বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ করা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক মুনতাসির মাহমুদকে অব্যাহতি দিয়েছে দলটি। আজ রোববার দুপুরে ওই বিক্ষোভের পর সন্ধ্যায় এনসিপি এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে পুনর্বাসনের অভিযোগ তুলে একদল লোক নিয়ে দুপুরে মগবাজারে সংস্থাটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মধ্যে ঢুকে বিক্ষোভ করেন মুনতাসির মাহমুদ।

এরপর সন্ধ্যায় মুনতাসির মাহমুদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও অব্যাহতির চিঠি পাঠিয়েছে এনসিপি। সেটি দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আপনার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের গুরুতর অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এমন অবস্থায় আপনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নির্দেশ মোতাবেক আপনাকে দলের সব ধরনের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হলো। এ অব্যাহতি আদেশ আজ হতে কার্যকর হবে।’

একই সঙ্গে কেন মুনতাসিরকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দেওয়া হবে না, তার লিখিত ব্যাখ্যা দলের কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান আবদুল্লাহ আল-আমিনের কাছে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।

অবশ্য মুনতাসির মাহমুদের বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ এনসিপির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি। চিঠিতে দপ্তর সেলের সদস্য সাদিয়া ফারজানা দিনার স্বাক্ষর রয়েছে। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিনি (মুনতাসির) দলের সাংগঠনিক শৃঙ্খলার বাইরে গিয়ে কাজ করেছেন। এ জন্য তাঁকে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। রেড ক্রিসেন্টের ঘটনাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এমন নয়। এখন আপাতত দলের শৃঙ্খলা কমিটি থেকে তাঁকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। তদন্ত চলাকালে আমরা এর বাইরে খুব বেশি কথা বলতে পারব না।’

এই চিঠি ও অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে এনসিপি নেতা মুনতাসির মাহমুদকে হোয়াটসঅ্যাপে কল করা হলে তিনি কল কেটে দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা

জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।

দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপট

হাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’

এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫

অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)

আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।

দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকত

এই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯

আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।

আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।

দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ