড়ুনতিন বছর পর অর্থহীন০২ অক্টোবর ২০২৫২০০৪ সালে ঢাকা কমার্স কলেজের তিন বন্ধু মিশু খান, গালিব আজিম ও বিদ্যুৎ রহমান মিলে একটি ব্যান্ড গঠনের চিন্তা করেন। এর আগপর্যন্ত আলাদা আলাদা সংগীতচর্চা করলেও একসঙ্গে কিছু একটা করার তাড়না থেকে জন্ম নেয় ব্যান্ড শহরতলী। পরে বেজিস্ট হিসেবে যুক্ত হন তপন মাহমুদ, ড্রামার হিসেবে শরিফুল সানী। ২০১২ সালে গালিব ও বিদ্যুৎ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমালে বড়সড় সংকটের মধ্যে পড়ে শহরতলী। এই সময়ে পারফর্মিং ভোকাল হিসেবে ব্যান্ডে যোগ দেন জিল্লুর রহমান। ২০১৯ সালে বেজ গিটারে যোগ দেন রাজিবুর রহমান আর ২০২০ সালে কি–বোর্ডে যুক্ত হন সাদি মাহমুদ। পরে ২০২২ সালে একে একে ব্যান্ডে যুক্ত হন মাহবুবুর আকরাম (ড্রামস), ফাহিম পাশা (গিটার) এবং সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে মাহিবুল হাসান।
শহরতলীর সদস্যরা। ছবি: ব্যান্ডের সৌজন্যে