বান্দরবানে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ আগামীকাল সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ঘোষণা দিয়েছিল। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কাজী মুজিবর রহমান ৯ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে ৮ দফা দাবিতে এ ঘোষণা দিয়েছিলেন। কর্মসূচি সফল করতে আজ রোববার সারা দিন জেলা শহরে মাইকিং করা হয়। বিকেলে আবার সংগঠনের পক্ষ থেকে হরতাল প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে। তবে প্রত্যাহারের কথা মাইকিং করে না জানানোয় অনেকে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছেন।

আজ সারা দিন জেলা শহরে হরতালের সমর্থনে মাইকিং করে বলা হয়, আগামীকাল হরতাল চলাকালে গাড়ি চলবে না, দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলবে না। তবে আজ বিকেলে সংগঠনের নেতা কাজী মুজিবর রহমান হরতাল প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, জেলা প্রশাসন তাঁদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তাই তাঁরা হরতাল প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু তালেব জানিয়েছেন, পর্যটন মৌসুমে হরতাল না দেওয়ার জন্য আহ্বানকারীদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ডাকা হয়েছিল। তাঁদের দাবিগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর আশ্বাস দিলে তাঁরা হরতাল প্রত্যাহার করতে রাজি হন।

নাগরিক পরিষদের আট দফা দাবিতে ১৯০০ সালের পার্বত্য শাসন বিধি বাতিল, স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে রাজার সনদ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া, বাজারের ফান্ডের জায়গা ৯৯ বছরের জন্য লিজ দেওয়া ও সেনা ক্যাম্প বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

পার্বত্য পরিষদে বিরোধ

এদিকে সংগঠনের পক্ষ থেকে হরতাল কর্মসূচি দেওয়া হলেও এ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। পরিষদের স্থায়ী কমিটির সভাপতি আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়া দাবি করেন, নাগরিক পরিষদের নামে বান্দরবানে হরতাল কারা আহ্বান করেছেন, তা তাঁদের জানা নেই। তিনি বলেন, কাজী মুজিবর রহমান আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন। ওই দলের মতোই স্বৈরাচারী কায়দায় তিনি নাগরিক পরিষদকে ব্যবহারের চেষ্টা করে আসছেন।

কাজী মুজিবর রহমান বলেছেন, জেলা কমিটির ডাকা হরতাল সম্পর্কে চিঠি দিয়ে ও মুঠোফোনে সংগঠনের সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

সংগঠনে কাজী মুজিবর রহমানের কর্মকাণ্ড নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষও রয়েছে। পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আলমগীর কবির বলেছেন, আওয়ামী লীগের আমলে কাজী মুজিবর রহমানের নানা কর্মকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। নাগরিক পরিষদের সবাই এ নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছেন। এ জন্য কমিটি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ মাসের যেকোনো সময় এই কমিটি ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স গঠন র

এছাড়াও পড়ুন:

৯ ব্রোকার হাউজকে ফিক্স সার্টিফিকেশন দিল ডিএসই

নয় ব্রোকারেজ হাউজকে ফিক্স সার্টিফিকেশন ও একটি ব্রোকারেজ হাউজকে রিসার্টিফিকেশন প্রদান করেছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এপিআই সংযোগের মাধ্যমে নিজস্ব ওএমএস চালুকরণের লক্ষ্যে ডিএসই প্রতিষ্ঠানুগলোকে ফিক্স সার্টিফিকেশন প্রদান করে।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ডিএসই’র বোর্ডরুমে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফিক্স সার্টিফিকেশন প্রদান করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান৷

আরো পড়ুন:

ডিএসইর চিঠির জবাব দেয়নি খুলনা প্রিন্টিং

ইস্টার্ন কেবলসের প্রথম প্রান্তিকে লোকসান কমেছে ৫৬.২৫ শতাংশ

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএসই’র প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. মো. আসিফুর রহমান, আইসিটি ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার মো. তারিকুল ইসলাম, উপ-মহাব্যবস্থাপক হাসানুল করিমসহ ডিএসইর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ডিএসইর প্রকাশনা ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

ব্রোকারেজ হাউজগুলো পক্ষে সার্টিফিকেশন গ্রহণ করেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্স সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি এবং সিইও খন্দকার মাহমুদুল হাসান; ফিনট্রা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি অজিত কুমার বণিক; আইডিএলসি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি এ. এইচ. এম. নাজমুল হাসান; আইআইডিএফসি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সিইও মোঃ নাজমুল হাসান চৌধুরী; লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ পিএলসির সিইও খন্দকার সাফাত রেজা; এমটিবি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের েসিইও মোঃ নজরুল ইসলাম মজুমদার; এসএআর সিকিউরিটিজ লিমিটেডের পরিচালক শরীফ তাশরুবা রহমান; সাউথ এশিয়া সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সিইও মোঃ আলা উদ্দিন পাটোয়ারী এবং ওয়াইফাং সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সিইও মোঃ মাসুদুজ্জামান। এর মধ্যে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ পিএলসির রিসার্টিফিকেশন দেওয়া হয়েছে।

ফিক্স সার্টিফিকেশন প্রদান অনুষ্ঠানে ডিএসই'র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান বলেন, ‘‘পুঁজিবাজারের ডিজিটাল রূপান্তরের অংশ হিসেবে ডিএসই কাজ করছে। নিয়ন্ত্রক মান বজায় রেখে ডিএসইকে গ্রাহক–কেন্দ্রিক সেবাধর্মী সংস্থায় রূপ দেওয়াই যার লক্ষ্য। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াতে ইতিমধ্যে বিজিএমইএ, সিরামিক ও এগ্রো–কেমিক্যালসহ বিভিন্ন শিল্প খাতের সঙ্গে বৈঠক করেছে। ডিএসই আশা করছে, ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে ওয়েবসাইটের আধুনিক ল্যান্ডিং পেজ, ট্রেকহোল্ডারদের অনলাইন ডকুমেন্ট সাবমিশন ব্যবস্থা এবং স্টেকহোল্ডার–ফিডব্যাক ভিত্তিক কমপ্লায়েন্স ও ডেটা–প্রবাহ উন্নয়নসহ নতুন ডিজিটাল সেবা উদ্যোগ উন্মোচিত হবে।’’ 

ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. আসিফুর রহমান বলেন, ‘‘স্টক এক্সচেঞ্জের প্রযুক্তি ব্যাংকিং থেকে ভিন্ন—এখানে এক মুহূর্তের সার্ভিসও পুরো বাজারে তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই আমাদের সবসময় সতর্ক, মনোযোগী এবং স্ট্যান্ডার্ড-কমপ্লায়েন্ট থাকতে হয়। সাম্প্রতিক সেন্ট্রালাইজড সিস্টেম ইন্টিগ্রেশনের মাধ্যমে আমাদের প্রযুক্তির অবস্থান এখন গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডের খুব কাছাকাছি, কিছু ক্ষেত্রে আরও এগিয়েও। ওএমএস এপ্লিকেশনে স্থানীয় টিমকে সুযোগ দেওয়া কেবল প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নয়—এটি দেশের জন্য একটি গর্বের অর্জন।’’ 

২০২০ সাল থেকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এপিআই (অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম ইন্টারফেস) ভিত্তিক বিএইচওএমএস চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরই প্রেক্ষিতে ৭২টি ব্রোকারেজ হাউজ নাসডাক ম্যাচিং ইঞ্জিনে এপিআই সংযোগ নিয়ে নিজস্ব অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে লেনদেন করার জন্য ডিএসইতে আবেদন করেন। আজকের ৮টিসহ মোট ৪৭টি ব্রোকার হাউজকে ফিক্স সার্টিফিকেশন প্রদান করা হয়েছে৷ এর মধ্যে ৩৫টি ব্রোকার হাউজ ফিক্স সার্টিফিকেশন পাওয়ার পর তারা এপিআই সংযোগের মাধ্যমে নিজস্ব ওএমএস চালু করেছে।

ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ