আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের পাশে এনসিপির নেতারা
Published: 12th, October 2025 GMT
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থানরত শিক্ষক–কর্মচারীদের উদ্দেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন দলটির নেতারা।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা। আজ সকাল আটটা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। বেলা আড়াইটার দিকে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে সেখান থেকে সরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন তাঁরা।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন–ভাতাকে অসম্মানজনক উল্লেখ করে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘পকেটে নাই টাকা, আর চারদিকে সম্মান আর সম্মান।’ এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা দেশে চতুর্থ শ্রেণির নাগরিকের মতো বসবাস করেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মন্ত্রী ও প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরিজীবীদের দেশে চিকিৎসা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা তৈরির আহ্বান জানান হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘নিজে যাবেন আমেরিকাতে রুটিন বডি চেকআপ (নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা) করাতে, নিজে যাবেন সিঙ্গাপুরে বডি চেকআপ করাতে, আর আমাকে দেবেন ৫০০ টাকা। এই রাষ্ট্রীয় মুনাফেকি আমরা মেনে নেব না।’
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবির প্রতি এনসিপির সমর্থন জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, শিক্ষকেরা যাতে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শহীদ মিনার ছেড়ে না যান। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন শিক্ষকদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং দাবি আদায়ে সার্বিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে মন্তব্য করে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, ‘একটি পক্ষ উদ্দেশ্যমূলকভাবে সব সময় শিক্ষকদের মধ্যবিত্ত রাখতে চায়। শিক্ষকদের বাড়িভাড়া দেওয়া লাগবে। অভ্যুত্থানের পর এটাও সরকারের কাছে চাইতে হবে, এমনটি আমরা আশা করিনি।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক থেকে শিক্ষকদের সরাতে পুলিশের লাঠিপেটারও নিন্দা জানান সামান্তা শারমিন। তিনি অবিলম্বে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে আটক করা ব্যক্তিদের মুক্তি ও এ ঘটনার জন্য পুলিশের বিচার দাবি করেন।
সংহতি জানিয়ে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির, এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (শিক্ষা ও গবেষণা) ফয়সাল মাহমুদ, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সদস্যসচিব জাহিদ আহসান প্রমুখ।
শিক্ষক কর্মচারীদের অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ থেকে আগামীকাল সোমবার থেকে দেশের এমপিওভুক্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের পক্ষে দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলমান রাখব।’
আরও পড়ুনপুলিশের লাঠিপেটা, জলকামানে ছত্রভঙ্গ শিক্ষক–কর্মচারীরা গেলেন শহীদ মিনারে ৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব শ ক ষকদ র এনস প র
এছাড়াও পড়ুন:
সোমবার থেকে কর্মবিরতি এমপিও শিক্ষকদের
বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা তাদের কর্মবিরতি পালনের কর্মসূচি এগিয়ে এনেছেন। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সোমবার (১৩ অক্টোবর) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি পালন করা হবে।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া দেওয়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির দাবি এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট।
কর্মসূচি এগিয়ে আনার ঘোষণা
রবিবার (১২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী কর্মবিরতি কর্মসূচি এগিয়ে আনার ঘোষণা দেন।
এর আগে দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষকরা সোমবারের মধ্যে ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারির চূড়ান্ত সময়সীমা দিয়েছিলেন। তখন তারা মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) থেকে সারা দেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছিলেন।
পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে কর্মসূচি এগিয়ে আনা
আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ, জলকামান দিয়ে ছত্রভঙ্গ এবং লাঠিচার্জ করা হয়। কয়েকজন শিক্ষককে আটক করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষকরা তাদের কর্মবিরতি কর্মসূচি এক দিন এগিয়ে এনে সোমবার থেকে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন।
ঢাকা/এএএম/রফিক