বান্দরবানে সারা দিন হরতালের মাইকিং করে বিকেলে প্রত্যাহার ঘোষণা নাগরিক পরিষদের
Published: 12th, October 2025 GMT
বান্দরবানে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ আগামীকাল সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ঘোষণা দিয়েছিল। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কাজী মুজিবর রহমান ৯ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে ৮ দফা দাবিতে এ ঘোষণা দিয়েছিলেন। কর্মসূচি সফল করতে আজ রোববার সারা দিন জেলা শহরে মাইকিং করা হয়। বিকেলে আবার সংগঠনের পক্ষ থেকে হরতাল প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে। তবে প্রত্যাহারের কথা মাইকিং করে না জানানোয় অনেকে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছেন।
আজ সারা দিন জেলা শহরে হরতালের সমর্থনে মাইকিং করে বলা হয়, আগামীকাল হরতাল চলাকালে গাড়ি চলবে না, দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলবে না। তবে আজ বিকেলে সংগঠনের নেতা কাজী মুজিবর রহমান হরতাল প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, জেলা প্রশাসন তাঁদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তাই তাঁরা হরতাল প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু তালেব জানিয়েছেন, পর্যটন মৌসুমে হরতাল না দেওয়ার জন্য আহ্বানকারীদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ডাকা হয়েছিল। তাঁদের দাবিগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর আশ্বাস দিলে তাঁরা হরতাল প্রত্যাহার করতে রাজি হন।
নাগরিক পরিষদের আট দফা দাবিতে ১৯০০ সালের পার্বত্য শাসন বিধি বাতিল, স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে রাজার সনদ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া, বাজারের ফান্ডের জায়গা ৯৯ বছরের জন্য লিজ দেওয়া ও সেনা ক্যাম্প বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
পার্বত্য পরিষদে বিরোধএদিকে সংগঠনের পক্ষ থেকে হরতাল কর্মসূচি দেওয়া হলেও এ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। পরিষদের স্থায়ী কমিটির সভাপতি আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়া দাবি করেন, নাগরিক পরিষদের নামে বান্দরবানে হরতাল কারা আহ্বান করেছেন, তা তাঁদের জানা নেই। তিনি বলেন, কাজী মুজিবর রহমান আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন। ওই দলের মতোই স্বৈরাচারী কায়দায় তিনি নাগরিক পরিষদকে ব্যবহারের চেষ্টা করে আসছেন।
কাজী মুজিবর রহমান বলেছেন, জেলা কমিটির ডাকা হরতাল সম্পর্কে চিঠি দিয়ে ও মুঠোফোনে সংগঠনের সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
সংগঠনে কাজী মুজিবর রহমানের কর্মকাণ্ড নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষও রয়েছে। পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আলমগীর কবির বলেছেন, আওয়ামী লীগের আমলে কাজী মুজিবর রহমানের নানা কর্মকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। নাগরিক পরিষদের সবাই এ নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছেন। এ জন্য কমিটি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ মাসের যেকোনো সময় এই কমিটি ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স গঠন র
এছাড়াও পড়ুন:
সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা
জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।
দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপটহাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’
এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)
আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।
দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকতএই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।
আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।
দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫