২৮ বছর ধরে বৃক্ষ রোপণ করছেন চা শ্রমিক বিষ্ণু
Published: 12th, October 2025 GMT
সুযোগ পেলেই বাইসাইকেলের পেছনে চারা ও গাছ লাগানোর সরঞ্জাম নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন চা শ্রমিক বিষ্ণু হাজরা। রাস্তার পাশ, কবরস্থান, শ্মশানঘাটের পাশাপাশি যেখানেই খালি জায়গা পান, সেখানেই তিনি রোপণ করেন গাছের চারা।
ঔষধি, ফলজ, বনজসহ বিভিন্ন ধরণের গাছ লাগিয়ে আনন্দপান বিষ্ণু। এই কাজে নিজ পকেটের টাকা খরচ করতে দ্বিধাবোধ করেন না এই মানুষটি। পরিবেশের ভারসম্য ও মানুষের জীবন বাঁচাতে গত ২৮ বছর ধরে এই কাজ করে চলেছেন প্রকৃতিপ্রেমী বিষ্ণু।
আরো পড়ুন:
রাজশাহী সার্কিট হাউসের গাছ না কাটার দাবিতে স্মারকলিপি
বৃক্ষরোপণ ও সবুজায়নের উদ্বোধন করলেন ডিএসসিসি প্রশাসক
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউড়া চা বাগানের বাসিন্দা বিষ্ণু। তিনি একজন চা শ্রমিক। সংসারের চাহিদা পূরণে ঝালমুড়িও বিক্রি করেন তিনি। একসময় করতেন পত্রিকা বিক্রির কাজ। তার সংসারে মা-বাবা, স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে।
চা বাগানের বাসিন্দারা জানান, দারিদ্রতাকে পেছনে ফেলে চারা রোপণের এই কাজ বিষ্ণু করছেন ১৯৯৭ সাল থেকে। এখন পর্যন্ত তার হাতে লাগানো কয়েক হাজার গাছ ভাড়াউড়া চা বাগানে রয়েছে।
চা বাগানে আলাপকালে বিষ্ণু বলেন, “১৯৯৪ সালে শ্রীমঙ্গল শহরের ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হই। তখন থেকেই আমাদের চা শ্রমিক পরিবারে অভাবের চিত্র মনে ভেসে উঠত। অভাব দূর করতে প্রাইমারি স্কুলের ছাত্রদের নিয়ে টিউশনি শুরু করি। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় মাথায় চিন্তা আসে গাছ রোপণ করে ভবিষ্যতে অভাব দূর করা যাবে।”
বিষ্ণুকে গাছ লাগাতে সহযোগিতা করছেন স্থানীয়রা
“এরপর থেকে গাছ লাগানো শুরু করি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বৃক্ষ’ কবিতাটি পড়ে গাছ লাগানো আমার নেশায় পরিণত হয়েছে। তখন থেকে টিউশনির টাকার একটি অংশ খরচ করে গাছ লাগাতে শুরু করি”, যোগ করেন তিনি।
বিষ্ণুর মতে, অবাধে গাছ কাটা, বন উজাড়, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, প্লাস্টিকের দূষণ, নদী দখল ও দূষণ আমাদের পরিবেশ নষ্ট করছে। এসব রক্ষা এবং প্রাকৃতিক ভারসম্য রক্ষায় গাছ লাগানোর বিকল্প নেই। পাশাপাশি গাছের রক্ষণাবেক্ষণও সমান জরুরি। সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠানে বিষ্ণু গাছ উপহার দেন।
বিষ্ণুর বাবা প্রেমলাল হাজরা বলেন, “আমার ছেলে গাছের চারা রোপণ করার বিষয়টি আমাদের কাছে ভালো লাগে।”
বাগান এলাকার কলেজ শিক্ষার্থী রণজেশ রায় বলেন, “আমরা ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি বিষ্ণু দা গাছ রোপণ করেন। নিজ টাকায় তিনি গাছ লাগান, তার এই কাজ পরিবেশের জন্য খুবই ভলো।”
ভাড়াউড়া চা বাগানের গ্রাম পুলিশ সুদর্শন হাজরা বলেন, “আমরা ২০২২ সাল থেকে দেখছি, তিনি গাছ লাগান। আমরা বাগানের লোকজন ও বাসিন্দারা তার গাছ লাগানো দেখে উৎসাহিত হয়ে গাছ লাগাই। গাছ লাগালে পরিবেশ ভালো থাকবে।”
এলাকার অপর শিক্ষার্থী ও বিষ্ণুর স্বজন রিপন হাজরা বলেন, “বিষ্ণু দা হলেন বৃক্ষপ্রেমী মানুষ। তিনি খালি জায়গায় যেমন- মসজিদ ও মন্দিরে প্রাঙ্গণে গাছ লাগান। তিনি শ্রমজীবী মানুষ একা গাছের দেখাশুনা করতে পারবেন না। যারা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত আছেন, তাদের গাছ রক্ষণাবেক্ষণে এগিয়ে আসতে হবে।”
ঢাকা/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এই ক জ পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় বিএনপির ৯ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার
খুলনা বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নয় নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের এ সকল নেতাকে আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরে তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ময়মনসিংহে পুলিশ বক্সের সামনে যুবদলকর্মীকে হত্যা
ফেব্রুয়ারির নির্বাচন কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না: আমান উল্লাহ
বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হওয়া নেতারা হলেন, খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি শেখ ইকবাল হোসেন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মহাবুব কায়সার, সদর থানা বিএনপির সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাজেদা খাতুন, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক শেখ মুসফিকুর হাসান অভি, ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান হোসেন এবং সুন্দরবন আদর্শ কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সালাউদ্দিন নান্নু।
এ ছাড়া খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার চালনা পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মোজাফ্ফর হোসেন শেখ, বটিয়াঘাটা উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম খান জনি এবং কয়রা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুর রশিদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তবে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত অপর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২৬ নভেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে ভুলবশত মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব হাসান পিয়ারুর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়, যা স্থগিত করা হলো।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল